একালের রূপকথা

সে কোনো এককালে পশু ছিলো। তখন সে অন্য কোথাও প্রবিষ্ট হতো রোজ। সময় তাকে ছিটকে ফেলে দিলো। কোনো এক রাজকন্যা তাকে পথের ধারের নর্দমা থেকে তুলে এনে সেবাযত্নে সারিয়ে তুললো। নর্দমার কীটকে ছুঁয়ে দেয়ায় রাজকন্যার জাত গেলো। রাজকন্যা হয়ে গেলো ঘুঁটেকুড়ুনি চণ্ডালিনী। এরপরের গল্প রূপকথাকেও হার মানায়। নর্দমার কীট রোজ রোজ ঘুঁটেকুড়ুনির গর্ভে অবগাহন করে স্বাস্থ্যবান হয়। দেখতে দেখতে সেই কীটের রাজ্যপাট হলো। কীট সিংহাসনে বসে রাজ্যপাট চালায় আর ঘুঁটেকুড়ুনি তার সেবাদাসী হয়ে সেবা দিয়ে যায়। কালক্রমে কীটের রুচি পালটায়। কীট বেশ্যাগমন শুরু করে। ঘুঁটেকুড়ুনি সবই বুঝে তবুও চুপ করে থাকে।

 

 

কেবল কীটকে আর তার মাঝে প্রবিষ্ট হতে দেয়না, কীটের বিষে নিজেকে আর বিষাক্ত করেনা। ওদিকে বেশ্যাগমন করতে করতে এক সময় কীট এক ডাইনির খপ্পরে পড়ে। সেই ডাইনি তাকে গিলে খেতে চায়, তার রাজ্যপাট গ্রাস করতে চায়। কীট ফেঁসে যায়। না সে ডাইনিকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে, না সে ঘুঁটেকুড়ুনির কাছে ফিরে গিয়ে সব অন্যায় স্বীকার করে মাফ চাওয়ার সাহস রাখে।
ঘুঁটেকুড়ুনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবে সে আর তার হারানো অতীতে ফিরে যেতে পারবেনা। সেই রাজকন্যার তকমা, সেই সময়, সেই বয়স, সেই শরীর, সেই মন মানসিকতা সবই আজ বিবর্ণ অতীত। সময় তার নিষ্ঠুর কুড়ালে কুপিয়ে সব ফালি ফালি করে দিয়েছে। ঘুঁটেকুড়ুনি ভালো করেই জানে তার বর্তমান ভবিষ্যৎ সব অনিশ্চিত এইটাই কঠিন সত্য। তবুও কোনো এককালের চঞ্চলমতি রাজকন্যা মনের গোপনে ইচ্ছে প্রকাশ করে, “আহা! যদি একটাবার পিছনের দিনগুলিতে ফিরে যেতে পারতাম! সেই সময়টায় আরেকবার ফিরে যেতে পারলে কোনো ভুল করতাম না। অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতাম।”

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!