হযরত মুসা (আঃ) এর মোজেযাপূর্ণ নয়টি ঘটনা-৮ম পর্ব

হযরত মুসা(আঃ) এর মোজেযাপূর্ণ নয়টি ঘটনা-৭ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

অতএব তোমরা এর কথায় কেউ বিভ্রান্ত হইও না বরং ওকে নাজেহাল করে বিদায় করার কি পদ্ধিতে আছে বল। তখন ফেরাউনের উজির হামান বলল, আচ্ছা তোমরা দু’ভাই আছমানের খোদার প্রেরিত পুরুষ বলে দাবি করছ। এ মর্মে তোমার নিকট কোন প্রমান আছে কি? যদি কোন উপযুক্ত প্রমান পেশ করতে পার তাহলে আমরা তোমার কথা চিন্তা করে দেখব। না হয় তোমরা আমাদের সময় নষ্ট না করে এখন থেকে বের হয়ে যাও। ফেরাউন মন্ত্রীর কথায় সায় দিয়ে বলল, বাপের বেটা হয়ে থাকলে আমার ন্যায় আশ্চার্য কিছু দেখিয়ে মানুষ কে দাওয়াত করতে এস। না হয় দ্বিতীয় বার আমার এখানে আর আসবে না। হযরত মুসা (আঃ) এতক্ষন নীরবে সবার কথা শুনে সর্বশেষ বললেন, হ্যা! আল্লাহাতালা আমাকে নির্দশ দিয়েছেন এই বলে তিনি হাতের লাঠি খানা মাটিতে ফেলে দিলেন। অমনি লাঠি খানা এক বিশাল সর্পের আকৃতি ধারন করে সম্মুখে অগ্রসর হতে আরম্ভ করল। কথিত আছে,এ সাপ টি ছিল একশ জগ লম্বা, সত্তরটি পা ছিল সিংহের ন্যায়।তার হ্যাঁ করা মুখের গ্রাস ছিল ত্রিশ গজ। আর ঘাড়ে ছিল তীরের ন্যায় শক্ত লোম।

তার মুখে ছিল তীক্ষ্ণ বড় বড় শক্ত সাত শত দাত। তার মুখের ফেনায় ছিল ভয়াবহ বিষ। যেখানে ফেনা পড়ত সেখানে আগুন জ্বলে উঠত। এ সর্পটি দরবারে চতুর্দিক একবার দূরত ঘুরে আসায় তার পায়ে পিষ্ঠ হয়ে সাত শত মানুষ মারা যায়। অতপর সাপটি ফেরাউনের সিংহাসনের দিকে ধবিত হতে থাকে। ফেরাউন তখন দৈীড়ে বাহিরে চলে যায়। সর্পটি সম্মুখে অগ্রসর হয়ে রাজপ্রাসাদের এক পাশে দাত দিয়ে ঘসে দেয়। তখন প্রাসাদের একপাশ ধসে পড়ে। এমন সময় ফেরাউন চিৎকার দিয়ে বলতে থাকে, হে মুছা!আমি তোমাকে বাল্যকালে প্রতিপালন করেছি। তাই আমাকে প্রথমে বাঁচাও, আমি তোমার দ্বীন কবুল করব।

হযরত মুসা (আঃ) তখন সর্পের ঘাড়ে হাত দিলেন। অমনি তা লাঠিতে রূপান্তরিত হল।সকল মানুষ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেল। মন্ত্রী পরিষদবর্গের অনেক মানুষ হতাহত হল। সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকে সাতশ নিহত হল। আহত হল অসংখ্যা। সে এক ভীষণ পরিস্তিতি সৃষ্টি হল। যা কোন ভাষায় বর্ননা করা সম্ভব নয়। অল্প সময়ের মধ্যে রাজদরবার শূণ্য হয়ে গেল। হযরত মুসা (আঃ) এমন পরিস্থিতে কোন কথা না বলে সেদিনের মত চলে গেলেন। তিনি নিজ বাড়িতে গিয়ে নামাজ ও তছবীহ পাঠে মগ্ন হলেন।

 এদিকে ফেরাউন তার উজির নাজিদের নিয়ে বৈঠক বসে সকলের নিকট মতামত জিজ্ঞাসা করলেন।প্রথমে হামান বলল, মুছা (আঃ) এর এ সমস্ত যাদুর সম্মুখে আত্নসমার্পন করা আপমানের সামিল। তার যাদুর মোকাবেলা যাদু দিয়ে করতে হবে তাকে চিরদিনের মত যাদুর বাহাদুরি পরিণাম দেখিয়ে দিতে হবে।ফেরাউন  বলল, আমার ও ঐ একই অভিমত। মুছা হয়ত যাদু বিদ্যায় কিছুটা পারদর্শী হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমার ন্যায় ধন-দৌলত-সৈন্য-সামন্ত ও জনগনের উপকারের ক্ষেত্রে বলিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহন করা তার পক্ষে কোন দিন হবে না। অতএব জনসাধরন কে কোন দিন তার দলভুক্ত করতে সক্ষম হবে না।বিশেষ করে আমার প্রমোদ কাননের রঙিন তেল নিঃসরকারী গাছ দুটি যতদিন আছে এবং নীল নদ যতদিন আমার কথা অনুসারে চলবে ততদিন আমার দুর্বল হওয়ার কোন কারন নেই। অতএব অতি শীঘ্র দেশের সমস্ত যাদুকর দিকে একত্রিত করে মুছা কে চরম শিক্ষা দিবার ব্যবস্থা উত্তত বলে আমি মনে করি।

সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত মুসা(আঃ) এর মোজেযাপূর্ণ নয়টি ঘটনা-নবম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।