হযরত মুসা (আঃ) এর মোজেযাপূর্ণ নয়টি ঘটনা-৭ম পর্ব

হযরত মুসা(আঃ) এর মোজেযাপূর্ণ নয়টি ঘটনা-৬ষ্ঠ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

অতপর ফেরাউন বলল, আমি তোমাদের খোদা হিসাবে সকল অভিযোগ, অভাব অনটন দূর করব। এ জন্য তোমাদের আর অন্য খোদার নিকট ধন্যা দিতে হবে না। ইতোমধ্যে তোমাদের ভিতর বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য এক তোতলা মানুষ নিজেকে আকাশের খোদার নবী বলে দাবি করেছে তার উপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য সকলের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দাওয়াত দিচ্ছে। তোমরা তার কথায় বিভ্রান্ত হয়ো না। সে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য মানুষ কে ধোঁকা দিচ্ছে, আমি অল্প দিনের ভিতরে তাকে শায়েস্তা করব তোমরা নিশ্চিত থাক। এই বলে তার কথা শেষ করল।

আল্লাহ তা’লা ফেরাউন কে কিছু ক্ষমতা দিয়েছিলেন। যেমন নীল নদের পানি তা কথা বাড়ত এবং কমত। অন্য দিকে তার প্রমোদ কাননে দুইটি গাছ ছিল তা থেকে দুই রংয়ের তেল বের হত। এই তেল মানুষের রোগব্যাধি নিরাময়, বিপদ মুক্তি ও আশা পূরণের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর ছিল।যা দিয়ে ফেরাউন মানুষের মধ্যে তার প্রভুত্বের দাবি প্রগাঢ় করতে সমর্থ হয়েছিল। এই দুটো অবদান আল্লাহাতালা তাকে কেন দিয়েছিলেন তা কেউ জানে না।

তবে এ অবদনের দৌলাতে ফেরাউন দীর্ঘ সাড়ে চারশ বছর খোদায়ী দাবি বহল রাখতে সক্ষম হয়েছে। আল্লাহাতালা এর রহস্য ভাল জানেন, এ ছাড়া ফেরাউনের জীবনে কখনো কোন দিন অসুস্থ বা রোগগ্রস্থ হয়নি। এমন কি সর্দি জ্বরেও কোন দিন পড়েনি। এটা ছিল তার প্রতি আল্লাহ তা’লার একটি অবদান। এর কয়েকদিন পর হযরত মুসা (আঃ) ফেরাউনের দরবারে এসে হাজির হন। ফেরাউন এবারে কিছুটা শক্ত হল। যেহেতু নীল নদের পানি বৃদ্ধি ও মানুষের বিভিন্ন সমস্যাবলী দূর করার ব্যাবস্থা সে হাতে পেয়ে গেছে। তাই হযরত মুসা (আঃ) কোঠর ভাষায় বলল,  তুমি তোমার খোদা কে নিয়ে আমার দেশ থেকে বহিষ্কার হও। দিন দিন তোমার বিরক্ত সহ্য করার ধৈর্য আমার নেই। হযরত মুসা (আঃ) বললেন,হে ক্ষুদ্র রাজ্যর বাদশা! আমি এমন এক বাদশের প্রতিনিধি যিনি এ পৃথিবী ন্যায় আরও লক্ষ লক্ষ পৃথিবীর স্রষ্টা, মালিক ও রক্ষক। তিনি দিন কে রাত্রি করেন, রাত কে দিনে পরিণত করেন। তিনি জালেম ও অহংকারী দের আহার দেন, রাজ্য দেন,স ্বযত্নে প্রতিপালন করেন। কারো প্রতি তিনি ক্রোধে তার রিজিক বন্ধ করে দেন না। তবে হ্যাঁ, সীমা লঙ্ঘনকারীদের তিনি পরকালে তিনি উপযুক্ত শাস্তি দিতে ছাড়বেন না এবং এ কালে কিছু টা নবীদের জামানায় দেখিয়েছেন এবং পূর্বাকার নবীদের জামানায় দেখিয়েছেন। অতএব আপনি সীমা লঙ্ঘনকারী দের পক্ষে না হন  সেটাই আমার কামনা। ফেরাউনের দরবারে তখন অনেক লোক উপস্থিত ছিল। বিশেষ করে মন্ত্রী বর্গ,ও করমকর্তাবৃন্দ।

তাই হযরত মুসা(আঃ)এর কথায় তার মর্যদাহানীর আশংকা হল। ফেরাউন তখন বলল তোমরা এই পাগলের কথার কোন তাৎপর্য আছে বলে মনে কর? সকলে বললেন না, না, ও মতলববাজ বেটার হাতে কোন প্রমাণ নেই। দলিল নেই শুধু মুখে মুখে মানুষের সর্বনাশ করার চিন্তা। বিশেষ করে আমাদের প্রভুর খোদায়ী দাবিকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে। ফেরাউন সকল কে লক্ষ করে বলল, তোমরা তো স্বচক্ষে দেখলে প্রমাণ বিহীন অবস্থায় সে আমার দরবারে এসে আমাকে অপদস্ত করার চেষ্টা করছে।

সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত মুসা(আঃ) এর মোজেযাপূর্ণ নয়টি ঘটনা-৮ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।