রহস্যময় স্বপ্নের ঘটনা। আমাদের এই পৃথিবীতে এমন কতগুলো ঘটনা ঘটেছে যা সবার কাছে আজও রহস্যময়। বিজ্ঞানীরাও এসব ঘটনার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে কোনো উত্তর খুঁজে পাননি। সবার কাছে এগুলো রহস্যময় ঘটনা হিসেবেই থেকে গেছে। লিংকনের স্বপ্ন- স্বপ্নে ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি দেখেছিলেন আমেরিকার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। ১৮৬৫ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা। তিনি রাতে একটি বিচিত্র স্বপ্ন দেখেছিলেন। স্বপ্নটি তিনি বলেছিলেন জনৈক এক ব্যক্তির কাছে। ব্যক্তিটি তার স্বপ্নটি লিখে রেখেছিলেন এবং তা পরে বর্ণনা করেছিলেন। আব্রাহাম স্বপ্নে দেখেছিলেন চারদিকে নিস্তব্ধ পরিবেশের মধ্য থেকে কান্নার সুর শোনা যাচ্ছে। সে কান্নার কারণ খুঁজতে তিনি বিছানা থেকে উঠে গেলেন কিন্তু দেখলেন কোথাও কেউ নেই- শুধু কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তিনি হোয়াইট হাউজের মধ্যে হেঁটে হেঁটে কান্নার শব্দের উৎস খুঁজতে লাগলেন। অবশেষে হোয়াইট হাউজের পূর্ব ব্লকের ঘরে আবিষ্কার করলেন একটি মৃতদেহ। মৃতদেহের চারপাশ ঘিরে শোক পালনকারীরা কান্নাকাটি করছে কিন্তু তাদের সকলের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা। সৈন্যরা দাঁড়িয়ে আছে বিষণ্ন চেহারায়। তিনি সামনে এগিয়ে গেলেন এবং একজনকে প্রশ্ন করলেন কে মারা গেছে? সে উত্তর দিল, আমাদের প্রেসিডেন্ট। তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছেন। এই স্বপ্ন দেখার ঠিক পাঁচদিন পর সত্যি সত্যিই আততায়ীর হাতে নিহত হলেন আব্রাহাম লিংকন। স্বপ্ন দেখা হোয়াইট হাউজের পূর্ব ব্লকেই কিছু সময়ের জন্য রাখা হয়েছিল তার মৃতদেহ। স্বপ্ন নাকি বাস্তব- দুজন ইংরেজ মহিলা ১৯৫১ সালের ৪ আগস্ট ভোরবেলায় জার্মানির নর্মান্ডি শহরের ডিয়েফ বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে। তারা রাতে সেখানে একটি হোটেলে যখন ঘুমিয়ে ছিলেন তখন ভোর ৪টার সময় বাইরে প্রচণ্ড গুলির শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। চারদিকে তারা হাজার হাজার মানুষের আত্মচিৎকার ও গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। তারা নিজেরাও সেখানে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিলেন। ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হতে পারলেন না। তাদের চারদিক ঘিরে চলতে থাকল গুলি-বোমার প্রচণ্ড শব্দ, মানুষের চিৎকার, হাহাকার আর কান্না। এমনভাবে চলল ভোর ৬টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। যুদ্ধ শেষে ভয়াবহ এক অবস্থা থেকে জীবন ফিরে পেলেন যেন ওই দুই মহিলা। তারা ভাবলেন তাদের পুনর্জন্ম হয়েছে, কারণ এই যুদ্ধের মাঝে তারা যে বেঁচে থাকবেন এটা ভাবতে পারেননি। সকালে তারা যখন বাইরে বের হন তখনই ঘটে আশ্চর্য ঘটনা। কারণ তারা বাইরে বেরিয়ে যুদ্ধ, গোলাগুলি বা কোনো প্রকার হত্যাযজ্ঞের চিহ্ন দেখতে পাননি। তারা তাদের পার্শ্ববর্তী অনেক মানুষের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কিন্তু কেউ এ সম্পর্কে কিছুই বলতে পারল না। সবাই বলল রাতে এমন কোনো কিছুই ঘটেনি। গতরাত ছিল অন্য রাতের মতোই স্বাভাবিক। পরিশেষে তারা ঘটনাটি খুলে বললেন বিশেষজ্ঞদের কাছে। সেই দুই মহিলার বর্ণনার সাথে মিলে গিয়েছিল সামরিক বাহিনীর পুরাতন এক রেকর্ডের সঙ্গে। বিষয়টি ছিল অতি কাকতালীয়। ১৯৪২ সালের ১৯ আগস্ট ভোরবেলায় কানাডা ও ব্রিটিশ সেনাদল জার্মানির নর্মান্ডি বিমান বন্দর আক্রমণ করেছিল। সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছিল। আর সেই ঘটনাটিই ৯ বছর পর ফ্লাসব্যাক হয়ে ফিরে এসেছিল ওই দুই মহিলার ইন্দ্রিয়তে। ভোরের যুদ্ধ সম্পর্কে তারা আরও যা বর্ণনা দিয়েছিল তার সবই মিলে গিয়েছিল ওই ঘটনার সাথে। এই ঘটনার রহস্য এখনও উদঘাটন করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। রাতে ওই দুই মহিলা কি নয় বছর পূর্বে ফিরে গিয়েছিলেন? নাকি তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন? যদি তারা স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে দুজন একই সাথে একই স্বপ্ন দেখলেন কিভাবে?
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।