হযরত আলী রাঃ এর মক্কী জীবন
ইসলাম গ্রহণ করার পর হযরত আলী (রাঃ)-এর জীবনের তেরটি বছর মক্কায় অতিবাহিত হয়। তিনি দিবারাত্র রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে থাকতেন। এজন্য পরামর্শ সভায়, শিক্ষা ও অনুশীলনের মজলিসে, কাফির ও মুশরিকদের সাথে বিতর্ক আলোচনায় এবং আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীর ক্ষেত্রে সর্বত্র তিনি শরীক থাকতেন। হযরত উমর (রাঃ)-এর ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মক্কায় মুসলমানদের জন্য প্রকাশ্যে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা ও তাঁর ইবাদত করা প্রায় অসম্ভব। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুকিয়ে লুকিয়ে আল্লাহর ইবাদত করতেন। হযরত আলী (রাঃ)ও এসব ইবাদতে শরীক হতেন। একবার নামলা উপত্যকায় তাঁরা ইবাদতে লিপ্ত ছিলেন। এমন সময় আবু তালিব সেখানে উপস্থিত হলেন। নিজের নিষ্কলুষ ভ্রাতুষ্পুত্র ও সচ্চরিত্র পুত্রের ইবাদত দেখে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি করছ? হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সত্য দ্বীনের দাওয়াত দিলেন। আবু তালিব বললেন, এতে কোন ক্ষতি নেই কিন্তু আমার দ্বারা এ কাজ সম্ভব নয়।
হজ্জের সময় মক্কা আরবের সমস্ত গোত্রের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হত। এজন্য রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে সাথে নিয়ে সাধারণ লোকদের মধ্যে চলে যেতেন এবং তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। এ সময় বাল্যাবস্থার কারণে হযরত আলী (রাঃ) কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সম্পাদন করতে সক্ষম না হলেও অনেক সময় তিনি রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে থাকতেন। কখনো কখনো রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে তিনি কাবাগৃহে চলে যেতেন এবং মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গে চুরে বিকৃত করে দিতেন।