হযরত আলী রাঃ এর ইসলাম গ্রহণ
হযরত আলী (রাঃ)-এর বয়স যখন দশ বছর তখন তাঁর স্নেহশীল অভিভাবক আল্লাহর দরবার থেকে নবুওয়তের দায়িত্ব লাভ করেন। হযরত আলী (রাঃ) তাঁর সাথে থাকার ফলে ইসলামের চেহারা সর্বপ্রথম তাঁর চোখে সুস্পষ্ট হলো। একদিন তিনি রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত খাদিজা (রাঃ)-কে ইবাদতে লিপ্ত দেখে এ দৃশ্য তাঁকে মুগ্ধ করে। বালকসুলভ বিষ্ময় সহকারে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা দু’জন কি করছিলেন? হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজের নবুয়তপ্রাপ্তির খবর দিলেন, কুফরী ও শিরকের নিন্দা করলেন এবং তাওহীদের দাওয়াত দিলেন। হযরত আলী (রাঃ) এ ধরণের কথা পূর্বে শোনেননি।
আশ্চর্য হয়ে বললেন, আচ্ছা, আমার পিতার কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবো। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তখনো জনসাধারণের কাছে একথা প্রকাশ করতে চাচ্ছিলেন না। তাই তিনি বললেন, তোমার নিজের কোন সংকোচ থাকলে তুমি নিজে এর ওপর চিন্তা করতে থাক কিন্তু কারোর কাছে এ কথা এখন প্রকাশ করো না। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহচর্যে ও তত্ত্ববধানে তাঁর যথার্থ প্রকৃতি গড়ে উঠেছিল, এরই সাথে আল্লাহও তাকে তাওফীক দান করলেন। তাই তাঁর বিশেষ চিন্তা-ভাবনার প্রয়োজন হল না। পরদিনই তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে হাজির হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন।
হযরত খাদিজা (রাঃ) এর পর সর্বপ্রথম কে ঈমান এনেছেন এ ব্যাপারে মতবিরোধ আছে। কোন কোন বর্ণনা মতে হযরত আবু বকর (রাঃ), আবার কোন কোন বর্ণনায় হযরত আলী (রাঃ) এবং অন্য কয়েকটি বর্ণনায় হযরত যায়িদ ইবনে হারেসা (রাঃ) এর সর্বপ্রথম ঈমান আনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তত্ত্বানুসন্ধান কারীগণ এসব বিভিন্ন হাদীসের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করেছেন। তাঁরা বলেছেন, নারীদের মধ্যে উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদিজা (রাঃ), পুরুষদের মধ্যে আবু বকর (রাঃ), কিশোরদের মধ্যে হযরত আলী (রাঃ) ও গোলামদের মধ্যে হযরত যায়েদ ইবনে হারেসা (রাঃ) সর্বপ্রথম ঈমান আনেন।