হজরত মুসা (আঃ) এর বিবাহ ও যৌবন-৪র্থ পর্ব

হজরত মুসা(আঃ) এর বিবাহ ও যৌবন-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

তখন তিনি তার শ্বশুর প্রদত্ত  লাঠিখানাকে বলেন, হে আষা! তুমি অত্যন্ত বরকতি বস্তু, বেহেস্ত হতে তুমি নবীর হাতে পৃথিবীরতে এসেছ। তোমার ভিতরে অনেক বরকত ফজিলত রয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। অতএব তুমি আমার মেষগুলো কে পাহারা দিও। আমি কিছু সময় ঘুমিয়ে নেই। এই বলে হযরত মুছা (আঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছু সময় পরে এক বিরাট অজগর গুহা থেকে বের হয়ে মেষ ভক্ষন করার জন্য সম্মুখে অগ্রসর হল। তখন হযরত মুসা (আঃ) এর আষা আরো বড় এক সর্পের আকৃতিতে সেখান এসে অগ্রসর সেখানে এসে অজগর কে কামড়ে ধরে এমন আছাড় দিল, যাতে এক আছাড়ে অজগর টি মারা গেল।

হযরত মুসা (আঃ) ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার আশা এক বিরাট সর্পের আকৃতিতে এক বিরাট অজগর কে কামড়ে ধরে আছে। তখন তিনি ভয়ে ভয়ে কাছে গিয়ে দেখেন অজগর টির মৃত্যু এবং তার আষা স্বাভাবিক, সেই পূর্বের লাঠির আকার বই অন্য কিছু নয়। তখন তিনি আষা হাতে নিলেন এবং আল্লহাতালার শুকরিয়া আদায় করলেন।

হযরত হযরত মুসা (আঃ) একাধারে আট বছর হযরত শোয়ায়েব (আঃ) এর ছোহবতে কাটালেন। এর ভিতরে আর একটা মজার ব্যাপার ঘটে গেছে। হযরত মুসা (আঃ) এর রাখালী জীবনের চার বছর অতক্রম হলে একদিন হযরত শোয়ায়েব (আঃ) বললেন, হে মুছা। এ বছর যদি সকল বাচ্চা মরদা হয় তবে সে গুলা সব তোমাকে দিয়ে দিব। আল্লাহার হুকুমে সে বছর সব বাচ্চা মরদা হল। তখন হযরত শোয়ায়েব (আঃ) সব বাচ্চা হযরত মুসা (আঃ) কে দিয়ে দিলেন। পঞ্চম বছর হযরত শোয়ায়েব (আঃ) বললেন, হে মুছা এ বছর যদি সব বাচ্চা মাদী হয় তবে শবগুলা আমি তোমাকে দিয়ে দিব। সে বছর আল্লাহার রুহমতে শবগুলা মাদি হয়। তখন শোয়ায়েব (আঃ) হযরত মুসা (আঃ) ডেকে সব বাচ্চা গুলা দিয়ে দেন। এভাবে ষষ্টম বছর তিনি বলেন এ বছর যদি সমস্ত বাচ্চা সাদা হয় তবে শবগুলা আমি তোমাকে দিয়ে দিব। আল্লহ সে বছর সব বাচ্চা সাদা দিয়ে দিলেন। অষ্টম বছর হযরত শোয়ায়েব (আঃ) বলেছেন এ বছর যদি সমস্ত বাচ্চা কাল হয় তবে আমি শবগুলা তোমাকে দিয়ে দিব।

আল্লহাতালা সে বছর শবগুলা বাচ্চা কাল করে দেয়। এতে হযরত মুসা(আঃ) যে মেষের মালিক হলেন তার সংখ্যা ছিল কয়েক হাজার। তিনি কিছু বিক্রি করলেন, কিছু খেলেন, আর কিছু দান করলেন। এভাবে এক এক করে আট বছর কেটে গেল। পরে আরও দুই বছর সহ মোট দশ বছর হযরত মুসা (আঃ) হযরত শোয়ায়েব (আঃ) এর ছোহবতে রাখালের চাকুরী করে নবুয়তীর ভার বহনের যোগ্যতা অর্জন করেন।

অতপর আল্লাহাতালার পক্ষ থেকে মিশর এর ফেরাউন কে দিনের দাওয়াত দিবার জন্য মিশর যাত্রার হুকুম হয়। হযরত মুসা (আঃ) একথা হযরত শোয়ায়েব (আঃ) কে অবগত করেন। হযরত শোয়ায়েব (আঃ) বলন তুমি সত্তর মিশর চলে যাও। আমি তোমার যাত্রার প্রাক্কালে আমার সমুদয় ধনদৌলত, সহায়-সম্পদ, মেষ উট সব কিছু তোমাকে দান করলাম। এখন তুমি এ গুলা নিয়ে যেতে পার। বিষয়টি সম্পূর্ণ তোমার আওতা ভুক্ত। হযরত মুসা (আঃ) বললেন আমি সব কিছু এখানে রক্ষনাবেক্ষণ এর ব্যবস্থা করব। আর কিছু মালপত্র আর সুফরা কে নিয়ে আমি মিশর যাত্রা করব। হযরত শোয়ায়েব (আঃ) বললেন, আমি তোমাদের তারাক্কির জন্য  দোয়া করি এবং তোমার দ্বারা আল্লহ যেন পৃথিবীতে এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেন সে জন্য কায়মন বাক্যে আল্লহার দরবারে ফরিয়াদ জানাই।

সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হজরত মুসা(আঃ) এর বিবাহ ও যৌবন-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।