কুখ্যাত “নাগা ভাইপার” মরিচ !

মরিচ চিবিয়ে কান-মুখ গরম করেননি এমন মানুষ খুব কমই দেখা যাবে। কম-বেশি আমাদের সকলেরই এই ধরনের মজার অভিজ্ঞতা আছে। ঘটনাটি বেশি ঘটে আমরা তখন যখন মুড়ি মাখানো বা ঝালমুড়ি খাই। মরিচ চিবালে কেমন লাগে, তা জানা সত্ত্বেও আমরা মুড়ি মাখানোর সময় বলি, “মামা, আমারটাই কিন্তু ঝাল বেশি হবে।” তো সে যাই হোক, আমরা এবার কাজের কথাই ফিরি। আজকে আমি জানাবো পৃথিবীর ভয়ংকরতম মরিচের খবর, যেটি খাওয়ার পরে আপনি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন।

বোম্বাই মরিচের কথা কম-বেশি সকলেই জানেন। সবাই মনে করেন এটিই হয়তো সবচেয়ে ঝাল মরিচ, যার আরেকটি নাম “নাগা মরিচ।” সত্যি বলতে, এর থেকেও মাত্রারিক্ত ঝাল মরিচের সন্ধান পাওয়া গেছে এই বছরে। যার নাম “নাগা ভাইপার।” ব্রিটেনের একজন কৃষক পৃথিবীর পাওয়া সব থেকে ঝাল মরিচের সংমিশ্রণে এই ভয়ংকর মরিচ আবিষ্কার করেছেন। তিনি যে তিনটি মরিচ নিয়ে গবেষণা করেছেন, তার মধ্যে আমাদের এই লিটিল বয়, মানে নাগা মরিচও ছিল। এই ভাইপারের চেহারা এতো সুন্দর যে আপনাকে তার প্রতি আকৃষ্ট করবেই, আর একবার যদি আপনি ভুল করে থাকেন, মানে “নাগা ভাইপার” খেয়ে ফেলেন, তবে পরবর্তী এক ঘণ্টা কোনো কথা বলতে পারবেন না। আপনি যখন এটি খাবেন, তখন এটি আপনার মুখ থেকে পেট পর্যন্ত পুড়ে পুড়ে যাবে। আর দুর্বল চিত্তের মানুষ এর ভয়াবহতা সহ্য করতে না পেরে জ্ঞানও হারাতে পারেন। তাই যতদূর সম্ভব এর থেকে দূরে থাকুন।

মজার ব্যাপার হল, যে ভদ্রলোক চাষি এই মরিচ আবিষ্কার করেছেন, তিনি বলেন এই মরিচ খেলে নাকি আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন অনেক বৃদ্ধি পাবে এবং এটি আপনার শরীরের জন্য খুব উপকারী। ওরে বোঝাই ক্যামনে যে ব্যাটা, যেটি খাওয়া এতো বেদনাদায়ক, সেটি হাজার উপকার হলেও তো আমি খাবো না।

এখন আপনারা আমাকে বলতে পারেন, “মিয়া ভাই, ফাঁপর দেওয়া বন্ধ করুন, কারণ ঝালের স্বাদ তো আপেক্ষিক, আপনার কাছে ভালো লাগে না, কিন্তু আমার তো ঝাল খেতে খুবই ভালো লাগে।” জী, আমিও আপনার সাথে একমত, কারণ ঝালের স্বাদ সত্যিই আপেক্ষিক। আর যে যন্ত্র বা স্কেলের মাধ্যমে এটি মাপা হয়, সেটির নাম স্কোভিল স্কেল। আসলে এই স্কেলের কাজ হচ্ছে, একটি ঝালের মধ্যে কি পরিমাণ কেপসেইন আছে—যা আমাদের শরীরের চামড়াকে উত্তেজিত করে বা ঝালের প্রভাব বুঝতে সাহায্য করে—তার পরিমাণ পরিমাপ করা।

আমাদের দেশে যে জুনিয়র নাগা মরিচ পাওয়া যায়, তার ঝালের পরিমাণ স্কোভিল স্কেলে ১,০০,০০০ ইউনিট। আর সিনিয়র, মানে সদ্য আবিষ্কৃত মরিচ নাগা ভাইপারের ঝালের পরিমাণ ১৩,৫৯,০০০ ইউনিট। তাহলে বুঝুন এটি আপনার জন্য কত মারাত্মক হতে পারে। সাধারণত আমরা যে মরিচ ব্যবহার করি, তার ঝালের মাত্রা মাত্র ২৫০০ থেকে ৫০০০ স্কোভিলের মধ্যে থাকে। যার কারণে আমাদের খেতে খুব বেশি সমস্যা হয় না।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!