কস্য পরিবেদনা

বেশ তুমুল হৈ হট্টগোলের মধ্যে দিয়ে শুরু হল মিটিং টা। হঠাৎ এভাবে মিটিং শুরু হওয়াটা ঠিক বোধগম্য না হলেও
বেশ কিছু উত্তেজনার বিষয় যে এটা, সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছিলো। সমবেত সকল সুধী মণ্ডলীর মধ্যের গুঞ্জন আলাপন সেটাই জানিয়ে দিচ্ছিল। আসন গ্রহণ নিয়ে অল্প বিস্তর মতভেদের পর সকলে কিছুটা শান্ত হতেই সভাপতি তার ঝুঁটিটা ঠিক করে নিয়ে সভা শুরু করার নির্দেশ দিলেন। সভা পরিচালনের দায়িত্বে ছিলেন যিনি, তিনি একটু গলাটা পরিষ্কার করে নিয়ে উপস্থিত সকলকে অভিবাদন জানিয়ে শুরু করলেন।

“ আজকের এই সভা আমাদের অস্তিত্ব সংকট বা নিজেদের বিভিন্ন দলের মধ্যে দ্বেষ – বিদ্বেষ সংক্রান্ত আলোচনার জন্য নয়-এই সভা আমাদের জাতির প্রতি অকারণ কুৎসা, নিন্দা এবং ঘৃণা প্রকাশের বিরুদ্ধে। আমাদের বিরুদ্ধে এক শ্রেণীর মানুষের বিরূপ মতবাদ লালন, পোষণ এবং তার প্রকাশ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে… তার বিরুদ্ধে। যদিও আমরা অশান্তি বা হিংসায় বিশ্বাস রাখি না— তথাপি এরকম অকারণ কুৎসাও বরদাস্ত করা যায় না। আমাদের …”

তার কথা শেষ হবার আগেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গেল। কে? কোথায়? কী? কেন?– বিভিন্ন দিক থেকে উড়ো মন্তব্য উড়ে আস্তে লাগল।

“ আপনারা শান্ত হন- শান্ত হয়ে বসুন, আপনাদের সব প্রশ্নের জবাব পাবেন… আমাদের সভাপতি সব বলবেন আপনাদের- তার আগে আপনাদের জানাই, আমরা আপনাদের সুচিন্তিত মতামত আশা রাখি এই বিষয়ে।”

সভাপতি মহোদয় একটু নরম প্রকৃতির, তাই নরম স্বরে শুরু করলেন-

“আমরা যে কারণে এখানে উপস্থিত হয়েছি তা হল এই যে, মনুষ্য জাতির কিছু কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি প্রবাদ চালু আছে যা আপাত ভাবে আমাদের জাতি বিরোধী। প্রথমে আমাদের জানতে হবে প্রবাদটা কি এবং তার অর্থই বা কী।

প্রবাদটা হ’ল – কাকস্য পরিবেদনা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই প্রবাদের অর্থ কী?

এ সম্বন্ধে আপনারা আপনাদের মতামত রাখতে পারেন। প্রসঙ্গত এটাও বলি যে সকল ভাষাভাষী মানুষ নয়- কেবলমাত্র কিছু মানুষ এ জাতীয় শব্দ প্রয়োগ করে থাকেন। যখন তখন— যেখানে সেখানে।”

 

সভাপতি বসা মাত্রই একজন প্রবীণ কাক বলতে শুরু করলেন- “আমার মনে হয় কথাটির প্রয়োগ আমাদের উপর বর্ণ বিদ্বেষ হিসাবে- কাকস্য অর্থাৎ কিনা কাকেদের সহিত, ‘পরিবেদনা’ -পরী অর্থাৎ সুন্দরীদের বে- অর্থাৎ বিবাহ দেওয়া যাবে না বা দেবে না। কারণ – কাক- কৃষ্ণবর্ণ, কাক- কুৎসিত, কাক- অসুন্দর।”

তার কথা শেষ হতে না হতেই একজন জী হুজুর গোত্রীয় কাক, সম্ভবত তার পারিষদ বলতে শুরু করে দিলেন— “যথার্থ বলেছেন স্যার। মানুষরা আজকাল কালো রঙ নিয়ে বেশ মাথা ঘামাচ্ছে। ছেলেরা আগে ফর্সা হওয়ার জন্য এত উদগ্রীব ছিল না। এখন হচ্ছে। শুনেছি পুরুষালি ফে য়া র অ্যা ন্ড লা ভ লি ক্রিম বেরিয়েছে। অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কে চিকনাই দেখানোর জন্য রোম উৎপাটন করার লক্ষ্যে “মোমের পুতুল মমির দেশের” মতো হয়ে সারা শরীরে ওয়াকসিং করছে। ছিঃ ছিঃ। কী লজ্জা!

“তাই নাকি?” – কারুর কারুর চোখে বিস্ময়!

“নমস্কার— মাফ করবেন । আমি আপনাদের মতের সাথে একমত নই।”

আপাত নিরীহ রোগা গোছের এক কাক উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগল।

“কৃষ্ণ বর্ণ বা কালো সব ক্ষেত্রেই মানুষের অপছন্দের কারণ— এটা ঠিক মেনে নেওয়া গেল না। আমি উদাহরণ দিয়ে বলছি—

প্রথমত- মানুষের চুল, দাড়ি, গোঁফ সাদা হলে কলপের সাহায্যে কালো করে থাকেন- যদিও বর্তমানে অন্য নানা রঙ লাল, বাদামি, গোলাপি ইত্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে বটে- তা সত্ত্বেও কালোর সংখ্যাই বেশি।

দ্বিতীয়ত – মানুষের ন্যায়, নীতি, বিচারের রঙ কিন্তু কালো।”

“বিচারের রঙ কালো? কীভাবে?”— সকলের মধ্যে শোরগোল উঠল।

আমিও একটু হতচকিত হয়ে পড়েছিলাম। বিচারের রঙ কালো শুনে।

নিরীহ রোগা কাক বলতে শুরু করলো। “আজ্ঞে হ্যাঁ… আপনারা ঠিকই শুনেছেন। ভেবে দেখুন মানুষের মধ্যে যিনি নিয়ম, রীতি, ন্যায়-অন্যায়, আইন এসবের ব্যাখ্যা শোনান- মানে উকিল বাবুরা তাঁদের রঙ কালো।

বিচারক– যিনি বিচার করছেন তিনিও কালো পোশাকে। যদিও সঠিক ভাবে বলতে গেলে সাদার উপর কালোর প্রলেপ বা আবরণ ঠিক শোনায়। তবুও…

আমি মনে মনে ভাবছিলাম পক্ষী সমাজে বিশেষত কাক সমাজে মানুষের এই বিশ্লেষণ কতটা সঠিক? আর এই যে রোগা মতো কাকটা বলে যাচ্ছেন তিনি কোন শ্রেণিভুক্ত? মানবাধিকার গোত্রের? না না, মানবাধিকার কেন হবে… পক্ষী অধিকার গোত্রের কী?

“তাই আমার মতে কালো বা কৃষ্ণবর্ণ মানুষের সমাজে ততটা দোষনীয় বলে মনে হচ্ছে না।” এই বলে বক্তৃতা শেষ করলো রোগা কাকটি।

সভাপতি আগের বক্তার রেশ ধরে বলতে লাগলেন- “সুতরাং এটা বেশ বোঝা যাচ্ছে শুধুমাত্র কৃষ্ণবর্ণের জন্যই মানুষের চোখে আমরা বিরূপ নই। এর অন্য কারণ ও আছে। আর পক্ষী সমাজে কালো রঙের পাখি আমরা একা নই। আরও আছে। কোকিল, ময়না…”

তৎক্ষণাৎ একজন মাতব্বর গোছের কাক উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের সুরে বলল- “সরি স্যার, এটা ঠিক হল না। আমাদের এই সুপ্রাচীন শিষ্ট, সভ্য, সনাতন বায়স বংশীয় দের সাথে আপনি কাদের তুলনা করলেন?

 

একদল স্বার্থপর, সুবিধাভোগী – ঋতু বিশেষে প্রকট হন। তার উপর কর্তব্যজ্ঞানহীন ও বটে। আমরা তাদের ডিম থেকে বাচ্চা তুলি- সেটা আমাদের দুর্বলতা নয়, নির্বুদ্ধিতাও নয়- আমাদের মাতৃত্ব বোধ, মমত্ব বোধ।

আর দ্বিতীয় দল— ‘ক্যা রে ক্ টা র ঢিলা’ গোত্রীয়। স্থান, কাল, পাত্র-পাত্রী, বর্ণ নির্বিশেষে সর্বদা শিস দিয়ে বেড়ান। লোফার ছেলে ছোকরাদের মতো। কখনো বা লিখিত বক্তৃতা পাঠ করার মতো শেখানো বুলি আওড়ান।”

সভাপতি কাক তাকে বসতে অনুরোধ করে বলতে শুরু করলেন- “কথা হচ্ছে সনাতন বায়স বংশীয় …।”

একজন বৃদ্ধ কাক চোখ বন্ধ করে ঝিমচ্ছিলেন– অল্প চোখ খুলে পাসে বসা এক অল্প বয়সী কাক কে বললেন

-আর সেই সব দিন নেই রে ভায়া!

-মানে?

-মানে আমাদের গৌরবের দিন-যখন আমাদের শ্রেষ্ঠ ভাবা হত।

-কবে ভাবা হত?

-সুকুমার রায় এর যুগে।

-সে কে?

-বাংলার একজন লেখক। আমি শুনেছি হালফিলের কোন এক কবির মতে সুকুমার রায় বেশ ব্যা লে ন্স ড্ লোক।

-ব্যা লে ন্স ড্ লোক ? কেন ?

-দেখ না – নামের মধ্যে ‘সু’ আর ‘কু’ দুই নিয়ে রয়েছেন।

– ও হো হো! (লেখা উচিত ছিল ক্কঃ, ক্কঃ— কিন্তু যুক্তাক্ষর যে কম পড়ত্যাসে।) তা তিনি কি বলতেন?

-বলতেন না– লিখতেন। লিখেছিলেন তার গল্পে। কাক কে “হ য ব র ল” তে গণিতজ্ঞ বানিয়েছেন। আবার “দ্রি ঘা ঞ চু” বানিয়ে তার বুদ্ধির তারিফ করেছেন।

-তারিফ?

-তারিফ, বলে তারিফ। কাকের সাঙ্কেতিক ভাষার পাঠ উদ্ধার করতে আচ্ছা আচ্ছা পণ্ডিত নাজেহাল।

-বেশ রসিক লোক তো!

-রসিক না – সমঝদার বল, বিচক্ষণ বল।

আমি চারপাশে তাকাতে থাকছিলাম। ভাবছিলাম যদি শিল্পী শুভ প্রসন্ন এখানে থাকতেন। এতরকম মুদ্রায় একসাথে এত কাকেদের দেখতে পেলে তাঁর “কাক” সিরিজ-এর সংখ্যাটা আরও বাড়তো।

অনেকক্ষণ থেকে একটি কম বয়সী ছোকরা গোছের কাক কিছু একটা বলার জন্য উসখুস করছিল। আর থাকতে না পেরে শেষে বলেই ফেললো।

“আসল কথাটা হল মানুষের স্বভাবই হল কাকেদের দোষ খুঁজে বার করা। বদনাম করা। দেখুন না মানুষ বুড়ো হলে চোখের চারপাশে বলিরেখা গজায়। চিকিৎসা শাস্ত্রে তার নাম হল কি না- ক্রো’স্ ফিট ( crow’s feet)। বোঝো কাণ্ড! বুড়ো হবে-চামড়া কোঁচকাবে –বলিরেখা গজাবে—আর দোষ কিনা কাকের পায়ের। আর সব পাখিদের পা যেন নিখুঁত আলপনা।”

“দাঁড়াও –দাঁড়াও অত হড়বড় কর না তো—সভাপতি মশাই আমি বলি কী গোড়াতেই গলদটা হচ্ছে।”

বৃদ্ধ কাক চোখ তুলে তাকিয়ে বললেন- হুঁ!!

পাশে বসা অল্প বয়সী কাক প্রশ্ন করলো- এ কে? একে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।

-চেন না? আন্দোলনের তালিম নিয়ে এসেছে।

-তালিম? কোথা থেকে?

-কোন এক ‘মহা(ন) রাষ্ট্র’ থেকে।

-কার কাছে?

-কোন এক ‘রাজ’ পরিবারে তা-‘ঠা-করে’ তালিম নিয়ে এসেছে। অবিশ্যি নিন্দুকেরা অন্য কোথা বলে।

-কী বলে?

-তালিম টালিম নয়—খেদিয়ে দিয়েছে। এক কথায় বিতাড়িত।

-তা …?

– থাম। কী বলছে শুনি।

তা সেই তালিম প্রাপ্ত বা বিতাড়িত কাক বলতে শুরু করলো—“কাকস্য পরিবেদনা- মানেটা হল কাকেদের উপর পরিবেদনা- মানে পর্যাপ্ত বেদনা। অর্থাৎ কিনা কাক সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার করা, লাঞ্ছনা করা, বেদনা দেওয়া। প্রবাদটা আসলে কাক সম্প্রদায় কে হীন চোখে দেখারই নাম। আমাদের উচিত প্রতিবাদ করা- প্রতিরোধ করা।”

কোলাহল শুরু হয়ে গেল। আর তারই মধ্যে একজন মহিলা কাক উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন- “প্রবাদের অর্থ যাই হোক না কেন মোদ্দা কথাটা হল প্রবাদের মধ্যে দিয়ে কাক জাতির প্রতি দুর্নাম রটানো- কাকেদের শোষণ করার প্রচেষ্টা। তাই আমাদের উচিত জাত -পাত ভুলে সকলে মিলে একসাথে রুখে দাঁড়ানো।

 

“কাক-কাকা-কাকি” দের উপর অত্যাচার চলছেনা- চলবে না।”

-“আরে!! এটা কি হল? হচ্ছিল কথা কাক নিয়ে তার মধ্যে আবার ‘কাকা- কাকি’ এল কোথা থেকে? ভাঙ্গা লাল বাড়িতে বাসা বানিয়েছ তা তো বুঝলাম- কিন্তু এটা তো বুঝলাম না।”-  বৃদ্ধ কাকের সরস মন্তব্য।

মহিলা কাক যেন বিরক্ত হয়ে স্বগতোক্তি করলেন বলে মনে হল – “যত্ত সব। বুড়ো হয়ে মরতে চলল- তবু গদি ছাড়তে পারল না। বুদ্ধের ও নির্বাণ হয়- এদের হয় না।”

তবে সবার সামনে তা না বলে যা বললেন তা হল-

কাক— অর্থাৎ আমাদের জাতি।

কাকা— অর্থাৎ আমাদের সাক্ষর—আমাদের ভাষা ।

কাকি— অর্থাৎ কিনা মা কাকেরা—“যারা শুধু নিজেদের সন্তান নিয়েই ভাবেন না—পরের সন্তান কেও নিজের মতো করেই লালন পালন করেন। পরের সেবায় জীবন উৎসর্গ করেন।”

আমাদের আন্দোলন এই স্লোগান নিয়েই— “কাক,কাকা,কাকি”।

-“দিদি, কথাটা কেমন যেন চেনা চেনা লাগল? কোন পরিচিত স্লোগানের মতো শোনাচ্ছে না কী?”

-“শোনালেও এটা অনুকরণ নয়- স্বরচিত। ভুলে যেও না আমি শুধু নেত্রী নই—শিল্পীও। সাথে কবিও বটে”। মহিলা বেশ ঝাঁঝিয়েই জবাব টা ছুঁড়ে দিলেন প্রশ্নকর্তার দিকে।

তর্ক –বিতর্কটা হয়ত আরও জমত –কিন্তু তার আগেই সভাপতি হস্তক্ষেপ (নাকি পঙ্খক্ষেপ) করে সবাইকে শান্ত করে বললেন—“কাক জাতির উপর গভীর মমতা বোধ থেকেই আপনি কথাটা বলছেন বুঝতে পারছি—কিন্তু কথা হচ্ছে প্রতিবাদ হবে কীভাবে?”

-“মল মূত্র ত্যাগ করে।” মহিলা কাকের নির্বিকার সুস্পষ্ট মন্তব্য।

কারুর চোখে বিস্ময়- কারুর মুখে হাসি। ব্যাঙ্গ-বিদ্রূপ, বিস্ময় কিছুই সেই মহিলা কে বিচলিত করতে পারল না। তিনি বেশ জোরের সাথেই বলতে লাগলেন –“মানুষের তৈরি যে সমস্ত স্ট্যাচু আছে- তারা মানুষের সমাজে উঁচু শ্রেণীর মানুষ হিসাবেই পরিচিত। তাদেরকে ওরা শ্রদ্ধা করে, সম্মান করে। সেই সব স্ট্যাচুর মাথায় মল মূত্র ত্যাগ করার অর্থই হল তাদের অভদ্রতার প্রতিবাদ করা। তাদের শ্রেষ্ঠত্ব বোধকে আঘাত করা।”

-“বড় জ্বালায় ফেললে দেখছি এই মহিলা। মল মূত্র ত্যাগ করার জন্য কী এখন স্ট্যাচুর খোঁজে বেরতে হবে? বয়স হয়েছে। এখন কী আর আগের মতো অত চেপেচুপে রাখতে পারি?” –বৃদ্ধ কাককে চিন্তান্বিত দেখাল। তির্যক হাসিও দেখা দিল তার ঠোঁটের কোণে।

মহিলা কাক বৃদ্ধের দিকে ফিরে বললেন—“মোটেও আমি তা বলি নি। আর শুধুমাত্র স্ট্যাচুর মাথায় কেন- জীবিত মানুষ, চলন্ত মানুষ, ঝুলন্ত মানুষ, দাঁড়িয়ে বা বসে আছেন এমন যে কোন মানুষকে যে কোন স্থানে দেখবেন সেখানেই তাদের শরীরে মল মূত্র ত্যাগ করতে পারেন। কোন বাধা নেই। জাস্ট ডু ইট। আমরা মানুষকে তাদের লাঞ্ছনার বদলে লাঞ্ছনা, অপমানের বদলে অপমান ফিরিয়ে দিতে চাই।”

হৈ-হট্টগোল বেড়ে গেল। স্লোগান, চিৎকার, হাসি, মস্করা, ব্যাঙ্গ-সব একসাথে চলতে লাগল।

-“ও মশাই! উঠুন। আপনার স্টপেজ তো এসে গেল” —কন্ডাকটরের ডাকে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। ভাত খেয়ে অফিস যাবার পথে বেশ একটা তন্দ্রা ভাব এসেছিল।

ধড়মড় করে উঠে বললাম—“স্টপেজ এসে গেছে?”

-হ্যাঁ, এই তো।

তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে পড়লাম। বাস ছেড়ে দিল।

কা—কা। কা—কা।

মুখ তুলে তাকিয়ে দেখি মাথার উপর বসে আছেন শ্রীযুক্ত বায়স মশাই। মিটিং এর খবর কী এনার কানে পৌঁছেছে ?

চট জলদি রাস্তা পার হয়ে উল্টোদিকের ফুটপাথ ধরে হাঁটা লাগালাম।

 

দুঃখিত!