এই গল্পটা একজন জ্ঞানী শিক্ষককে নিয়ে। তাঁর ছাত্র ছিল এক বাদশাহর ছেলে। শিক্ষকের কর্তব্য ছাত্রকে শিক্ষা দেওয়া। এই শিক্ষক ছিলেন খুবই আদর্শবাদী। যা সত্য বলে জানতেন, তাই করতেন। ধনী-গরিব, ছোট-বড় বলে তিনি কিছু মানতেন না। সকল ছাত্রের প্রতি তাঁর সমান নজর ছিল। বাদশাহর ছেলেকে তিনি আলাদা চোখে দেখতেন না। বাদশাহর ছেলেটা ছিল খুব দুষ্টু। পড়াশোনায় তার একটুও মনোযোগ ছিল না। কাউকে সে পরোয়াও করত না।
শিক্ষক তাই বাদশাহর ছেলেকে মাঝে-মধ্যে শাসন করতেন। এমনকি তাকে বেত্রাঘাত করতেও দ্বিধা করতেন না। একদিন ছেলেটি সহপাঠীদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করল। শিক্ষক জানতে পেরে ডেকে পাঠালেন ছেলেটিকে। তারপর বেদম পেটালেন। ছেলেটি রাগে, অভিমানে, দুঃখে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরল। বাদশাহ জিজ্ঞেস করলেন—কোন কারণে কান্না? ছেলেটি সবিস্তারে শিক্ষকের ওপর সব দোষ চাপাল।
বাদশাহ খুব অখুশি হলেন। ডেকে পাঠালেন শিক্ষককে—“আপনি আমার পুত্রকে এত মারধর করলেন কেন?” আদর্শবান শিক্ষক বিন্দুমাত্র বিচলিত হলেন না। বাদশাহর সামনে দাঁড়িয়ে নির্ভীক উচ্চারণে বললেন—“আমাকে মাফ করবেন। আপনার পুত্র আগামীদিনে আমাদের বাদশাহ হবে। তার দায়িত্ব অনেক। আমি তাকে সৎ ও সুন্দর শিক্ষা দিয়ে বড় করে তুলতে চাই, যাতে ভবিষ্যতে সে একজন সুশাসক হয়। তাই চেষ্টার কোনো ত্রুটি করি না।
আমার যদি ভুল হয়ে থাকে তবে আমাকে শাস্তি দিন।”
শিক্ষকের কথা শুনে বাদশাহ খুব খুশি হলেন। প্রচুর বকশিস দিয়ে তিনি বিদায় দিলেন শিক্ষককে। বললেন—“একজন ভালো শিক্ষকই পারে একটি জাতিকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে। আপনার মতো শিক্ষক আমাদের আরো প্রয়োজন।”
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।