হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ১৩
হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ১২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এদিকে পাপিষ্ঠ নরাধম বোরহান উদ্দীনের সেই অনেক দিনের চাওয়া পাওয়া আকাঙ্ক্ষিত নবজাত শিশুকে রাজ দরবারে আনার জন্য আদেশ করল। নিষ্ঠুর লোক গিয়ে বোরহান উদ্দীনের ঘরে হাজির হল। নির্দয় লোক গুলো গিয়ে বোরহান উদ্দীনের স্ত্রীর কোল থেকে মায়ের বুকের ধন সেই নবজাত শিশুটাকে কেড়ে নিয়ে এল। এবারে রাজার হুকুম জারি হল। বোরহান উদ্দীন যেভাবে আমাদের ধর্মের অবমাননা করে গো জবাই করে মাংস টুকরা টুকরা করেছে সেই ভাবে তার সন্তানকে হত্যা করে টুকরা টুকরা করে পশুদের আহার বানিয়ে দাও।
জল্লাদ আগে এসেই রাজ দরবারে হাজির হয়েছে। যখনই গৌর গোবিন্দ এই হুকুম করল জল্লাদও সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুতি নিয়ে সেই বোরহান উদ্দীনের আকাঙ্ক্ষিত বস্তু তথা নবজাত সন্তানকে হত্যা করে ফেলল। এদিকে বোরহান উদ্দীনের উপর যখন এরূপ কঠোর নির্দেশ জারী হল, তখনই তিনি জ্ঞান বুদ্ধি হারা অচেতন নির্বাক হয়ে কাঠের পুতুলের ন্যায় দাড়িয়ে রইলেন। তিনি ভাল মন্দ বিচার করার শক্তি হারিয়ে ফেললেন। তার সম্মুখে সেই আদরের সন্তানকে হত্যা করা হলেও কিছু বলার শক্তি তার ছিল না। এখানের অত্যাচারী রাজার অত্যাচারের হাত ক্ষান্ত হল না। আরো সম্মুখ দিকে অগ্রসর
হল। এবার রাজা বলল, রে বোরহান উদ্দীন তুমি যে হাতে গো জবেহ করেছ সে হাতটিও কাটা যাবে। রাজার যেই কথা জল্লাদের সেই কাজ। সাথে সাথে নিষ্ঠুর জল্লাদ বোরহান উদ্দীনের হাত খানও কেটে দিল। উ! কি সে হত্যা কাণ্ড। সে কি বিভীষিকাময় মুহূর্ত। বোরহান উদ্দীনের অন্তরে দুঃখের ঝড় বয়ে গেল। দুঃখের অন্ত রইল না। তবুও অটল বিশ্বাসী বোরহান উদ্দীন দ্বীন থেকে বিচলিত হলেন না। তিনি হাত তুলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করলেন, হে প্রভু! তোমার আশাই পূর্ণ হোক। তবে সকল অবস্থায় যেন তোমার উপর অটল বিশ্বাস রাখতে পারি সে তাওফীক আমাকে দান কর।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া