হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ২

হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

এদিকে আস্তে আস্তে শাহজালালের জীবনেও নেমে আসে শোকের তুফান। কারণ পিতার স্নেহও বেশী দিন তাঁর ভাগ্যে জোটেনি। মা জননীর মৃত্যুর কিছু দিন পরে দেশের সীমান্তে যখন মুসলমানদের সঙ্গে বিধর্মীদের বিরাট যুদ্ধ শুরু হয়। সে যুদ্ধে তখন বীর যোদ্ধা মাহমুদ কোরাইশীর ডাক পড়ে যায়। যখন মাহমুদ এই যুদ্ধের সংবাদ পেলেন তখনই তাঁর মন চিন্তিত হয়ে পড়ল। না জানি যুদ্ধ থেকে আর ফিরে নাও আসতে পারি। অপর দিকে শিশু শাহজাজালের কথাও ভাবতে লাগলেন যে আমি যদি এ যুদ্ধ থেকে ফিরে আসতে না পারি তখন মাতৃপিতৃ হারা শিশু শাহজালালের অবস্থাটা কি হবে।

অন্য দিকে যুদ্ধেও যেতে মন চায়, তখন তিনি উভয় সংকটে পড়ে গেলেন। সে যাই হোক তিনি ঈমানী শক্তিতে ছিলেন শক্তিমান। আল্লাহর উপর ছিল তাঁর অগাদ বিশ্বাস। তাই তিনি শিশু শাহজালালের প্রতিপালনের ভরসা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা পালনকারী মহান আল্লাহর উপর রেখেই ধর্ম যুদ্ধের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের সীমান্তে কাফেরদের বিরুদ্ধে বীর বিক্রমে ছুটে চললেন। যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে অনেক শত্রু তাঁর হাতে নিহত হল। যুদ্ধ ময়দান থেকে ফিরে এলেন না। শোক সাগরে ভাসতে লাগলেন শিশু শাহজালাল। এবার তিনি এ ধরায় এতিম হয়ে গেলেন।

আল্লাহর লীলা বুঝবার শক্তি কার আছে? তিনি নদীর মাঝে পাহাড় গড়েন আবার পাহাড় ভেঙ্গে নদী করেন; যেমন কোন মানুষ কষ্ট ব্যতিরেখে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেন না সেই কষ্টের নমুনা নেমে আসতে লাগল ইয়াতিম শাহজালালের জীবনে। এদিকে মাহমুদ কোরাইশী গৃহত্যাগের সময় শিশু শাহজালালকে তাঁর মাতুলের মাধ্যমে আরাম আয়েশ ও সুখের মধ্যই লালন-পালন করিয়েছেন। এ কথা সর্ব বিদিত যে, যে ব্যক্তি আল্লাহকে আপন করে নিয়েছেন, আল্লাহও তাকে সেইভাবে আপন করে নেন এই সুযোগই অসহায় শাহজালাল তাঁর মামার সংসারে খুব সুখেই প্রতি পালিত হন।

তাঁর পিতা শহীদ হবার পর তাঁর মামা সৈয়দ কবির আহম্মদ অসহায় ভাগীনাটির লালন-পালনের ভার গ্রহন করেন। হযরত শাহজালাল (রঃ) তাঁর মামার সংসারে গিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে লাগলেন। সাথে সাথে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যও লাভ করলেন। তিনি তাঁর জীবনকে ধর্ম প্রচারের জন্যই বিলীন করে দিয়েছেন।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত শাহজালাল (রঃ ) – পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।