গাছদের কান্ড——ফারিন সুমাইয়া

 

বেলির মন খুব খারাপ। চারিদককে গরমে সে একদম ঝলসে যাচ্ছে প্রায়। লেবুর দিকে তাকিয়ে মনটা তার আরো খারাপ হয়ে গেলো। এ কয়েকদিনের রোদে তাকানো যাচ্ছে না ওর দিকে। বৃষ্টি যেন এ পথে হাঁটবে না বলেই প্রতিজ্ঞা করেছে। বাকি সবারও একই অবস্থা, বৃষ্টির অভাব আর প্রচন্ড রোদ জীবনটাকে দূর্বিসহ করে তুলেছে।
এ সময় শুনা গেলো গন্ধরাজের গলা।
ও ভাই পেঁপে, একটু এদিকে ঝুকনা। একটু চায়া পড়ুক আমার বাচ্চা গুলোর গায়ে।
পেঁপে: ইস! গরমে বাঁচিনা, আবার ঝুকবো তার দিকে।
গন্ধরাজ : এমনিতে ও তো ঠায় দাড়িয়ে আছ। ইচ্ছে হলেও কি বসতে পারবে নাকি?
পেঁপে কিছু বলতে যাবে এমন সময় কথা বলল পাতাবাহার।
পাতাবাহার : আহা!!! থামবে তোমরা। এমনিতেই গরম তার ওপর আমার এত্তোগুলো পাতা, ওহ!!
লেবুগাছ হাই তুলতে তুলতে বলল, কি হয়েছে? এত্তো চেচামেচি কেন?
এতোক্ষণে ঘুমভাঙ্গল মহারাজের। বলে উঠল লজ্জাবতী।
কি? আমি মহারাজা? বলে ওঠল লেবুগাছ।
মিথ্যেটাকি বলেছে ও শুনি? বলে ওঠল কচি আমের চারা। তুমি তো সারাদিন বেলির ডালপালার ওপর হেলান দিয়ে ঘুমাও। কি গো; কিছু ভুল বললাম বেলি আপা??
না না তেমন কিছু না, একসাথে থাকলে এমন একটু আধটু হয় আর কি?! আর তা ছাড়া আমরাতো একই বাগানের গাছ।
বলতে বলতে একটা দমকা হাওয়া বইতে লাগল। সবার মনে নেচে উঠল আর গেয়ে ওঠল।
মনে হয় বৃষ্টি আসবে, বলল বেলি।
আর বৃষ্টি!! আসবে না আসবে না। বলল মরিচ গাছ।
বেলি বলল : এই চুপ কর তো, শুধু ঝাল ঝাল কথা।
মরিচ গাছ বলল : ভুল কি বললাম শুনি। সবাই শুধু গাছ কাটে, কেউ কি মাসে-বছরে-সপ্তাহে অমত্মত ১টা গাছও লাগায়। গাছ এভাবে কাঠলে ক্ষরা, বন্যা হবে না তো কি হবে বল?
সবাই বলল, হুম হুম, ঠিক ঠিক। সবার উচিত বছরে ৩টা হলেও গাছ লাগানো আর আমাদের পরিবেশটাকে বাচাঁনো।
আর এর মধ্যেই বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা পড়া শুরু হয়ে গেলো। পেঁপে গাছ সবাইকে মহা আনন্দে গানে গানে আমন্ত্রণ জানাতে লাগল। আর বলতে লাগল- চল, সবাই বৃষ্টিতে ভিজি………

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!