হযরত শায়খ আবুল আব্বাস নেহাবন্দী (রঃ) – শেষ পর্ব

পথে নেমে মুরীদ প্রথমেই পেয়ে গেলেন হযরত আলী (রঃ)-এর বংশধর আলাভী নামক এক সৈয়দজাদার। তিনি তাঁকেই দিরহামটি দান করে তাঁর অনুসরণ করলেন। উদ্দেশ্য, সেটি অপকর্মে ব্যবহৃত হয় কি না তা দেখা। কিন্তু দেখা গেল, এক নির্জন স্থানে গিয়ে আলভী তাঁর কাপড়ের ভেতর থেকে একটা মরা হাঁস বের করে ফেলে দিলেন। তখন মুরীদ পেছন থেকে জিজ্ঞেস করলেন মরা হাঁস রেখেছিলেন কেন? আলভী বললেন, সাত দিন ধরে সপরিবারে তিনি উপবাস। কিন্তু ভিক্ষা করার মতো হেয় কাজ করতে না পেরে মরা হাঁসটিকেই তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন অনশনক্লিষ্ট পরিবার খেতে দেবেন বলেন। কিন্তু যখন দিরহামটি পাওয়া গেল, তখন মৃত হাঁস খাওয়া অবৈধ নয় মনে করে সেটি ফেলে দিলেন।

মুরিদ ফিরে এসে দুটি ঘটনাই বলতে যাচ্ছেন। হযরত আবুল আব্বাস নেহাবন্দী (রঃ) বললেন, তোমার বলার দরকার নেই। আমার কথা শোন। তোমার উপার্জন যদি অবৈধ উপায়ে হয়, তবে তোমার দান অন্ধ ভিখারী গ্রহণ করে তা পাপের পথে খরচ করবে। আর তা বৈধ হয়, তা হলে সৈয়দজাদার মতো সৎ ও সম্মানিত লোকদের হাতে পড়ে তা দ্বারা তাঁর কষ্ট দূর হবে।

কথিত আছে, রোমের এক খ্রীষ্টান ধর্মযাজক তাঁকে পরীক্ষা করার জন্য একটি খিরকা পরিধান করে হাতে একখানি লাঠি নিয়ে প্রথমে হযরত আবুল আব্বাস কাচ্ছার (রঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হন। হযরত আবুল আব্বাস নেহাবন্দী (রঃ) ছিলেন প্রদীপ্ত পুরুষ। ধর্মযাজক তাঁর দরবারে প্রবেশ করা মাত্র তিনি ক্রোধান্বিত স্বরে বললেন, রে বিধর্মী! পরধর্মীর কাছে তো কী প্রয়োজন?

ধর্মযাজক আর পা না বাড়িয়ে চলে এলেন হযরত আবুল আব্বাস নেহাবন্দী (রঃ)-এর দরবেশ। তিনি তাঁকে বিধর্মী বলে সনাক্ত করলেও কিছু বললেন না। ধর্মযাজকও তাঁর আস্তানায় চার নাস কাটালেন। তারপর যখন একদিন বিদায় নিতে উদ্যত হলেন, তখন হযরত আবুল আব্বাস নেহাবন্দী (রঃ) বললেন, যখন নুন-ভাতের সম্পর্কে এখানে আপনা হয়ে গিয়েছিলেন, তখন এমন পর হয়ে চলে যাচ্ছেন কেন? তাঁর মুখে এ কথা শুনে ধর্মযাজক তৎক্ষণাৎ কালেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেলেন। দীর্ঘ দিন তিনি তাঁর সাহচর্য থেকে বিখ্যাত দরবেশে পরিণতি হন।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত শায়খ আবুল আব্বাস নেহাবন্দী (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।