হযরত ইসহাক ইব্রাহীম ইবনে আহমদ খাওইয়াস (রঃ) – পর্ব ৫

হযরত ইসহাক ইব্রাহীম ইবনে আহমদ খাওইয়াস (রঃ) – পর্ব ৪ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আবু ইসহাক (রঃ) বললেন, এই যে ইসহাক, আপনি জানলেন কী করে আর আমি যে ডালিম খেতে ইচ্ছুক, তা-ই বা বুঝলেন কিভাবে? সে বলল, আল্লাহর পরিচয় যে লাভ করে, আল্লাহ কোন কিছুই তার অজানা রাখেন না। হযরত ইসহাক (রঃ) পোকা-মাকড়, মাছি ইত্যাদির উৎপাত তাঁর মনের অবস্থা কীরূপ, তা জানতে চাইলেন। তিনি বললেন, কিছু কিছু কীট আমার শরীরের গোশত খায়, কিছু কিছু খায় না। তবে উৎপাত করে বটে। কিন্তু আল্লাহর যখন এরকমই শখ, তখন সে শখ পূরণে আমি তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করেই চলেছি।

রোমের এক মন্দিরে সত্তর বছর ধরে এক পুরোহিত বাস করতেন। হযরত ইসহাক (রঃ) তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি জানালার ফাঁক দিয়ে মাথা বের করে বললেন, আপনি কি জন্য আমার কাছে এসেছেন? আমি তো রাহেব নই। বরং একজন কুকুর পালক। নিজের নফস কুকুরের অত্যাচার থেকে মানুষকে রক্ষা করে চলেছি। তার কথা শুনে তিনি আল্লাহর তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে বললেন, প্রভু গো, আপনি ইচ্ছা করলে এই সাধক রাহেবকে পথভ্রষ্টতা থেকে ইসলামের পথ দেখাতে পারেন। পুরোহিত বললেন, আপনি লোক খুঁজবেন আর কত? তার চেয়ে এবার নিজেকে খোঁজ করুন। যখন নিজেকে চিনতে পারবেন তখন প্রবৃত্তির প্রহরী হয়ে থাকবেন। প্রবৃত্তি প্রতিদিন তিনশ ষাট রকমের পোশাক বদল করে প্রভুত্বের পোশাক পরিধান করে আর মানুষকে ভ্রান্ত পথের দিকে ডাক দেয়।

একবার সফরে এক দরবেশ তাঁর সঙ্গী হতে চাইলেন। হযরত ইসহাক (রঃ) তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়ে বললেন, দুজনের মধ্যে একজনের আমীর বা দলনেতা হওয়া দরকার। তাতে সফর সুন্দর হবে। তো আবু ইসহাক (রঃ)-ই দলনেতা হলেন। প্রথম মঞ্জিলে পৌঁছালে হযরত সাথীকে বসতে বলে নিজে পানি আনলেন। শীতের সময়। অতএব নিজেই কাঠ যোগাড় করে আগুন জ্বলালেন। এভাবে রাস্তায় যেতে যেতে যা কিছু দরকার হয়, তিনি নিজেই তা করতেন। সাথীকে করতে দিতেন না। কিছু বললেই বলতেন, আগেই ঠিক হয়েছে, আমি কর্তা আর আপনি আমার আজ্ঞাবাহী। একদিন জোর বৃষ্টি হয়ে গেল। তিনি নিজেই কাপড় তাঁর মাথায় ধরে তাকে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচালেন। এতে সাথী দরবেশ বড় লজ্জা ও অস্বস্তি বোধ করলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কিছুই বলতে পারলেন না।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত ইসহাক ইব্রাহীম ইবনে আহমদ খাওইয়াস (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।