আমি কিন্তু ভিতু নই —- ইমরান আল আতিক

আপনিও জানেন আমিও জানি এই পৃথিবীতে ভুত বলে
কিছুই নেই, তারপরেও আজ আমি আপনাদের সাথে সেদিনের আমার এবং আমার বন্ধুদের সাথে ঘটে যাওয়া একটা কাহিনী তুলে ধরছি। আমাদের বিষয়ে কিছু বলে নেই আমি এবং আমার বন্ধু সিরাজুল ও রনি। আমরা চাটমোহর কলেজে পড়ি, আমরা তিন জনে একে অপরের খুব কাছের বন্ধু। আমার নামটা আতিক। সব সময় এক সাথে থাকি একি মেসে থাকি এবং একি রুমে। আমরা চাটমোহর চৌধুরী পারার আজমেরি (মেসের নাম কাল্পনিক) মেসে থাকতাম ২০১১ সালে। অনেক রাত পর্যন্ত পড়ার ফাঁকেফাঁকে গল্প করতাম। তো আমরা প্রায় দিনি রাতের মিল মেসে খেতাম না আমাদের চাটমোহরে হৃদয়ের হোটেল নামে একটা হোটেল আছে (আজও আছে সেই হোটেল) সেখানকার খিচুড়ির এতই স্বাদ যে ভুলবার নয় (যদি কখনো চাটমোহরে এসে রাত হয়ে যায় তবে ওই হোটেলের খিচুড়ি খেয়ে আসবেন)। প্রতিদিন তিনজনে কলেজ শেষে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমাই তো একদিন ঘুমাতে লাগলাম আমার ঘুম শেষ না হতেই মেসের সবাই আমাকে জাগিয়ে দেয় এবং সবাই বলে যে সিরাজুলের ফোন হারিয়ে গেছে, তোর ফোন কই? আমি চারিদিক দেখলাম আমার ফোন নেই অবশেষ বালিশের নিচে আমার ফোন পাই
অনেক খুজা খুজির পরেও সিরাজুলের ফোন পেলাম না
তিন জনের মন তো অনেক খারাপ
সেদিন তিন জনেই খিচুড়ির কথা ভুলে গেলাম।
সেদিন রাতেই ঘটলো এক ঘটনা,
সেদিন রাতে সবাই ঘুমাচ্ছিলাম রনিও ঘুমাচ্ছিলো হঠাৎ ও চিৎকার দিয়ে উঠলো, আমরা দুজন জেগে গেলাম এবং অকে বললাম কি হয়েছে (রনি আগে থেকেই ভিতু একটা ছেলে) সে ভয়ে কাপ্তে কাপ্তে বল্লো সে স্বপ্ন দেখেছে যে সিরাজুলের ফোন নিয়ে যাচ্ছে এক মেয়ে তার অনেক লম্বা লম্বা চুল একবার এদিক তাকাইতেছে আবার সামনে হাটছে।
আর বলছে এই যে রনি তুই যদি এই কথা কাউকে বলিস তবে তোর জান বের করে নিবো ।
রনি কাঁদছিল আমি আর সিরাজুল বাকরুদ্ধ হয়ে বসে রইলাম অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন সকাল হবে।
সকাল বেলায় মেসের সবাই কে একত্রে করে বললাম এই এই কথা আমাদের কথা শুনে সবাই বললো আমি আর মেসে থাকবো না বাসায় চলে যাবো যেই কথা সেই কাজ তিন জন বাদে সকালেই যার যার বাসায় সে সে চলে গেলো
দুপুরে স্টার হোটেল থেকে খেয়ে আসার সময় হাজী মেসের সামনে দিয়ে এক মেয়ে দৌড়ে গেলো। তিন জনে পিছু নিলাম মেয়েটার চৌধুরী পারার পিছুনেই এক বিল
সেখানে গিয়েই মেয়েটিকে আর দেখা গেলোনা। রনি অজ্ঞান হয়ে গেলো
রনির জ্ঞান ফিরলো ৪ টার দিকে রনি বল্লো আমি থাকবো না আমি বাসায় জাবো আমাকে বাসায় রেখে আয়
আমার আগামিকাল পদার্থ বিজ্ঞানে পরিক্ষা ( আমি আর রনি সাইন্স এর ছাত্র আর সিরাজুল ছিলো কমার্স) রনি বল্লো আমি পরিক্ষা দিবো না সিরাজুল তুই আমাকে বাসা তে রেখে আয় ভাই প্লিজ
সিরাজুল আর রনি আমাকে রেখে চলে গেলো।
এখন কি করবো ভাবতেছি আমি কি অন্য মেসে গিয়ে থাকবো আবার ভাবলাম অদের ওখানে গেলে পরা হবে না তাই ঠিক করলাম আমাদের মেসেই থাকবো।
সন্ধার আগেই হোটেল থেকে মুগ্লাই কিনে আনছিলাম রাতে খাইতে
তো পরার টেবিলের উপর মুগ্লাই রেখে পরতে বসছি সন্ধ্যা থেকেই পরতে পরতে রাত ১১ টা বেজে গেসে বুঝতেই পারলাম না. এখন মুগ্লাই খেতে বসব
ঠিক সেই মুহুর্তে এক আওয়াজ ভেসে আসলো আমার কানে
কে জেনো বলছে কি আতিক তুমি গেলে না যে সবাই আমার ভয়ে পালিয়েছে আর তুমি দেখছি পালাওনি আবার মুগ্লাই টাও খাওনি
আমি চারিদিকে তাকালাম কোথাও কিছুই খুজে পেলাম না
অন্য রুম থেকে শব্দ আসছে আতিক আতিক ভাই দরজা খুলোড
আমি হতভম্ব হয়ে চুপ করে রইলাম দেখি শব্দ টা আরো বাড়ছে
হঠাৎ ছাদের দেয়ালে তাকাতেই চোখ আর সরাতে পারছি না
একি এতো রক্ত কোথা থেকে।
আমার শরির থেকে দেখছি ঘাম ঝরছে
তার কিছুক্ষন পরেই অনুভব করলাম কে জেনো আমার শরিরের ঘাম মুছে দিতেছে
আর বলছে কি আতিক ভাবছো আমি কে আর কেনই বা এমন হচ্ছে তাই না
আমি সাহস করে বললাম কে তুমি আর কেনো এসব হচ্ছে
সামনে এসে কথা বলো
আমায় পতি উত্তরে বল্লো আমি তোমার সামনে গেলে যে তুমি ভয় পাবে
আমিও উত্তরে বললাম আমি তোমাকে মটেও ভয় পাই না
সে বল্লো তাই নাকি এজন্যি কি তুমি বাসায় গেলে না?
আরো বল্লো জানো তুমি যে আমায় ভয় পাওনি তার জন্য আমি খুবি আনন্দিত। আমি বললাম কেনো
সে আমায় বলছে জানো
এই মেসে থেকে আমি কত ছাত্রকে ভয়ে বারি পাঠিয়েছি আর কত ছাত্রর জান বের করে নিয়েছি?
বললাম না
সে বলছে আমি তোমাদের পাসের গ্রামের এক সাধারন ঘরের মেয়ে বাবার আশা ছিলো ডাক্তার বানাবে তাই তোমাদের কলেজে ভর্তি হলাম দিন কাল ভালোই জেতেছিলো আর আমি বাসা থেকেই আসতাম বলে রাস্তায় অনেকেই আমার দিকে নজর দিতো এক দিন এখানকার এক ছেলের প্রেমে পরে জাই কিন্তু সে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার সর্বনাশ করেই শান্ত হয়নি অর অনান্য বন্ধুদের নিয়ে আমার উপর অত্যাচার চালায় তাতেও তাদের তৃপ্তি মিটেনি অবশেষে আমাকে ওই বিলের মাঝখানে গলাটিপে মেরে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। তার পর থেকেই আমি এমন হয়ে যাই আমি অদের সবাইকে মেরে ফেলি।
আমি বললাম আচ্ছা তুমি অন্যদের ভয় দেখাও কেনো সে বল্লো তারা যেনো আমার মত অন্য মেয়েদের এমন না করে
তুমি জানো না তোমরা তিন জন মেসে না থাকায় অরা মেয়ে নিয়ে এসে ফুর্তি করে।
আর এমন টা অনেকেই করত তাই আমি অদেরকেও শাস্তি দেই
আমি বললাম তো আমাকেও মারবে নাকি
সে বল্লো তোমাকে মারার হলে অনেক আগেই মেরে ফেলতাম
বললাম তাই নাকি।
সে বলল রনিকে স্বপ্ন দেখিয়েছি কারন অনেক বছর যাবৎ একাকি রয়েছি কারো সাথে কথা বলতে পারি না যদি কনো সাহসি ছেলে একাকি থাকে তবে তার সাথে সারা রাত কথা বলবো
তো নিজেকে হিরো ভেবে কথা বলতে লাগ্লাম
কখন যে সকাল হয়ে গেছে বুঝতেই পারলাম না। এদিকে মেসের খালা এসে ডাকছে কাছে গেলাম বললাম কি হয়েছে
খালা বলল যে অই বিলের মাঝে এক মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে
অনেক লোকের ভির আমিও গেলাম
আমি সেখানে যেতেই কোথা থেকে যেনো ঝর উঠে আসলো
আর মৃত দেহ দারিয়ে পরেছে সবাই দেখে দৌড়াতে লাগ্লো কেউ সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পরে রইলো
আমার রাতের কথা মনে পরে গেলো
আমি বললাম এসব কি হচ্ছে
মেয়েটি আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমার সামনে দারিয়ে বলছে আজ থেকে আর আমার সন্ধান কেউ পাবে না এ জন্যই এসব হচ্ছে আর কিছুক্ষন পরেই আমি চলে যাবো পৃথিবীসহ ছেরে
ভালো থেকো আতিক আর তোমার বন্ধুরা।
কিছুক্ষন পরেই সব শান্ত হয়ে গেলো
সবাই আমার কাছে এগিয়ে এসে বল্লো কি কাহিনী
আমি সবাইকে বলে দিলাম রাতের গল্প টা ।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!