হযরত আবু বকর কেতানী (রঃ) – পর্ব ৩
হযরত আবু বকর কেতানী (রঃ) – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
একদা তিনি একা একা নামাজ পড়ছেন। এক চোর তাঁর চাদরখানা টেনে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে গেল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দুখানা হাতই অবশ হয়ে গেল। এতে দারুণ ভয় পেয়ে চোরটি দাচর নিয়ে আবার ফিরে এল। তারপর তাঁর কাঁধের ওপর রেখে চুপ করে বসে পড়ল। নামাজ শেষ হলে সে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল। তিনি বললেন, তুমি কি করেছ, আমি তো বুঝতে পারছি না। ব্যাপার কী? সে সমস্ত ঘটনা খুলে বলল, ঘটনা শুনে তিনি তৎক্ষণাৎ তাকে ক্ষমা করলেন। তার জন্য দোয়া করলেন। আর তার হাত দুখানি আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল।
এক রাতে তিনি এক সুদর্শন পুরুষকে স্বপ্নে দেখে তাঁর পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। জানা গেল, সেই রূপবান পুরুষটি হলেন তাকওয়া তথা ধর্মনিষ্ঠা। তিনি এও জানালেন যে, তাঁর ঠিকানা হল দুঃখী, দুর্দশাক্লিষ্ট মানুষের হৃদয়।
আরেক রাতে স্বপ্ন দেখলেন এক কুরূপা নারীকে। জানা গেল, তার নাম মসিবত। আর তার ঠিকানা হল, আনন্দিত ফুর্তিবাজ মানুষের অন্তকরণ। এ দুটি স্বপ্ন দেখে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেন যে, জীবনে কোনদিন খুশী ও আনন্দের পশ্চাদ্ধাবন করবেন না।
এক রাতে রাসূল (সাঃ) স্বপ্নযোগে তাঁর কিছু মাসআলা শিক্ষা দিলেন। আরেক রাত্রে তিনি নবীজীর কাছে স্বপ্নযোগে অনুরোধ করলেন, আপনি আমাকে এমন একটি আমল শিক্ষা দিন, যাতে আমার লোভ-লালসার নিবৃত্তি ঘটে। তখন তিনি তাঁকে একটি দোয়া প্রতিদিন চল্লিশবার করে পাঠ করতে বললেন। দোয়াটি এরূপঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসআলুকা আন তুহইয়া ক্বাবললী মারিফাতিকা আবাদা।
একবার এক দরবেশ কান্নারত অবস্থায় তাঁকে বলেন, তিনি একবার বিশ দিন পর্যন্ত একটানা উপবাসে তিনি রাস্তার ওপর একটি দিরহাম দেখতে পান। তাতে লেখা ছিল, আল্লাহ কি তোমার উপবাসের কথা অবহিত ছিলেন না। তোমার অবস্থার কথা মানুষের কাছে প্রকাশ করতে গেলে যে!
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া