বাহরে কোকিল বাহ — অণুগল্প

কাক-পেঁচার বন্ধুত্ব অনেক দিনের। বাসি-পঁচা দুজনেই খায়। কিন্তু ক’দিন ধরে পেঁচাকে দেখা যাচ্ছেনা। ব্যাপারটা জানার জন্য কাক এক বিকেলে গিয়ে-
পেঁচাবন্ধু বাসায় আছো ?
অসুস্থ শরীরটা কোনমতে টেলে তুলে, আছি বন্ধু। তবে অসুস্থ।
কেন, কি হয়েছে?
আর বলোনা, সেদিন মুখার্জি বাড়ির ঐ দুষ্টুছেলেটা গুলতি মেরে পেটটা ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। ঐ দ্যাখো,কেমন ফুলে গ্যাছে।ব্যথায় নড়াচড়া করতে পারছিনে।
তাইতো, তাইতো। চিন্তা করোনা।আমি এখনই বৈদ্য নিয়ে আসছি, বলেই কাক, পক্ষীকূলের কবিরাজ কোকিলের বাসায় গিয়ে অসুখের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পথ্য দিতে অনুরোধ করলো।
কাকের কথা শুনেই কোকিল অপারগতা জানিয়ে বললো,ও বেটা খামাখা সকলের দুর্নাম আর অমঙ্গল ডেকে বেড়ায়। তাছাড়া ঘাড় ত্যাড়া কুৎসিত স্বভাবের পেঁচা ভাল হয়ে আমার ফি দেবেনা।
শুনে কাক বললো, আমি জিম্মাদার রইলাম। তবু একবার চলো কোকিল ভায়া।
কোকিল পেঁচার পেট টিপে বুঝলো, মাটির গুলতিটা পেঁচার পেটে আটকে আছে।ওটাকে গলাতে পারলে পেঁচা ভাল হয়ে যাবে।
সে বললো, তুমি সামনের পুকুরে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে ঘন্টা খানেক জলে থাকলেই তোমার অসুখ সেরে যাবে।
পেঁচা তাই করতে গিয়ে অনুভব করলো, ব্যথাটা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এবং সময়ের আগেই উপশম হয়ে পেটের ফুলাও কমে গেছে।
ব্যস! পেঁচা ভাল হয়ে বাসায় ফিরে এসে নিজের কাজ-কর্ম করতে লাগলো।
এদিকে ২/৩দিন পরও রোগীর কোন সংবাদ না পেয়ে কোকিল পেঁচার বাসায় খুঁজতে গিয়ে ডাকলো, পেঁচা বাসায় আছ?
আছি। তা কি মনে করে কোকিল ভাই।
না, তোমার অসুখের খবর আর আমার ফিসটা নিতে এসেছি।
ফিসের কথা শুনে পেঁচা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বললো, কি ?
আমি কষ্ট করে শীতের সকালে গা ডুবিয়ে জলে পড়ে রইলাম, আর তুমি কি না ফি চাইতে এসেছো। বাহরে কোকিল বাহ!

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!