হযরত ইমাম শাফেয়ী (রঃ) – শেষ পর্ব
হযরত ইমাম শাফেয়ী (রঃ) – পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মানুষ টাকা-পয়সা হারায়। ইমাম শাফেয়ী (রঃ) একবার হারিয়ে ফেললেন কাজের সময়। আর হারানো সময়কে খুঁজতে লাগলেন মসজিদে, মাদ্রাসায়, বাজারে। অবশেষে তাঁর সঙ্গে দেখা হল কয়েকজন সুফী সাধকের। তাঁরা বললেন, বিগত সময় আর ফিরে পাওয়া যায় না। এখন বর্তমানের মধ্যেই যা করার করে নিতে হবে। এ সময়ও যেন আবার হারিয়ে না যায়।
ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেন, এক টুকরো রুটির বদলে আমাকে যদি কেউ দুনিয়া দিয়ে দেয়, আমি তা নেব না।
রবিয়ে খাসআম বলেন, ইমাম শাফেয়ী (রঃ)- এর মৃত্যুর কিছু দিন পূর্বে স্বপ্ন দেখলাম, হযরত আদম (আঃ)-এর মৃত্যু হয়েছে আর লোকজন তাঁর মরদেহ বাইরে আনার ব্যবস্থা করছেন। ঘুম থেকে জেগে উঠে আমি এক আলেমের কাছে এর ব্যাখ্যা চাইলাম। তিনি বললেন, বর্তমান কালের সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি এ দুনিয়া থেকে বিদায় নেবেন। হযরত আদম (আঃ) তাঁর বিদ্যাবত্তার জন্যই ফেরেশতাগণের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে গণ্য হন। এ যুগে সেদিক দিয়ে ইমাম শাফেয়ী (রঃ)- ও যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন, তা ঐ স্বপ্নের মাধ্যমেই প্রতীয়মান হয়।
মৃত্যুর আগে তিনি বলে যান, অমুক লোক তাঁকে স্নান করিয়ে দেবেন, কাফন পরিয়ে দেবেন। যাঁর কথা বলা হয়, তিনি তখন মিসরে ছিলেন। তিনি যখন দেশে ফিরলেন, তখন ইমাম শাফেয়ী (রঃ) ইহলোকে নেই। ইমাম সাহেবের ইচ্ছার কথা তাঁকে বলা হল। তিনি তাঁর অসিয়তনামা দেখতে চাইলেন। তা দেখানোও হল। তাতে হযরত শাফেয়ী (রঃ)- এর সত্তর হাজার টাকার ঋণের কথাও লেখা ছিল। ঐ ব্যক্তি তাঁর ঋণ পরিশোধ করে দিলেন। আর বললেন, আমার দ্বারা গোসলের অর্থ হল এ ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া। ইমাম শাফেয়ী (রঃ) মাত্র চুয়ান্ন বছর বয়সে ২০৪ হিজরীতে জান্নাতবাসী হন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া