দুষ্টপরী ,মিষ্টিপরী আর মোহনকুমার– দ্বিতীয় পর্ব

 

অমনি খোঁজ পড়ল চারদিকে। দিঘির জলে হাপুস হুপুস সাতার কাটে কৈ ভোরযে হল ,ফেরার পালা মিষ্টি পরী কই ? মাঠের ওপাশ ঝাউবনটা খোঁজে এলাম ,নেই জোত্স্না রাতের আলোর মাঝে কে হারাল খেই! এদিক খোঁজ ,ওদিক খোঁজ নাম দিঘির জলে মাঠের উপর পলক বোলাও কোথায় গেল চলে ? কোথাও নেই মিষ্টি পরী। এদিক সূর্যটাও উঠি উঠি করছে। আর যে এখানে থাকা চলেনা। কাঁদতে কাঁদতে ফিরে চলল পরীর দল। কেবল কাঁদলনা দুষ্টপরী ,তার মনে আজ ভারি আনন্দ। মদনপুরের রাজকুমার মোহনকুমার শিকারের ভারি শখ। কদিন পরপরই দলবল নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন জঙ্গলে।
মদনপুর রাজ্যের পাশেই মস্ত জঙ্গল । হিংস্র জন্তু জানোয়ারে একেবারে ঠাসা। তাই বলে কি হবে ,গাছপালা এত ঘন যে শিকারকে তাড়া করাটা অনেক কষ্টকর। তলোয়ারের খোঁচায় লতাপাতা কেটে এগোতে হয় সামনে। রাজকুমারের ভারি শখ একটা হরিণ পোষার। পোষতে হলে তো আর তীর চালানো যাবেনা ,হরিণ ধরতে হব জ্যান্ত।
দলবল নিয়ে জঙ্গলের ভেতর লতাপাতা কেটে এগোতে লাগলেন মোহনকুমার। ঘন জঙ্গল ,এই ভরদুপুরেও গাছপাতার আড়াল দিয়ে টুকরো টুকরো আলো দেখে মনে হয় সন্ধ্যা হয়ে এলো বুঝি।
জঙ্গল পেরিয়ে দলবল সহ রাজকুমার চলে এলেন একটা প্রকাণ্ড মাঠে। জঙ্গলের ঠিক মাঝে মাঠটা। এপাশ থেকে ওপাশ দেখা যায়না। মাঠ দেখে তো রাজকুমার ভারি অবাক!
এত বছর ধরে শিকার করছেন ,কই আগেতো কোনদিন এ মাঠ দেখেননি ?
রাজকুমার মাঠ ধরে এগোতে যেতেই বাঁধা দিয়ে উঠল তার দলবল।
মন্ত্রিপুত্রও ছিলেন শিকারি দলে। তিনি বললেন , রাজকুমার আমাদের উচিত এখুনি বাড়ি ফিরে যাওয়া। এ নিশ্চয় কোন মায়ার খেলা।
রাজকুমার জেদ করে বললেন ,সে মায়াই হোক আর যাই হোক। একবার যখন এসে পড়েছি আমি না দেখে যাবনা। তোমরা না যেতে চাও থাক এখানে। আমি না ফিরলে মহারাজাকে খবর দিও।
অগত্যা সবাই সে জঙ্গলের ধারেই তাঁবু পেতে রাজকুমারের অপেক্ষায় রইল। আর রাজকুমার মাঠের উপর দিয়ে এগিয়ে চললেন।
শূন্য মাঠ। দূর্বাঘাসগুলো যেন মখমলের মত বিছিয়ে আছে পুরো মাঠে।
হঠাত্ রাজকুমার চোখ পড়ল একটা ভারি সুন্দর হরিণ ছানার উপর। মাঠের মধ্যে বসে ঘাস খাচ্ছে আর আড় চোখে রাজকুমারকে দেখছে।
রাজকুমার ভাবলেন ,এটাকেই ধরে নেওয়া যাক।
যেইনা রাজকুমার জাল খোলে ছুড়তে যাবেন অমনি হরিণটা দিল ছুট। রাজকুমারও ছুটলেন পিছু পিছু। তেপান্তরের মাঠে যেন বিদ্যুৎ খেলছে। ঐতো ছানাটা এখনও দেখা যাচ্ছে। রাজকুমার আরও দ্রুত ঘোড়া ছুটান।
দিনের আলো ক্রমেই পড়ে আসছে। ধীরে ধীরে অন্ধকারে ছেয়ে আসছে চারদিক। না! অন্ধকারে আর হরিণ ছানাটিকে আর ধরা যাবেনা । ক্লান্ত হয়ে ঘোড়া থামিয়ে নামলেন রাজকুমার। ঘন কালো অন্ধকার। মেঘে বোধহয় চাঁদটা ঢেকে আছে। পানি তৃঞ্চায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। এই মাঠে পানি পাবে কোথায় ?
মেঘের আড়াল থেকে চাঁদটা বেরোতেই রাজকুমার অবাক হয়ে দেখলেন তার সামনে মস্ত একটা দিঘি। রুপোর জলে থই থই করছে সে দিঘি। দ্রুত পায়ে দিঘির পাড়ে এসে আজলা ভরে পানি পান করলেন তিনি।
আহা ! পানি তো নয় যেন শাহী সরবত। ভারি আজব তো এ দিঘি ।
দিঘির পাড়ে মস্ত একটা গাছ। রাজকুমার ভাবলেন রাত করে আর ফিরে লাভ নেই। তারচেয়ে ঐ গাছটাতে চড়ে একটু ঘুমোনো যাক । সকাল হলেই পথ চিনে ফিরে যাবেন।
ঘোড়াটাকে গাছের নিচে ভালো বেধে গাছে চড়ে একটু জুতসই ঢাল দেখে তাতে হেলান দিয়ে রাজকুমার শুয়ে পড়লেন।
সারাদিনের ক্লান্তিতে একটু পড়েই ঘুমিয়ে পড়লেন।
মধ্যরাত! হঠাত্ করে ঘুম ভেঙে গেল রাজকুমারের। মনে হল কারা যেন কথা বলছে। ঠিক যেন দুটো মানুষ।
ভাল করে চারদিকে তাকালেন তিনি। চাঁদের আলোয় ফকফক করছে চারদিক। রাজকুমার দেখলেন দিঘির জলে মাথা ভাসিয়ে আছে দুটো ফুল। একটা লাল অপরটা নীল।
লালফুলটা নীলফুলকে বলছে , জানিস , মিষ্টি পরীর জন্য আমার ভারি খারাপ লাগছে। আজ রাত পেরোলেই পাজি দুমাথা খোক্কসটা মিষ্টি পরীকে খেয়ে ফেলবে।
লালফুলটা বলল , কান্না পেলেই আর কি হবে বল। না পারব আমরা সে পাতালপুরীতে যেতে না পারব পাজি দুমাথা খোক্কসকে মেরে তার পেট থেকে চাবি নিয়ে মিষ্টিপরীকে উদ্ধার করতে।
তখন নীলফুলটা আবার বলল , আহারে মিষ্টিপরী না জানি এখন কি করছে! পরীরাজ্যও শুনেছি দুষ্টপরী আর পাজি ডাইনি মিলে দখল করে নিয়েছে। রাজা আর রানীকে কয়েদ করে রেখেছে ওরা ।
: ওসব না ভেবে এবার ঘুমো নীল । লালফুলটা যেন একটু বিরক্ত হয়েই বলল।
কিন্তু নীলফুলের তাতে গা নেই।
সে আনমনে বলে চলেছে , আহা আমি যদি ফুল না হয়ে কোন রাজপুত্র হতাম তাহলে এক্ষুনি ঐযে চাঁদের ছায়াটা যেখানে ভাসছে তার বরাবর এক ডুবে পৌঁছে যেতাম পাতালপুরে। সেখানে তলোয়ারের এক খোঁচায় পাজি খোক্কসটাকে মেরে মিষ্টিপরীকে উদ্ধার করতাম।
মোহনকুমার গাছে বসে লালফুল আর নীলফুলের সব কথাই শুনলেন।
চাঁদের আলোয় ঝলমল করছে চারদিক। চাঁদের ছায়াটা দিঘির জলে যেখানে দোলনা দুলছিলো সেদিকে একবার তাকালেন। তারপর তরতর করে নেমে এলেন গাছের গা বেয়ে।
ধীরপায়ে নেমে গেলেন দিঘীর জলে। তারপর চাঁদ বরাবর দিলেন এক ডুব।
এদিকে পরীরাজ্যে দুষ্টপরী আর ডাইনির মনে আজ ভারি আনন্দ । পরীরাজ্য তাদের দখলে। ডাইনি বুড়ি তার জাদুতে পরী রাজা আর পরী রানীকে কয়েদ করে রেখেছেন।
গোটা রাজ্যেই তাদের শয়তানি জাদুতে করে রেখেছেন কাবু।
: আজকের রাত! হুহু করে হাসতে হাসতে বলল দুষ্টপরী।
: আজকের রাতটা পেরোলেই মিষ্টিপরী চলে যাবে খোক্কসের পেটে।
: আর তাতে নিশ্চয় ভাইপো খুশি হয়ে আমাকে আরও জাদুবিদ্যা দেবে। আমি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠব।
দুষ্টপরীর সাথে ঠোট মিলিয়ে ফিকফিক করে হেসে উঠল ডাইনি বুড়ি। গমগম করে উঠল গুহাটা।
কিন্তু আনন্দে ব্যস্ত থাকায় জাদুর আয়নার দিকে তাকাবার ফুরসুৎই পেলোনা ডাইনি বুড়ি । তাকালেই দেখতে পেত কি ভয়ঙ্কর বিপদ এগিয়ে আসছে তাদের দিকে।
শূন্য পাতালপুরী। মস্ত পাতালপুরীটা নিঃশব্দকে ভয়ঙ্করভাবে আঁকরে যেন দাড়িয়ে আছে। মোহনকুমার ফটক পেরিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করলেন। সারি সারি ঘর চারদিকে। কে জানে কোন ঘরে আটকে রেখেছে মিষ্টি পরীকে!
আর কোথায়ইবা সে পাঁজি দুমাথা খোক্কস ,যার পেটে পাতালপুরীর সমস্ত ঘরের চাবি ?
ধীরে পায়ে হলঘর ছেড়ে রাজকুমার প্রাসাদের অন্দরে প্রবেশ করলেন।
কুটকুটে অন্ধকার চারদিকে। তলোয়ারটা খুলে সেটা দিয়ে আন্দাজে ভর দিয়ে এগিয়ে চললেন তিনি। হঠাত্ তলোয়ারের খোঁচায় খুট করে যেন কি একটা গড়িয়ে পড়ল মেঝেতে। অমনি পুরো ঘর আলোকিত হয়ে গেল।
ঐতো ,মেঝেতেই আছে জিনিসটা। একটা পাথর ,গা বেয়ে ঠিকরে বেরোচ্ছে আলো। এযে প্রদীপ পাথর।
মোহনকুমার পাথরটা কুড়িয়ে নিলেন। তারপর প্রদীপ পাথরের আলোয় পথ দেখে আবার এগোতে লাগলেন । অন্দর পেরিয়ে যেতেই একটা সিঁড়ি চলে গেছে সোজা মাটি বরাবর। মনে হয় কোন গুপ্ত পথ হবে।
মোহনকুমার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলেন। কিন্তু একি ,এযে মস্ত একটা কক্ষ। চারদিকে মনি মুক্তো ,হিরে জহরত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুরোঘরে। প্রদীপ পাথরের আলোয় ঝলমল করছে হিরেগুলো ।
এখানে নিশ্চয় মিষ্টিপরী নেই। তারচেয়ে অন্যদিকটা খোঁজা যাক । যেইনা মোহনকুমার ফেরার জন্য সিঁড়িতে দুকদম উঠেছেন অমনিই পেছন থেকে ডেকে উঠল ,
: মোহনকুমার !
ভারি মিষ্টি গলা। কেমন যেন রিনরিনে।
: কে ? কে কথা বলে ?
তলোয়ারটা খাপ থেকে খোলে উঁচিয়ে বললেন মোহনকুমার।
: আমি মোহনকুমার! আমার নাম পটপুতুল।
আবারও যেন শূন্য থেকে ভেসে এলো কণ্ঠটা।
: সে বুঝলাম। কিন্তু তোমায় দেখা যাচ্ছেনা কেন ? তুমি কি অদৃশ্য ?
: ঐযে ,মস্ত লাল মুক্তোটা দেখছ ?
পটপুতুল রিনরিনে কণ্ঠে বলতে লাগল ,
: ওটা সরালেই একটা কৌটো পাবে । ঐ কৌটোর মধ্যেই আমি।
সব শুনে মোহনকুমার ধীরপায়ে লাল মুক্তোটার কাছে গেলেন। ওটা সরাতেই নকশা করা একটা কৌটো বেরিয়ে এলো আর কৌটোর মধ্যে পাওয়া গেল দেড় ইঞ্চি পটপুতুলকে ।
ভারি সুন্দর দেখতে পুতুলটা। কিন্তু তা বলে কি হয়েছে ,কেঁদেকেটে যে কালসিটে পড়ে গিয়েছে চোখে।
মোহনকুমার বললেন , পটপুতুল পাতালপুরী এত শূন্য কেন ?
পটপুতুল মুখ ভার করে বলতে লাগল ,
হাজার হাজার প্রজা দাসী হাজার সৈন্যদল হাসিখুশি ,বিনা বাঁশি আনন্দ কল্লোল  পাতালপুরীর রাজা মহান রাজকন্যে দুজন ছিল হেথায় মহাসুখে বড্ড সুজন .. কিন্তু একদিন ..
আকাশ ছেয়ে কালো করে এলো ডাইনি বুড়ি এলোসাথে পাঁজি খোক্কস ভাইপো তারই !
এটুকু বলেই পটপুতুল আবার কাঁদতে শুরু করল।
মোহনকুমার বললেন , সব বুঝেছি ! দাড়াও পটপুতুল একটু পড়েই পাঁজি খোক্কসটাকে উচিত সাঁজা দেব। এ তলোয়ারের এক খোঁচায় ওর মুন্ডুচ্ছেদ করব আমি।
: নানা মোহনকুমার ও ভুল করবেন না। পাঁজি খোক্কসকে এভাবে মারা যাবেনা।
: তাহলে কিভাবে ?
: সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে সোজা নাক বরাবর গেলে দেখবেন মস্ত একটা দিঘি। দিঘীর জল কুচকুচে কালো বলে এই দিঘীর নাম কালোদিঘী। কালো দিঘির জলে নেমে এক ডুবে যেতে হবে দিঘীর তলায়। দেখবেন মস্ত একটা সিন্দুক আছে ওখানে। সিন্দুকের তালায় আপনার হাতের প্রদীপ পাথরটা ছোঁয়ালেই ওটা খোলে যাবে। ওরমধ্যেই পাবেন দুটোর মরারখুলী। একটার রঙ কালো আর অন্যটা সাদা।
খুলীদুটো নিয়ে সোজা দিঘির উপরে চলে উঠে যাবেন।
তারপর কালো খুলিটায় সাদা খুলিটা ছোঁয়ালেই পাঁজি খোক্কসটা মরবে।
: ধন্যবাদ পটপুতুল। এক্ষুনি আমি খোক্কসটাকে মেরে চাবি নিয়ে ফিরছে।
মোহনকুমার সিঁড়ি বেয়ে উঠে নাক বরাবর সোজা চলে এলেন কালো দিঘীর পাড়ে। ধীরে ধীরে নেমে গেলেন কালো কুচকুচে সে জলে। তারপর এক ডুবে দিঘীর তলার সিন্দুকের তালায় প্রদীপ পাথরটা ছোঁয়াতেই খট করে সিন্দুকের তালাটা খোলে গেল।
ঐতো খুলিদুটো দেখে যাচ্ছে।
মোহনকুমার হাত বাড়িয়ে খুলি দুটো ছুঁতেই পুরো পাতালপুরী কাপতে শুরু করল। সাতারকেটে দিঘির পাড়ে আসতেই মোহনকুমার দেখলেন পুরো আকাশ কালো হয়ে গেছে।
ধুপ ধুপ করে হেটে আসছে পাঁজি খোক্কসটা। কি কুৎসিত দেখতে !
বিদঘুটে দুটো মুখের চারটি চোখই আগুনের গোলার মত জ্বলছে।
রাগে যেন চোখ দিয়ে ঠিকরে বেরোচ্ছে আগুন।
মোহনকুমারের হাতে মাথারখুলী দেখেই পাতালপুরী কাঁপিয়ে হুঙ্কার দিয়ে উঠল পাঁজিটা।
বাজখাঁই গলায় চেঁচিয়ে উঠল , কেরে তুই ! সাহসতো কমনা তোর আমার প্রাণখুলিতে হাত দিস! দাড়া এক্ষুনি তোকে মেরে ছাতু বানিয়ে খাচ্ছি !
মোহনকুমার বললেন , তবেরে পাঁজি খোক্কস !এই দেখ তোকে ছাতু খাওয়াচ্ছি।
সাদা খুলিতে কালো খুলিটা ছুঁইয়ে দিলেন তিনি।
আর অমনি পাঁজা খোক্কসটা একেবারে পুড়ে মরে ছাই হয়ে গেল ।
চাবির গোছাটা নিয়ে মোহনকুমার আবার পটপুতুলের কাছে হাজির হলেন।
: এবার বলো পটপুতুল ,মিষ্টিপরী কোথায় ?
তারপর পটপুতুলের দেখানো ঘর থেকে মিষ্টিপরীকে উদ্ধার করে রাজকুমার ,মিষ্টিপরী আর পটপুতুল মেঘের ভেলায় চড়ে সোজা পরীরাজ্যে গিয়ে হাজির।
পাঁজি ডাইনিটাতো তার ভাইপোর সাথেই জ্বলে পুড়ে মরেছিল আর দুষ্টপরীকে জাদুর কারাগারে নিক্ষেপ করা হল।
ধীরে ধীরে পরীরাজ্যে ফিরে এলো হারানো সুখ শান্তি। মিষ্টিপরীর যত্নে ফুলগুলো আবার হয়ে উঠল সজীব।
তারপর এক চাঁদনি হাটের দিনে আবার সব পরী মিলে নেমে এলো সে চাঁদের দিঘীর পাড়ে।
সাথে এলো মোহনকুমার আর পটপুতুলও।
সারারাত্রি জ্যোৎস্না স্নান সেরে, পরীরা যখন ফেরার পথ ধরতে যাবে। তখন মোহনকুমার বললেন , আমার এবার আমার রাজ্যে ফিরতে হবে।
পরীরাজা বললেন , তাই বটে। তোমাকে আর আটকে রাখা চলেনা।
ছলোছলো চোখে ঘোড়ায় চেপে বসলেন মোহনকুমার। গোটাপরীর দলটাও থমথমে হয়ে গেছে।
: দাড়াও মোহনকুমার !
রিনরিনে গলায় বলে উঠল পটপুতুল।
: মিষ্টিপরীর গলায় মালা দিতে কবে আসবে বলে যাও …
টিপ্পনী কেটে বলে পটপুতুল।
লজ্জায় পাখায় মুখ গোঁজে মিষ্টিপরী । লজ্জায় আর কারও দিকে তাকায়না মোহনকুমার।
: আগামী চাঁদনি হাটেই আসছি ..
ঘোড়ায় যেতে যেতে বলে যায় মোহনকুমার।
পরীরদলটা আবার আনন্দে নেচে উঠে।
বিশ্বাস হয়না ?
বেশতো! আগামী ভরা পূর্ণিমার রাতেই মোহনকুমার আর মিষ্টিপরীর বিয়ে। চাইলে তুমিও যোগ দিতে পার। মধ্যরাতে চাঁদটা যখন খিলখিল করে হেসে উঠে ,জ্যোৎস্নার আলোয় বানডাকে চারদিকে ? তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে চাঁদের দিঘির পাড়ে গিয়ে দেখেই এসোনা একবার! তোমাদের সবার নেমতন্ন রইল ।

গল্পের প্রথম অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!