জোলেখার প্রেম-পর্ব ২
জোলেখার প্রেম-পর্ব ১ -পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এক সময় জোলেখা হযরত ইউসুফ (আঃ) এর রূপের পিপাসায় প্রায় উন্মাদ হয়ে গেলেন। প্রাণের গোপন কথা কাউকে বলতেও পারে না সইতেও পারে না। শুধু ভিতরে ভিতরে হযরত ইউসুফ (আঃ) এর রূপের আলোতে জ্বলে পুড়ে মরছেন। অসহ্য যাতনায় একদা আজিজ মেছেরের অনুপস্থিতিতে রাত্রি বেলায় হযরত ইউসুফ (আঃ) এর বিছানায় গিয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন ইউসুফ! তমি আমাকে বাঁচাও। আমি আজ দীর্ঘ সাত বছর যাবত তোমার প্রমাশক্ত হয়ে অসহ্য যাতনায় কাটাচ্ছি। তুমি একবার আমাকে জবান দাও, একবার আমাকে কোলে তুলে নাও। তোমাকে বুকে জড়িয়ে আমার অন্তরের অনির্বাণ শিখা নেভানোর সুযোগ আমাকে দান কর। তুমি যেদিন আমার মহলে এসে পৌঁছেছ, সেদিন থেকে আমি তোমায় লাভ করার নেশায় পাগল হয়ে আছি।
এ যাবত তুমি কিছুটা অবুঝ ছিলে। তাই তোমাকে কোন কথা বলি নি। এখন তুমি পূর্ণ যৌবনে পা দিয়েছ। যৌবনের জ্বালা যে কি ভীষণ তা তোমার অবগত না থাকার কথা নয়। অতএব এয়ার সময় কাটানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তুমি একবার ক্ষণিকের জন্য আমাকে তোমার সুশীতল বক্ষে স্থান করে দাও।
হযরত ইউসুফ (আঃ) জোলেখার আবেদন নিবেদন শুনে বললেন, “জোলেখা, তোমরা আমাকে আশ্রয় দিয়েছ। আজিজ মেছের আমার বহু অর্থের বিনিময়ে খরিদ করে এনে কোনদিন দাস-দাসীর ন্যায় ব্যবহার করেন নি। আমাকে উচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন, সম্মান দিয়েছেন। আমার আনন্দের জন্য বহু রকম আনন্দের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এর প্রতিদান আমি কোন দিন দিতে পারব না। এ ঋণ আমি কোন দিন শোধ করতে পারব বলে মনে হয় না। তিনি আমাকে নিজ সন্তানের ন্যায় প্রতিপালনের কথা তোমাকে বলেছেন। এখন তোমার নিবেদনটি হচ্ছে এর বিপরীমুখী প্রস্তাব। অতএব বিষয়টি নিয়ে আমাকে একটু ভাববার সময় দাও। তোমাকে আমি কিছুদিনের মধ্যে তোমার আবেদনের জবাব দিব।”
একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে কে যেন দরজায় করাঘাত করল। তখন হযরত ইউসুফ (আঃ) ও জোলেখা দাঁড়িয়ে গেলেন। হযরত ইউসুফ (আঃ) দরজা খুললেন, কিন্তু সেখানে কাউকে দেখা গেল না। হযরত ইউসুফ (আঃ) বুঝলেন এটি আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ থেকে তাঁকে রক্ষার একটি ব্যবস্থা মাত্র। জোলেখা সেদিনের মত কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে গেলেন।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী