হযরত মুহাম্মদ ইবনে আসলাম তুসী (রঃ) – শেষ পর্ব

হযরত মুহাম্মদ ইবনে আসলাম তুসী (রঃ) – পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

হযরত ইবনে আসলাম (রঃ) ছিলেন দানশীল ব্যক্তি। টাকা ধার করেও গরীব-দুঃখীদের বিলাতেন। একবার এক ইহুদী মহাজন তাঁর কাছে গিয়ে ধার নেওয়া টাকা পরিশোধ করতে বলেন। কিন্তু তখন তাঁর কাছে কিছুই নেই। তাই তাঁকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন।

তার কিছু আগে তিনি একটি কাঠের কলম কাটছিলেন। নিচে পড়েছিল কিছু টুকরা। তিনি ইহুদীকে দু’টুকরা কাঠ তুলে নিতে বললেন। ইহুদী এর উদ্দেশ্যে বুঝতে না পারলেও কৌতূহল-বশতঃ দুটি টুকরা হাতে নিলেন। আর সেগুলো তাঁর হাতে ছোঁয়া পাওয়ামাত্র ঝকঝকে সোনার টুকরায় পরিণত হয়ে গেল।

মহাজন সবিষ্ময়ে বলে ওঠলেন, যে ধর্মের সাধক ব্যক্তির দোয়ার উসিলায় কাঠ সোনা হয়ে যায়, সে ধর্মের গুণ ও সততা অবিসম্বাদিত। তিনি তৎক্ষণাৎ ইসলাম গ্রহণ করলেন।

হযরত আবু আলী একজন মশহুর আলেম। তিনি একবার নিশাপুরের মসজিদে এলেন ভাষণ দিতে। ঘটনাক্রমে সেখানে সেদিন উপস্থিত রয়েছেন মক্কা ও মদীনার ইমাম। কথা প্রসঙ্গে তিনি আবু আলীকে জিজ্ঞেস করলেন, আলেমগণ নবীগণের প্রতিনিধি। কিন্তু কোন শ্রেণীর আলেমকে নবীগণের প্রতিনিধি বলা যায়? আবু আলী বললেন, যাদের কথা বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে আমরা নেই।

মসজিদের এক কোণে বসে ছিলেন হযরত মুহাম্মদ ইবনে আসলাম (রঃ)। তাঁকে দেখিয়ে তিনি বললেন, এই শ্রেণীর লোকগণই তাঁদের মধ্যে গণ্য।

হযরত মুহাম্মদ ইবনে আসলাম (রঃ) নিশাপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর এক প্রতিবেশী স্বপ্নে দেখলেন, হযরত আসলাম (রঃ) বলেছেন, আজ আমি যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পেলাম। ঘুম থেকে উঠে তিনি রওনা দিলেন হযরতের বাড়ীর দিকে।

সেখানে পৌঁছে দেখেন, তাঁর কাফন-দাফনের আয়োজন চলছে। তিনি যে মোটা কম্বলখানা পরতেন, তা দিয়েই তাঁর কাফনের কাজ সমাধা হয়। যখন তাঁর মরদেহ গোরস্থানের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন দুজন মহিলার কথোপকথন শোনা গেল। তারা পরস্পর বলাবলি করছে, নিজের স্বভাব-বৈশিষ্ট্য নিয়েই তিনি দুনিয়া থেকে চলে গেলেন। দুনিয়ার কোন প্রতারণায় কোনদিন প্রতারিত হননি।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত মুহাম্মদ ইবনে আসলাম তুসী (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।