হযরত হাসান বসরী (রঃ) – পর্ব ১৭
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ১৬ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
সাহাবী ও সাধারণ মানুষঃ
হযরত হাসান (রঃ) তাঁর ভক্তদের বললেন, তোমরা সবাই রাসূলুল্লাহর সাহাবীদের মতো। স্বভাবতই তারা খুশী। অবশ্যই এটি মর্যাদার ব্যাপার। কিন্তু পরে তিনি বিশ্লেষণ করে বললেন, সে সামঞ্জস্য শুধু বহিরাঙ্গের। অন্তরঙ্গের নয়। তোমরা যদি তাদের দেখতে, তাহলে তাদের পাগল বলে মনে করতেন না। তারা ছিলেন সুদক্ষ অশ্বারোহী, বাতাসের বেগে, পাখীর বেগে তারা ছুটে চলেছেন জান্নাতের দিকে। আর আমরা? আমরা চলেছি দুর্বল ও আহত গাধার পিঠে চড়ে। ধীর গতিতে।
এক আরব বেদুঈনকে তিনি ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে শোনান। তিনি বলেন, ধৈর্য দু’রকম। ১. দুঃখে-কষ্টে পতিত হয়ে ধৈর্য ধারণ করা। ২. আল্লাহ্র নিষিদ্ধ বস্তু বা বিষয় থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রাখা। বেদুঈন বলল, আপনার মতো দরবেশ আমি আর কখনও দেখিনি। কেউ এমন আছে বলে শুনিওনি।
তুমি আমাকে অনেক ওপরে তুলে দিলে, হাসান (রঃ) বললেন। আমার ধৈর্য ধারণ অধৈর্য্যেরই নামান্তর। আর সাধকত্বও আমার লালসার ফল।
কথাটা বুঝিয়ে বলুন হুযুর, হাসান (রঃ) বললেন, বিপদের সময় আমি যে ধৈর্যধারণ করি, তার কারণ আমি জাহান্নামের ভয়ে সব সময় অস্থির অধৈর্য্য হয়ে থাকি। তাহলে বুঝতে পারছ, আমার ধৈর্য আসলে অধৈর্যেরই অন্য রূপ।
আর, আমি যে দরবেশী জীবন যাপন করছি, তার কারণ আমি জান্নাতলোভী জান্নাতের জন্য লালায়িত। কিন্তু আল্লাহ্র প্রেমে যে ধৈর্যধারণ করে, প্রকৃতপক্ষে সে-ই ধৈর্যশীল। শুধু আল্লাহ্র জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করে সে-ই প্রকৃত ত্যাগী। আর জান্নাতে যাবার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার বা সংযম রক্ষা করে, তাকে প্রকৃত ত্যাগী বা সহনশীল বলা যাবে না।
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ১৮ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া