হযরত হাসান বসরী (রঃ) – পর্ব ১৩
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ১২ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
দৃশ্য দেখে শামাউন অবাক। তার মনে এল গভীর অনুশোচনা। তিনি বললেন, ভাই হাসান! সত্তর-আশি বছর ধরে চরম অন্যায় করে এসেছি। এখন কি তার প্রায়ঃশ্চিত্তের অবকাশ আছে? থাকলে মুক্তির উপায় বলে দাও।
হযরত বললেন, নিশ্চয় উপায় আছে। তুমি ইসলামে দীক্ষা নাও। তারপর পবিত্র হৃদয়ে আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা কর। তিনি তোমাকে মুক্তি দেবেন।
শামাউন বললেন, মৃত্যুর পর শাস্তির পরিবর্তে আল্লাহ্ আমাকে মুক্তি দেবেন, এই মর্মে যদি তুমি আমাকে একখানি পত্র লিখে দাও, তাহলে আমি মুসলমান হতে পারি।
হযরত হাসান (রঃ) তাঁর কথামতো একখানি কাগজে লেখে শামাউনের হাতে দিলেন। শামাউন আবার কাগজখানিতে উপস্থিত ব্যক্তিদের সই করে নিয়ে তা আবার হযরত হাসান (রঃ)-কে ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, মৃত্যুর পর দাফন করার সময় পত্রখানা আমার সঙ্গে দিও। আর তুমি নিজের হাতে আমাকে গোসল করিয়ে কবরে শুইয়ে দিও। অতঃপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন। আর অনতিকাল পরেই মারা গেলেন।
তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সব কাজ শেষ হল। শামাউনের দাফন কর্ম সম্পন্ন করে হাসান (রঃ) মনে মনে নিজের কথাই ভাবতে লাগলেন। আগেই জেনেছি, তিনি নিজেকে পাপী বলে মনে করতেন। এখন তিনি ভাবতে শুরু করলেন, অন্যের মুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আল্লাহ্র অধিকারে হস্তক্ষেপ করলাম।
এখন আমার মতো পাপীর মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেয় কে। সারারাত তিনি আল্লাহ্র দরবারে হাত উঠিয়ে রইলেন। সে এক অবিরাম, অন্তহীন প্রার্থনা। শেষ রাতে স্বপ্ন দেখলেন, শামাউন মাথায় ঝকঝকে মুকুট, সুন্দর পোশাক পরে জান্নাতের উদ্যানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, কী খবর শামাউন ভাই? তোমার অবস্থা কি?
শামাউনের প্রফুল্ল জবাবঃ যেভাবে আমাকে দেখতে পাচ্ছ, আমি সে রকমেই আছি। আল্লাহ্র রহমতে আমার কোন অসুবিধা হয়নি। আল্লাহ্র দীদারও লাভ করেছি। তোমার পত্রখানায় খুব কাজ দিয়েছে হাসান ভাই। নাও-বলে পত্রখানা তিনি হাসান (রঃ)-কে ফিরিয়ে দিলেন।
হযরত হাসান বসরী (রঃ) – ১৪ তম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া