হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর কাবাঘর নির্মাণ ও কতিপয় মো’যেযা –প্রথম পর্ব
হযরত আদম (আঃ) ও ফেরেস্তাদের নির্মিত কাবা ঘর এক সময় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। তাঁর পর দীর্ঘ দিন যাবত কাবা ঘরের স্থান শুন্য থাকে। এমন কি তাঁর সঠিক স্থান পর্যন্ত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) – এর সময় তাঁর শেষ বয়সে আল্লাহ তা’য়ালা তাকে কাবাঘর পূনঃনির্মাণের আদেশ দেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এ আদেশ পেয়ে বিব্রত বোধ করেন। কারণ কাবা ঘরের স্থান নির্ণয় ও উহার নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ ভীষণ সমস্যা ছিল। তাই তিনি এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হলেন না। তিনি আল্লাহর দরবারে আরজ করে বললেন, আমি কিভাবে ও কোথায় কাবাঘর নির্মাণ করব এর সঠিক দিক নির্দেশনা দাও এবং এ ব্যাপারে তুমি আমাকে সাযাহ্য কর, না হয় এ মরু প্রান্তরে একার পক্ষে এ দায়িত্ব পালন করা বড়ই কঠিন হবে।
আল্লাহ তা’য়ালা হযরত জিব্রাইল আমিনকে পাঠিয়ে জানালেন কাবাঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’য়ালা সক্রিয় ভাবে তোমার সাহায্য করবেন। তুমি নিশ্চন্ত মনে শক্তভাবে নিয়ত কর এবং সম্মুখ দিকে অগ্রসর হও। যেখানে তুমি দেখবে এক খণ্ড কালো মেঘ ছায়া করে আছে, সেখানে তুমি ছায়া পরিমাণ স্থানে চিহ্ন দাও। ওখানেই কাবা ঘরের পত্তন হবে। হযরত জিব্রাইল (আঃ) হযরত ইব্রাহীম (আঃ) – এর সঙ্গে থেকে কাবাঘরের স্থান নির্ণয় করলেন। অতঃপর উহা তৈরির ক্ষেত্রে অন্যান্য সামগ্রী সম্বদ্ধে হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, মক্কা এলাকার পাঁচটি পাহাড় থেকে পাথর সংগ্রহ করতে হবে। লেবানন, জেরা, আবু কোরায়েস, সাফা ও মারওয়া এই পাঁচটি পাহাড়।
পাথর ও অন্যান্য সামগ্রী সম্বদ্ধে হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, আমি সমস্ত কিছু সংগ্রহ করে দেব। এ বিষয় আপনার কিছু ভাবতে হবে না। আপনি শুধু হযরত ইসমাইল (আঃ) – কে নিয়ে পাথরের উপর পাথর বসিয়ে উপরের দিকে উঠবেন। প্রয়োজন বোধে অন্যান্য কঠিন কাজে আমি আপনাকে সাহায্য করব। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) জিব্রাইলের কথা শুনে নিশ্চিন্ত হলেন এবং কাবাঘর নির্মাণের উদ্যেগ নিলেন।
প্রথমত, তিনি নির্দিষ্ট স্থানের চতুর্দিকে মাটি খনন করে পাথর বসাতে আরম্ভ করেন। কথিত আছে প্রতিখানা পাথর বসানোর পূর্বে দুই রাকাত করে নফল নামায আদায় করে নিতেন। এভাবে তিনি কাবাঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে পাথর বসাতে আরম্ভ করেন। হযরত ইসমাইল (আঃ) সর্বসময় পিতার কাজে সহায়তা করলেন। কাবাগৃহের ভিত সমাধা অন্তে যখন মেহেরাবের কাজ আরম্ভ করলেন তখন যে পাথর খানি বসালেন তাতে হযরত মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – এর নাম খোদিত ছিল। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) জিব্রাইল (আঃ) – এর ইঙ্গিতক্রমে এ পাথরগুলো যথা নিয়মে বসিয়ে দিলেন।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর কাবাঘর নির্মাণ ও কতিপয় মো’যেযা – দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন