হযরত সুফিয়ান সাওরী (রঃ)- পর্ব ৫

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রঃ)- পর্ব ৪ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

উপাসকগণ যদি সুলতান-বাদশার বা আমীর-ওমরাদের সংস্রবে থাকেন, তবে অচিরেই তাঁরা রিয়াকার হয়ে পড়েন।  তিনি বলেন, ‘যাদেহ’ তাঁকে বলে’ যে এবাদত করে অথচ তা নিয়ে কোন গৌরব করে না বা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে তা প্রচারও করে না। আর যেহাদ এর প্রকৃত অর্থ হল মামুলি খাদ্য গ্রহণ করা। মোটা বস্ত্র পরিধান করা, নির্জনবাসীগণ পরকালের মুক্তি অর্জন করবেন। 

নির্জনবাসে রুজি মিলবে কি করে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যাদের অন্তরে আল্লাহ-ভীতি বর্তমান, তাঁদের রুজি কোথা থেকে আসে, তা তাঁরা টেরও পান না। তিনি বলেন, দুনিয়াদারদের পক্ষে নিদ্রা জাগ্রত অবস্থা অপেক্ষা উত্তম।  কারণ, তাঁরা ঘুমন্ত অবস্থায় দুনিয়ার চিন্তা-ভাবনা থেকে মুক্ত থাকেন। তিনি আরও বলেন, যাহেদের সঙ্গে সংসর্গ স্থাপনকারী যাহেদ অপেক্ষা উত্তম। তাঁর মতে পাঁচ ধরনের মানুষ সবার প্রিয়। যেমনঃ (১) ত্যাগী বিদ্বান, (২) সাধক সুফী, (৩) বিনয়ী ধনী (৪) কৃতজ্ঞ দরবেশ ও (৫) ভদ্র সুন্নী।

তিনি বলেন, যিনি বিশ্বাসী, তিনি শত দুঃখ-কষ্টের অকৃতজ্ঞ হয় না। তিনি আরও বলেন, সে-ই আমার প্রিয় বন্ধু যে আমাকে কষ্ট দেয় ও আমার ধন-সম্পদ আত্মাসাত করে। ইয়াকীন বলতে তিনি বুঝতেন আওয়াজকে। যার মধ্যে ইয়াকীন থাকে তিনি মারেফত হাসিল করতে পারেন। আর এর অর্থ হল এ ও-হতে পারে, যে, যার মধ্যে ইয়াকীন রয়েছে তিনি যেকোন বিপদ-বিপর্যয়কে আল্লাহর ইচ্ছা বলে গণ্য করেন। 

অতিরিক্ত গোশত ভক্ষণকারী আল্লাহর শত্রু’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর এ কথার মর্ম কি?

তাঁর উত্তরঃ এখানে গোশত ভক্ষণ করার অর্থ পরনিন্দা-পরচর্চা করা। কেননা, পরনিন্দা বা গীবত হচ্ছে মৃত দেহের গোশত ভক্ষণ করা। গীবিতকারীকে আল্লাহ শত্রু  বলেই জানেন।  হযরত সুফিয়ান (রঃ) হাতেম ইবনে আসাম (রঃ)-কে চারটি বিষয় সম্বন্ধে বলেন, সেগুলো হল। (১) মানুষের প্রতি অপবাদ আল্লাহর নির্দেশের প্রতি উদাসীন করে দেয়।  (২) কোন মুমিন লোকের উন্নতি দেখে হিংসা পোষন করা অকৃতজ্ঞতাঁর লক্ষন। (৩) নিষিদ্ধ বস্তু উপার্জন করা ও (৪) আল্লাহর রহমতের প্রতি নৈরাশ্য করা কুফরীর লক্ষণ। 

তিনি তাঁর সফর- উদ্যত শিষ্যদের চমৎকার একটি কথা বলতেন। বলতেন, তোমারা কোথাও যদি মৃত্যু দেখতে পাও তবে তা আমার জন্য কিনে আনবে। কেননা, মৃত্যু তাঁর কাছে একটি মহার্ঘ্য বস্তু। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে তিনি বলতে থাকেন, এতদিন তো মনের ঝোঁকে মৃত্যু চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন বুঝছি মৃত্যু খুবই কঠিন বস্তু। পৃথিবীতে লাঠির উপর ভর দিয়ে চলা অর্থাৎ (বেঁচে থাকা)। বেশ কষ্টকর। 

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রঃ)- পর্ব ৬ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।