হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ৩
হযরত ওয়ায়েস কারনী (রঃ)-পর্ব ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নবীজীর কথার সঙ্গে হুবুহু মিল। সেই সাদা দাগ। অথচ শ্বেতী নয়। হযরত ওমর (রাঃ) হাতে চুমু দিলেন। তারপর তাঁর হাতে তুলে দিলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পবিত্র খেরকা। আর তিনি যেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উম্মতদের জন্য দোয়া করেন, সে কথাও তাঁর কাছে নিবেদন করা হল।
কিন্তু ওয়ায়েস (র:) বললেন, আপনারা ভাল করে খোঁজ নিন। সম্ভবতঃ তিনি অন্য লোক হবেন। খুব ভালভাবেই খোঁজ নিয়েছি, ওমরা (রাঃ) বললেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যেসব চিহ্নের কথা বলেছেন, তা মিলে গেছে। আমরা সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে, আপনিই তাঁর পরম-প্রিয় ওয়ায়েস।
এতক্ষণে ওয়ায়েস (রঃ) আগন্তুকদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। পরিচয় পাওয়ার পর পুলকিত চিত্তে তিনি তাঁদের সালাম জানালেন। হাতে চুমু দিলেন। বললেন, আপনাদের মতো মহা সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ এ গরীবের কাছে তশরীফ এনেছেন, এ আমার পরম সৌভাগ্য। আরও বললেন, নবীজীর গুনাহগার উম্মতের মুক্তির জন্য দোয়া করার যোগ্যতা আপনাদেরই বেশী রয়েছে।
ওমর (রাঃ) বললেন, আমরা তা করছি। কিন্তু আপনিও রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নির্দেশ পালন করুন। হযরতের পবিত্র খেরকাটি হাতে নিয়ে ওয়ায়েস কারণী সামান্য তফাতে গিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানালেন, প্রভু গো! রাসূলুল্লাহর উম্মতদের গুনাহ মাফ না করলে আমি এ খেরকা পারব না। নবী মুস্তফা (সাঃ) হযরত ওমর ও হযরত আলীর প্রতি যে দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন, তাঁরা তা পালন করেছেন। এখন আপনার কাজ বাকী। আপনি আপনার প্রিয় বন্ধুর উম্মতের পাপ মাফ করে দিন।
দৈববাণী হল, হে ওয়ায়েস! তোমার দোয়ার কারণে কিছু সংখ্যক উম্মতকে মাফ করা হল। কিন্তু তিনি শুনলেন না। বললেন, যতক্ষণ না সমস্ত উম্মতকে মার্জনা করা হয়, ততক্ষণ আমি নবীজীর দেওয়া খেরকা আমি পরবো না।
ইলহাম এল-তোমার দোয়ার জন্য কয়েক হাজার মানুষকে মার্জনা করা হবে।
হযরত ওয়ায়েস (রঃ) যখন এভাবে সেজদাবনত অবস্থায় প্রতিপালকের দরবারে তাঁর আবেদন রাখছেন, তখন সেখানে ওমর (রাঃ) এসে হাজির হলেন। তাঁদের দেখে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন, আপনারা কেন আমার কাছে এলেন? আমি যে রাসূলের উম্মতদের মুক্তির জন্য চেষ্টা করছিলাম। যে পর্যন্ত না তাদের সবাইকে মাফ করাতে না পারছি, সে পর্যন্ত আমি প্রিয় নবীর খেরকা গায়ে তুলবো না।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া