পিতার হাতে পুত্রের কুরবানী-১ম পর্ব
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) একদা স্বপ্নে দেখালেন, কে যেন তাকে বলছে, হে আল্লাহর দোস্ত! আপনি আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করুন। নবীর প্রতি স্বপ্নাদেশ অহির সমতুল্য। তাই হযরত ইব্রাহীম (আঃ) স্বপ্নে কুরবানীর আদেশ পেয়ে অস্থির হয়ে উঠলেন। অনেক চিন্তা ভাবনা করে তিনি দুম্বা উট কুরবানী করে দিলেন। দ্বিতীয় রাতে তিনি আবার স্বপ্ন দেখলেন, একজনে তাকে বলছেন, নবী আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করুন।
এবারেও নবী দুশ উট কিরবানী করলেন। অতঃপর তৃতীয় রাতেও তিনি একই স্বপ্ন দেখলেন। তৃতীয় বারেও তিনি দুশ উট কুরবানী করলেন। চতুর্থ রাতে তিনি স্বপ্ন দেখলেন কে যেন তাকে বলছেন, হে আল্লাহর দোস্ত! আপনি আল্লাহর রাস্তায় আপনার প্রিয় সন্তানকে কুরবানী করুন। এবারের স্বপ্ন দেখে তিনি হতবুদ্ধি হয়ে গেলেন। তার সন্তান বলতে হযরত ইসমাইল (আঃ) ব্যাতীত আর কেউ নেই। সে সন্তান তার নির্বাসিত মাতার নিকট থাকে। নবী তাদের সাথে তেমন সম্পর্ক পর্যন্ত রাখেন না। এমতাবস্থায় এহেন এক চরম প্রত্যাদেশ কিভাবে তিনি কার্যকরী করবেন এ ভেবে অস্থির হলেন। ভোরবেলা নবী সায়েরা বিবির নিকট তার সপ্নের কথা আলোচনা করলেন। সায়েরা নবীকে অতি সত্বর এ প্রত্যাদেশ কার্যকারী করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করলেন।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে মক্কার পথে রওয়ানা করলেন। সঙ্গে তিনি একখানা ছুরি ও কিছু রশি নিলেন। মক্কা পৌঁছে তিনি হাজেরার আস্তানায় গিয়ে বসলেন। সেখানে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে হাজেরাকে বললেন, তুমি ইসমাইল (আঃ) কে ভালো পোষাক পরিয়ে আতর গোলাপ লাগিয়ে উত্তম রূপে সাজিয়ে দাও। ইসমাইল (আঃ) – কে আমি এক দাওয়াতে যাব। সম্পর্ক বিহীন পিতা-পুত্রের মাঝে নতুন করে গভীর সম্পর্ক হতে যাচ্ছে দেখে হাজেরা খুব খুশি হলেন এবং ইসমাইল (আঃ) – কে উত্তমরূপে সাজিয়ে দিলেন। হযরত ইসমাইল (আঃ) এর বয়স ছিল তখন নয় বছর। দেখতে ফুটফুটে সুন্দর।
সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী