নামারকের যুদ্ধ
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ)- এর খেলাফত যুগে মুসলিম সৈন্য বাহিনী হীরা রাজ্য নামে পরিচিত সাসানীয়া সাম্রাজ্যের অংশটি জয় করলেন। পারস্যবাসীগণ হীরা রাজ্য হারিয়ে পাগল হয়ে যায়। তাঁরা মুসলমানদের হাত হতে এ রাজ্য উদ্ধারের জন্য পাগল হয়ে উঠে।
পারস্য সম্রাট আর বিখ্যাত সেনাপতি রুস্তমকে এক বিরাট সৈন্যবাহিনীসহ হীরা রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য পাঠিয়ে দিলেন। এরই মধ্যে খালিদ বিন ওয়ালিদ সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হয়ে গিয়েছিলেন। এদিকে মুসান্না (রাঃ) পারস্য সীমান্তে একাকী অবস্থান করেছিলেন।
পারস্যবাসীর তুমুল আক্রমনের জন্য নির্দেশ দিয়ে যান। হযরত ওমর (রাঃ) খলিফার আসনে বসে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর মৃত্যুকালীন আদেশ পালন করার জন্য মনোযোগ দেন। চতুর্দিকে হতে তাঁর কাছে বয়াত গ্রহণের জন্য যেসব লোক আসছে তাঁদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন, তাঁর নির্দেশ প্রথমে কেউ কর্ণপাত করল না।
তারপর তিনি এবং মুন্না (রাঃ) উত্তেজনাপূর্ণ এমন ভাষণ দিলেন যে, শ্রোতাদের মাঝখান হতে সাকীফ গোত্রের বিখ্যাত সর্দার আবু ওবায়দা (রাঃ) এর সাহসিকতায় উপস্থিত লোকজনের মধ্যে প্রচুর সাড়া পড়ে গেল। চতুর্দিক হতে সকলেই বলে উঠল যে, আমরাও প্রস্তুত আছি। হযরত ওমর (রাঃ) তখন মদিনা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল হতে একটি বাহিনী গঠন করে আবু ওবায়দা (রাঃ) কে এ বাহিনীর সেনাপতি নিযুক্ত করলেন।
আবু ওবায়দা (রাঃ) সে সৈন্যবাহিনী দল নিয়ে ইরাকের দিকে এগিয়ে আসলেন। তাঁদের সৈন্যবাহিনীর দল নিয়ে হীরা রাজ্যে পৌঁছলেন। পারস্যবাসীগণ এ বিরাট প্রস্তুতির খবর শুনে আরও পিছিয়ে গিয়ে খাকান নামক স্থানে শিবির স্থাপন করলেন।
এ সুযোগে আবু ওবায়দা (রাঃ) তাঁর সৈন্যবাহিনীকে আরও ভাল ভাবে তৈরি করে আক্রমণের জন্য শত্রুদের দিকে এগিয়ে গেলেন। ৬৩৪ ঈসায়ী সনের সেপ্টম্বর মাসে নামারক নামক স্থানে যুদ্ধ হলে এ যুদ্ধেও পারসিকগণ পরাজিত হল। এরপর মুসলমানগণ পুনারায় হীরা প্রদেশ জয় করলেন।