স্বামীকে উপদেশ দান-পর্ব ২

স্বামীকে উপদেশ দান-পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

এতদিন যে সকল কর্মচারীগণ তাকে প্রকৃতই খোদা মান্য করে তার নির্দেশাবলী অবনত মস্তকে পালন করেছে এখন তারা অনেকেই যেন তার নির্দেশ পালন করতে নানার রকমের প্রশ্ন তুলছেন। এটা মুছারই প্ররোচনা ছাড়া আর কিছু নয়। শেষ পর্যন্ত না জানি মুছাই তার ধ্বংস ডেকে আনে! মুছাকে তার দস্তুর মত ভয় হচ্ছে।

অথচ মুশকিল এই যে, এ কথা কারও নিকট প্রকাশ করা চলে না। তা হলে লোকে ভাববেই বা কি, নিজেকে স্বয়ং আল্লাহ বলে প্রচার করে শেষে একটি যুবকের ভয়ে এত সন্ত্রস্ত? তে সে আল্লাহর শক্তি কতটুকু? ইতিমধ্যে মুছা আঃ এর আচরণে অতিষ্ট হয়ে কয়েকদিনই সে মুছার জীবন বিনাশ করতে উদ্যোগী হয়েছিল; কিন্তু আছিয়া তাকে বারণ করে মুছার আঃ এর জীবন রক্ষা করেছিলেন ।

বরং আছিয়া অপেক্ষাও তার নিজের কতিপয় সভাসদ এখন মুছার আঃ এর অনুকূলে বেশী কথা বলে। মুছার বিষয় কিছু বললেই তারা অসন্তোষ হয়ে উঠে।

ওদের প্রতি কোন প্রতিশোধ নেয়াও সম্ভব নয়। যেহেতু তাতে বিদ্রোহের আগুন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ফেরাউনের মনে এ সমস্ত অশুভ চিন্তাগুলো জট পাকিয়ে তাকে অতিশয় উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল এবং তার মনের শান্তি লুপ্ত হতে চলছিল। তাই বাহিরের কর্ম-কোলাহল পরিবেশ হতে সে অন্তঃপুরে বিবি আছিয়ার নিরিবিলি পরিবেশকে তুলনামূলক উত্তম বলে মনে করে তাঁর নিকটি পূর্বাপেক্ষা একটু বেশী যাতায়াত করতো।

আজ সে যেই মুহূর্তে আছিয়ার কক্ষে প্রবেশ করল সঙ্গে সঙ্গে আছিয়ার মুখে উল্লেখিত বাক্যটি শ্রবণ করে তার হৃদয় আগুনের মত জ্বলে উঠল। সে বলল, আছিয়া! তুমি এখনও এসব কি বলছ? তোমার স্পর্দ্ধায় বিষ্মিত হতে হয়। যে সময় মিশরের প্রতিটি মানুষ আমাকে আল্লাহ বলে স্বীকার করে আমার মূর্তি প্রতি গৃহে গৃহে প্রতিষ্ঠিত করতঃ আমাকে আল্লাহ রূপে পূজা করছে, তখন তুমি আমার নিজের বেগম হয়ে আমাকে এরূপ অবজ্ঞা করতঃ কল্পিত খোদার নাম উচ্চারণ করছ।

এটা অপেক্ষা অপরাধ আর নেই। তোমাকে আবার আমি সাবধান করছি, ভবিষ্যতে যদি কোন দিন এ নাম তোমার মুখে শুনা যায় তবে তোমাকে যে কঠোর শাস্তি গ্রহণ করতে হবে তা কোন দিন তুমি ভাবতেও পারবা না।

আছিয়াকে এরূপ ধমক দেওয়ার সময় তার চক্ষুদ্বয় আরক্ত হয়ে উঠল এবং ক্রোধে সর্বাঙ্গ থর থর করে কাঁপতে লাগলো।  

স্বামীকে উপদেশ দান-পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।