আছিয়ার প্রার্থনা-পর্ব ১
ফেরাউনের চরম খোদাদ্রোহিতা এবং জঘন্যতম কার্যকলাপ দেখা সত্ত্বেও আছিয়া তার সম্পর্কে হতাশ হলেন না। তাঁর হৃদয়ে এখনও বাসনা এই যে, আল্লাহ অসীম কৃপাময়। তিনি ইচ্ছা করলে সকল কিছুই করতে পারেন। তবে তাঁর স্বামীকেই বা তিনি হেদায়েত করবেন না কেন?
এ আকাঙ্খায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে তিনি গভীর নিশিথে আল্লাহর কাছে মুনাজাত করেন, এ পরম করূণাময়! তুমি আমার স্বামীকে সুমতি প্রদান কর! হে অন্তর্যামী প্রভু! তুমি আমার স্বামীর কল্যাণ সাধন করে আমার তাপিত হৃদয় শীতল কর। ওহে বিশ্বনিয়ন্তা মহাসম্রাট! তুমি আমাকে অবলা রমণী করে দুনিয়ায় পাঠায়েছ। তুমি উত্তমরূপে জান, তোমার পরেই আমার হৃদয়ে আমার স্বামীর আসন।
স্বামীকে মন-প্রাণ দিয়ে আমি ভক্তি শ্রদ্ধা করি, অন্তর দিয়ে ভালবাসি। এটাই নারীর ধর্ম প্রভু! কিন্তু আমার হৃদয় জুড়িয়ে দুঃখের বন্যা বইছে এজন্য যে, আমার স্বামীর ভ্রান্তি ঘটে সে তোমারই সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছে। সে তোমার এ সৃষ্টি জগতের ক্ষুদ্রানুক্ষুদ্র একটি জীব; অথচ সে নিজেকেই নিজে স্রষ্ঠা বলে ঘোষণা করে নিজের ধংসের সঙ্গে রাজ্যের অসংখ্য লোকের ধবংস ডেকে এনেছে।
এজন্য তোমার দরবারে আমি অতিশয় লজ্জিত। তোমার নিকট কোন কিছু যে প্রার্থনা করব এমনও সাহস নেই। সকলই তুমি দেখছ। তবু কি করব, রমণী হয়ে স্বামীর অকল্যাণ দেখা কেনো রূপেই যে সম্ভব নয়; তাই সমস্ত লজ্জা সঙ্কোচ ঝেড়ে ফেলে তোমার পবিত্র দরবারে আমি হাত উঠায়েছি প্রভু! তুমি আমার অবুঝ স্বামীকে জ্ঞানের আলোকে বিতরণ কর। তার ভ্রমান্ধতা মোচন করে তাকে পাপের পঙ্কিল গর্ত হতে উদ্ধার করে তোল।
হে রহমানুর রাহীম-করূণার আধার! তোমার এ নামটির গুণে আমার স্বামীর প্রতি অনুগ্রহ কর। তার হৃদয় মধ্যে ধর্মের আলোক জ্বালিয়ে দিয়ে তাকে সরল সঠিক পথ চিনিয়ে নিবার আউফীক দাও।