আছিয়ার মনোভাব-শেষ পর্ব

আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

মানুষ মহাজ্ঞান লাভ করলেও ভবিষ্যতের গর্ভে কি নিহিত তা কিছুই জানে না। এমত ক্ষেত্রে কোন জ্ঞাণী মানুষের উচিত নয় কোনরূপে আল্লাহর শক্তির সমকক্ষতা করা। জাঁহাপানা! আপনার জ্ঞানের অভাব নেই। তবে আপনার কোনরূপ অমঙ্গল আশংকা দেখা দিলে তা আপনাকে অবহিত করা আমার কর্তব্য বলে মনে করি।

আর তজ্জন্যই আপনার কাছে আমার ই করূণ মিনতি, আপনি একবার অন্ততঃ ধীর স্থির ভাবে চিন্তা করে দেখুন, আপনার জন্য খোদাই দাবী করা ঠিক হয়েছে কি না? আমার কেবলই ভয় হচ্ছে আপনার এ অসঙ্গত খোদাই দাবীর ফলে না জানি স্বয়ং স্রষ্টা আপনার কোণ অমঙ্গল ঘটায়ে বসেন।

এ আশংকায় আমার মনের শান্তি ও সুখ সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়েছে। সুতরাং আমি বার বার আপনার কাছে এ ভিজ্ঞা জানাই, হে প্রিয় স্বামী! আপনি আপনার ঐ অলক্ষুণে দাবী প্রত্যাহার করতঃ আমার হৃদয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনুন।

আছিয়ার কথা শ্রবণ করে ফেরাউনের মনে করূণার উদ্রেক হল না বরং সে বিষ্ময় বিস্ফরিত চোখে আছিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, আছিয়া! লোকে প্রবাদ বাক্য বলে “স্বামী যত বড়ই হোক না কেন তার পত্নীর কাছে তত বড় নয়”।

কথাটি পরম সত্য তা আজ আমার নিকট পরিষ্কার হয়ে গেল। সারা মিশর রাজ্যের কোটি কোটি লোক তোমার স্বামীকে স্বয়ং আল্লাহ বলে মেনে নিয়েছে অথচ তুমি কিনা এখনও এক অদৃশ্য খোদার ভাবনা নিয়ে দিন কাটাচ্ছ। আর তার দ্বারা আমার কোন অমঙ্গল সাধিত হবে একথা তুমি না বলে অন্য কেউ বললে এতক্ষণে তার জীবনের খেলা সাঙ্গ করে দিতাম।

কিন্তু তোমার ব্যাপারে আমি কিছুটা দুর্বল, তাই রক্ষা পেয়ে গেলে। বলতে বলতে ফেরাউন যেন ক্রোধান্বিত হয়ে উঠছিল। সুতরাং সে আরক্ত বচনে আবার আছিয়াকে লক্ষ্য করে বলল, তুমি অবলা রমণী বলে তোমার এ প্রথম অপরাধ আমি ক্ষমা করলাম; কিন্তু সাবধান করছি, আর কখনও তোমার মুখে যেন এরূপ কথা না শুনি।

বরং তোমার স্বামীর নির্দেশ এই যে, সকলে যেরূপ তাকে আল্লাহ বলে মানছে, তুমিও এখন হতে নির্বিবাদে তাকে স্বীয় উপাস্য বলে স্বীকার করে নাও। জানিও এতেই তোমার কল্যাণ নিহিত আছে। নতুবা নিজের অমঙ্গল ডেকে আনবে।

ফেরাউনের এ স্পর্দ্ধিত ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ বাক্য শুনে আছিয়া কোন প্রত্যুত্তরে করলেন না; কিন্তু দর দর বেগে তাঁর চক্ষু হতে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল।

আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।