কাবুসের চরম অধঃপতন- পর্ব ১
হামান নামক একটি যুবক এ লম্পটদের সরদার ছিল। সে তার এ দলটির মনে সর্বপ্রকার সাহস এবং উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, তোমরা কেউই নিরাশ হইয়োনা। একটু অপেক্ষা কর, দেখবে কাবুস আবার আমাদের দলে ভেড়ে গিয়েছে। এখন তোমরা কেবল একটুখানি ধৈর্য ধরে আমার পরামর্শ মত কাজ চালিয়ে যাও। দেখবে অচিরেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
হামানের চেলাগণ বলল, আমাদের কি করতে হবে বল!
হামান বলল, তোমরা আশা না হারিয়ে কাবুসের কাছে যাতায়াত করা বলবত রাখ এবং তার মতি গতি ও লক্ষণাদি লক্ষ্য করতে থাক। এখনি তার নিকট কোন কিছু বলো না। যা কিছু বলতে হয় আমিই বলবো। হামানকে প্রত্যেকে তারা বুদ্ধির ভান্ডার স্বরূপ মনে করত; সুতরাং আর দ্বিরুক্তি না করে তার কথায়ই রাজী হল।
অতএব কিছুদিন বন্ধ থাকার পর কাবুসের কাছে পুনঃ তাদের আনাগোনা আরম্ভ হয়ে গেল। এখন তারা কাবুসের নিকট গমন করে পূর্বের ন্যায় অসৎ আলোচনায় প্রবৃত্ত হয় না। বরং কাবুসের কাছে কিছু ভাল কথা শ্রবণ করার আগ্রহ দেখাতে থাকে। এতে কাবুসের মনে তাদের প্রতি যে ঘৃণার ভাব জন্মেছিল ক্রমে ক্রমে তা দূর হয়ে গেল।
এখন সে তাদের প্রতি বেশ ভাল ধারণাই পোষণ করতে লাগল এবং মাঝে মাঝে এরূপভাবে তার নিকট গমনাগমন করার জন্য অনুরোধও করল। কিন্তু তাদের মনে যে ভীষণ দুরভিসন্ধি ছিল, সে কিছুই বুঝল না।
এভাবে তার সর্বাপেক্ষা প্রিয় বন্ধু হামানও তার নিকট যাতায়াত করে এবং তার মনের ভাব ও গতি অনুযায়ী আলাপ আলোচনাও করতে থাকে। এরূপভাবে ক্রমে ক্রমে পুনঃ তাদের মাঝে অন্তরঙ্গতা বৃদ্ধি প্রাপ্ত হল।
এতদিন হামান এ সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিল। এখন সে কাবুসের সাথে বিভিন্ন সময় তাদের উভয়ের ব্যক্তিগত আলাপালোচনাও আরম্ভ করে দিল। একদা কথায় কথায় সে কাবুসকে বলিল, বন্ধু! তুমি নারী চরিত্র সম্পর্কে কি ধারণা পোষণ করে থাক?
কাবুস বলল, নারীরা ছলনাময়ী। তাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করা কঠিন ব্যাপার; তবে এটা সত্য যে, সতী সাধ্বী রমণীগণ তাদের পতির জন্য প্রাণ উতসর্গ করতে পারে।
জবাবে হামান হেসে বলল, যেমন তোমার পত্নী আছিয়া তোমার জন্য হাসতে হাসতে প্রাণ বিসর্জন করতে পারে তাই না?