জ্বিন কর্তৃক ইসলাম প্রচারের আজব ঘটনা
বর্ণনায় হযরত কালুবী (রহঃ) খানাফির বিন তাউম নামে এক জাদুকর ছিল। একবার সে এক সবুজ-শ্যামল উপত্যকায় যায়। কুফরী জীবনে তার এক মুরুব্বী জ্বিন ছিল। মহানবী কর্তৃক ইসলাম প্রচার শুরু হলে জ্বিনটি কিছুকাল আত্মগোপন করেছিল। সেই জাদুকর খানাফিরের ভাষায়ঃ আমি তখন ওই (সবুজ-শ্যামল) উপত্যকায় ছিলাম। সেই সময় ঈগল পাখির মতো গতিতে সে জ্বিনটি আমার কাছে আসে। আমি জিজ্ঞাসা করি, কে শাসার নাকি?
সে বলে, হ্যাঁ। আমি কিছু কথা বলতে চাই। আমি বললাম, বলো, আমি শুনেছি। সে বলল, ফিরে এসো (নতুন জীবনে) প্রচুর ফায়দা পাবে। প্রত্যেক সম্প্রদায় এক সময় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় এবং প্রতিটি সূচনার সমাপ্তি আছে।
আমি বললাম, ঠিক বলেছ।
সে বলল, প্রত্যেক প্রশাসনের একটা আয়ুষ্কাল থাকে। তারপর পতন ঘটে। যাবতীয় ধর্ম রহিত হয়ে গেছে। এবং প্রকৃত সত্য এসে গেছে সত্যিকারেরই ধর্মের দিকে। আমি সিরিয়ার কিছু মানুষকে দেখেছি, যারা উজ্জ্বল বাণীর প্রত্যাশী। এমন বাণী যা রচনা করা কবিতাও নয় এবং কোনও লোকগাথাও নয়। আমি ওদের দিকে মনোযোগ দিতে ধমক খেয়েছি। তারপর ফের মনোযোগী হই। এবং উঁকি দিয়ে বলি, আপনারা কোন জিনিস পেয়ে আনন্দ করছেন এবং কোন জিনিসের হাত থেকে আশ্রয় চাইছেন।
তারা বলেন, সে এক মহান বাণী। যা এসেছে মহাপরাক্রমশালী সম্রাটের পক্ষ থেকে। সে শাসার! তুমিও সাচ্ছা কালাম শোনা এবং সুস্পষ্ট পথে চলো।
ভয়ংকার আগুন থেকে উদ্ধার পাবে।
আমি বলি ওই কালামটি কি?
তারা বলেন, এ কালাম কুফর ও ঈমানকে পৃথক করে মুযির গোত্রের রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এই কালাম নিয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। অতঃপর মানব সমাজে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এরপর তিনি এমন নির্দেশনা এনেছেন, যা বাকি সব নির্দেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। এতে তাদের জন্য উপদেশ আছে, যারা উপদেশ গ্রহণ করে।
আমি জানতে চাই ওই মহান বাণী সহকারে কে আগমণ করেছেন।
তারা বলেন, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) যিনি সকল মানুষের মধ্যে সেরা।
অতএব, তুমি যদি ঈমান আনো, তবে বড়ই সম্পদ লাভ করবে। আর নাফারমানী করলে, জাহান্নামে যাবে।
ওহে খানাফির! আমি ঈমান এনেছি। তারপর তাড়াহুড়া করে তোমার কাছে এসেছি। যাতে তুমিও সব রকমের কলুষতা ও কুফরি থেকে মুক্তি হতে পারো এবং হতে পারো আর সব মুমিনের সহযাত্রী। নতুবা, তোমার-আমার সম্পর্কে এখানেই ইতি।
জাদুকর খানাফির বলছে, এরপর আমি সওয়ারী পশুর পিঠে সওয়ার হয় ইয়ামানে হযরত মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ)-এর কাছে হাজির হই এবং ইসলামের দীক্ষা নিই।