নমরুদের গজবী মৃত্যু-পর্ব ১
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বিবি সায়েরা ও হাজেরাকে নিয়ে দীর্ঘ দিন মিশর অবস্থানের পরে কেনান যাত্রার ইচ্ছা করলেন। ইতোমধ্যে মিশরের রাজাকে তিনি একজন খাঁটি ইমানদার রূপে গড়ে তুলতে সক্ষম হলেন। রাজা তার রাজ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা ও দ্বীনের প্রচার কার্যে অধিকাংশ সময় ব্যস্ত থাকতেন। আল্লাহ তা’য়ালার অনুগ্রহে শেষ পর্যন্ত রাজা একজন অলী আল্লাহর পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলেন।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) সপরিবারে মিশর ত্যাগ করলেন। কেনান পৌঁছে তিনি সেখানে দীর্ঘ অবস্থান নিলেন না। কয়েক দিনের মধ্যে তিনি ফিলিস্তিন যাত্রার উদ্যোগ নিলেন। মরুময় দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তিনি ফিলিস্তিন গিয়ে পৌঁছলেন। ফিলিস্তিনের বর্তমান নাম জেরুজালেম। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে ইহুদী ও মুসলমানদের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল। অদ্যাবধি সে যুদ্ধের অবসান হয়নি।
আল্লাহর নবী হযরত ইব্রাহীম (আঃ) জেরুজালেম পৌঁছে সেখানকার আবহাওয়া অ পরিবেশ অনুকূল দেখেলেন। তাই তিনি সেখানে স্থায়ী বসবাসের নিয়ত করলেন। বিবি সায়েরা ও হাজেরাকে নিয়ে তিনি ইবাদাত-বন্দেগী ও দ্বীন প্রচারের কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকতেন। বিবি হাজেরা ছিলেন একজন উচ্চ পর্যায়ের নেককার। তিনি দিনের বেলায় স্বামীর খেদমত করতেন এবং রোজা রাখতেন। আর রাত্রি বেলায় সারারাত জেগে নফল নামায আদায় করতেন। তার সন্তানদের মধ্যে থেকে হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) এর জন্ম হয়। হাজেরা ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পরদাদী।
ফিলিস্তিন আগমনের পরে তিনি সেখানে অনেক দালান-কোঠা নির্মাণ করেন। ইবাদাতখানা তৈরি করেন। আল্লাহ তা’য়ালা এ সময় হযরত জিব্রাইল মারফত বেহেস্ত হতে এক খণ্ড পাথর পাঠিয়ে দেন। এ পাথরকে কেবলা হিসেবে গ্রহন করে নামায আদায় করার নির্দেশ দেন। দীর্ঘ দিন যাবৎ পাথর খানি খোলা অবস্থায় রাখা হয়। পরবর্তী সময় মসজিদে আকসা তৈরি করে তার মধ্যে রেখে দেয়া হয়। তখন থেকে মানুষ মসজিদে আকসার দিকে মুখ করে নামায আদায় করতে থাকে।
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ফিলিস্তিনে দ্বীন প্রচারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেন। সেখানে এক বিরাট জমাত মানুষ ইসলাম গ্রহন করে নবীর বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। জায়গাটি ছিল নুবির জন্য খুবই নিরাপদ ও আরামদায়ক। নবীদের জিন্দেগী আরাম আয়েসের জন্য নয়। তাই আল্লাহ তা’য়ালার তরফ থেকে হুকুম আসল, হে নবী! তুমি ব্যাবিলন চলে যাও এবং নমরুদকে পুনরায় ইসলাম গ্রহনের দাওয়াত দাও।
সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী