হযরত মুছা (আঃ)-কে মিশরের নেতৃত্ব দান- ২য় পর্ব

আপনার মেষ ও ছাগলের সংখ্যা এত বৃদ্ধি পেয়ে ছিল যা সামাল দেওয়া আমদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ায় আমরা প্রতি বছর এক হাজার মেষ ও ছাগল বিক্রি করে দিতাম। বিক্রয় লব্ধ টাকা দিয়ে আমরা এ সমস্ত ইমারাত তৈরি  করেছি। দেশ বিদেশী মানুষের জন্য আমরা মোসাফের খানা তৈরি করেছি। গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য থাকা ও খাবার ব্যবস্থা করে এখানে কয়েক টি কলোনী তৈরি করে দিয়েছি। যেখানে পাঁচ হাজার এর বেশি লোক বাশ করে। আবার তাদের শিক্ষা দিক্ষার জন্য দেশ-বিদেশী শিক্ষক এনে বড় আকারে একটি মাদ্রাসা তৈরি করে দিয়েছি। বর্তমানে আপানার মেষ ও ছাগলের সংখ্যা সত্তর হাজার এর বেশি।

 এ ছাড়া আপনার সে সমস্ত পশু বিক্রয় করা হয়েছে তা থেকে মাদ্রাসা, মোসাফেরখানা ও কর্ম চারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার পর যে টাকা অবশিষ্ট আছে তা হিসাব করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি সে টাকা ও স্বর্ন মুদ্রা দুটি কক্ষে ভর্তি করে রেখেছি। হযরত মুছা (আঃ) ছফুরার বর্ণনা শুনে এক এক করে সমস্ত কিছু ঘুরে ঘুরে দেখতে রাখলেন। তিন দিন পর্যন্ত তৃপ্তির সাথে দেখলেন এবং আল্লাহ তায়ালার দরবারে অশেষ শুক্রিয়া আদায় করলেন। অতপর তিনি  ছেলেকে সমুদয় প্রতিষ্ঠা দায়িত্ব বুজিয়ে দিয়ে সেখানে মোতায়াল্লি  করে রেখে বিবি ছফুরা ও ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি মিশর এর পথে যাত্রা করলেন।

 মিশর পৌঁছে তিনি রাজমহলে বসাবাস না করে নিজের বাড়িতে বসবাস আরম্ভ করলেন এবং দাওয়াতি কাজে লিপ্ত হলেন। তখন মিশর ধনে ধান্য ও শস্যে শ্যামল হয়ে উঠল। মানুষের জীবন-যাপনের মান উন্নতি হল। যার পরিনামে বনি ইসরাইল কতকের মধ্যে শেরেক, বেদাতি ও কর্তব্য অবহেলা স্বভাব ঢুকে পড়ল। গোপনে গোপনে তার দিনের বিরোধিতা করতে আরম্ভ করল। অলস মস্তিষ্ক সয়তানের কারখানা। এ প্রবাদ বাক্য তখন বাস্তবে রুপ নিতে আরম্ভ করল। অঢেল সম্পদ এর মাঝে তখন বনি ইসরাইলদের তেমন কাজ করতে হয় না। তখন তাদের মাথায় সয়তানের ছওয়ার হয়ে তাদের কে কুপথে যাওয়ার পরামর্শ দিল। তারা অনেকে সেই পরামর্শ গ্রহন করল এবং গোপনে মূর্তি পূজা চন্দ্র-সূর্য পূজার প্রতি আকৃষ্ট হল। ছোট ছোট মূর্তি বানিনে তারা ঘরে লুকিয়ে রাখত। রাত্রি বেলায় নির্জনে তা বের করে তাকে সেজদা করত এবং তার সম্মুখে নানা উপকরন রেখে পূজা করত। এমন কি শরিয়ত বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে শুরু করে। মধ্য পান, নিজ বোন কে বিবাহ, চুরি, ডাকাতি, পর ধন আত্নসাত জঘন্য ইত্যাদি অপরাধে অভ্যস্ত হতে শুরু করে।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

 হযরত মুছা (আঃ)-কে মিশরের নেতৃত্ব দান- ১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

অপু ও ফলচুরি রহস্য

মহানগরের কোলাহলের মাঝে, ব্যস্ত জনপথের কিছুটা দূরে একফালি সবুজ ল্যান্ডস্কেপ । সদ্য গড়ে ওঠা আবাসন…

ভালুক ও কাঠবিড়ালী

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘খুকি ও কাঠবিড়ালী’ কবিতাটি কম-বেশি সবাই পড়েছে। এ কবিতাটির কারণেই ছোট্ট…

গাজা দিবস

শিশু-কিশোর বন্ধুরা, কেমন আছো তোমরা? আশা করি যে যেখানে আছো ভাল ও সুস্থ আছো। তোমরা…

হযরত মুছা (আঃ)-কে মিশরের নেতৃত্ব দান- ২য় পর্ব

আপনার মেষ ও ছাগলের সংখ্যা এত বৃদ্ধি পেয়ে ছিল যা সামাল দেওয়া আমদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ায় আমরা প্রতি বছর এক হাজার মেষ ও ছাগল বিক্রি করে দিতাম। বিক্রয় লব্ধ টাকা দিয়ে আমরা এ সমস্ত ইমারাত তৈরি  করেছি। দেশ বিদেশী মানুষের জন্য আমরা মোসাফের খানা তৈরি করেছি। গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য থাকা ও খাবার ব্যবস্থা করে এখানে কয়েক টি কলোনী তৈরি করে দিয়েছি। যেখানে পাঁচ হাজার এর বেশি লোক বাশ করে। আবার তাদের শিক্ষা দিক্ষার জন্য দেশ-বিদেশী শিক্ষক এনে বড় আকারে একটি মাদ্রাসা তৈরি করে দিয়েছি। বর্তমানে আপানার মেষ ও ছাগলের সংখ্যা সত্তর হাজার এর বেশি।

 এ ছাড়া আপনার সে সমস্ত পশু বিক্রয় করা হয়েছে তা থেকে মাদ্রাসা, মোসাফেরখানা ও কর্ম চারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার পর যে টাকা অবশিষ্ট আছে তা হিসাব করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি সে টাকা ও স্বর্ন মুদ্রা দুটি কক্ষে ভর্তি করে রেখেছি। হযরত মুছা (আঃ) ছফুরার বর্ণনা শুনে এক এক করে সমস্ত কিছু ঘুরে ঘুরে দেখতে রাখলেন। তিন দিন পর্যন্ত তৃপ্তির সাথে দেখলেন এবং আল্লাহ তায়ালার দরবারে অশেষ শুক্রিয়া আদায় করলেন। অতপর তিনি  ছেলেকে সমুদয় প্রতিষ্ঠা দায়িত্ব বুজিয়ে দিয়ে সেখানে মোতায়াল্লি  করে রেখে বিবি ছফুরা ও ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি মিশর এর পথে যাত্রা করলেন।

 মিশর পৌঁছে তিনি রাজমহলে বসাবাস না করে নিজের বাড়িতে বসবাস আরম্ভ করলেন এবং দাওয়াতি কাজে লিপ্ত হলেন। তখন মিশর ধনে ধান্য ও শস্যে শ্যামল হয়ে উঠল। মানুষের জীবন-যাপনের মান উন্নতি হল। যার পরিনামে বনি ইসরাইল কতকের মধ্যে শেরেক, বেদাতি ও কর্তব্য অবহেলা স্বভাব ঢুকে পড়ল। গোপনে গোপনে তার দিনের বিরোধিতা করতে আরম্ভ করল। অলস মস্তিষ্ক সয়তানের কারখানা। এ প্রবাদ বাক্য তখন বাস্তবে রুপ নিতে আরম্ভ করল। অঢেল সম্পদ এর মাঝে তখন বনি ইসরাইলদের তেমন কাজ করতে হয় না। তখন তাদের মাথায় সয়তানের ছওয়ার হয়ে তাদের কে কুপথে যাওয়ার পরামর্শ দিল। তারা অনেকে সেই পরামর্শ গ্রহন করল এবং গোপনে মূর্তি পূজা চন্দ্র-সূর্য পূজার প্রতি আকৃষ্ট হল। ছোট ছোট মূর্তি বানিনে তারা ঘরে লুকিয়ে রাখত। রাত্রি বেলায় নির্জনে তা বের করে তাকে সেজদা করত এবং তার সম্মুখে নানা উপকরন রেখে পূজা করত। এমন কি শরিয়ত বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে শুরু করে। মধ্য পান, নিজ বোন কে বিবাহ, চুরি, ডাকাতি, পর ধন আত্নসাত জঘন্য ইত্যাদি অপরাধে অভ্যস্ত হতে শুরু করে।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

 হযরত মুছা (আঃ)-কে মিশরের নেতৃত্ব দান- ১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author