হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব- শেষ পর্ব
হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব-পর্ব ৬ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অতপর নবী সকলকে বেহেস্তী খাদ্য গ্রহন করার জন্য আবেদন জানালেন। বড় লোকেরা ভয়ে এই খাদ্য গ্রহন করতে রাজি হল না। তাঁরা দূরে সরে গেল আর গরীবেরা বেহেস্তী খাদ্য খেল। অসুস্থ ব্যক্তিরা আরোগ্য লাভ করল। দুর্বল ব্যক্তিরা সবল হয়ে গেল। অভাবগ্রস্থরা সম্পদশালী হল। তখন ধণী ব্যক্তিরা আফসোস করে বলতে লাগল, হা! আমরা কেন বেহেস্তি খাদ্য খেলাম না। যদি আমরা খেতাম তাহলে আমরাও ভাল হতাম। খাদ্য সম্ভার বেহেস্ত থেকে যে পরিমাণ এসেছিল, সকলে খাবার পরে তাঁর পরিণাম একই রকম থেকে গেল। আদৌ ঘাড়তি হল না। সকলে খাবার পরে বাকি খাদ্য বেহেস্তে চলে গেল।
এ অবস্থা দর্শনে অধিকাংশ লোক মুগ্ধ হল। তারা বেশ সংখ্যক লোক নবীর উপর ঈমান আনল। বাকি লোকজনের মধ্যে নানা রকম জল্পনা-কল্পনা আরম্ভ হল। অনেকে বেহেস্তী খাদ্য না খেয়ে আক্ষেপ করতে আরম্ভ করল। এদের মধ্যে কতক লোক গিয়ে আবার বেহেস্তী খাদ্য লাভের জন্য আবেদন করল। নবী তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন। আল্লাহ তায়ালা এবার পূর্বের চেয়ে বহুগুন বেশি খাদ্য প্রেরণ করলেন। মানুষ এবার অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে যে যে খাদ্য পছন্দ করে সে খাদ্য অধিক পরিমানে খেল। প্রায় সত্তর হাজার লোকে খাদ্য গ্রহন করল। এবারের খাঞ্জায় মাছ, মাংস, হালুয়া,কাবাব, বিরানী ও আরো বহু রকমের খাদ্য ছিল। সকলে উদর ফুর্তি করে খেয়ে নিল।
এভাবে একাধারে তিন দিন যাবত বেহেস্তের খাবার পৃথিবীতে আসল। শেষ দিকের লোক সংখ্যা আরো অনেক গুন বৃদ্ধি পেল। প্রতিদিন ভোরবেলা খাদ্যের খাঞ্জা আসত এবং সন্ধ্যায় চলে যেত। সারাদিন অসংখ্যক মানুষ উক্ত খাদ্য গ্রহন করত কিন্তু খাঞ্জার খাদ্য তাতে আদৌ কমত না। সন্ধ্যাবেলা ভর্তি খাঞ্জা ফেরত যেত। এত সমস্ত মো’জেযা দেখার পরেও বনি ইসরাইলরা নবীর উপর ঈমান আনল না। উপরস্তু তারা নবীর ক্ষতির চেষ্টায় লিপ্ত হল। তখন নবী তাদেরকে আল্লাহর আজাব আসার খবর জানাল। কিন্তু তাতে ইহুদীরা আদৌ ভীত হল না। এক পর্যায়ে তারা নবীর বীরুধে ষড়জন্ত্রে লিপ্ত হল। তখন তাদের মুখ গুলোর ছুরত শূকর ও ভাল্লুকের ন্যায় হয়ে গেল। তাদের জবান বন্ধ হল।
খাদ্য খাদক খেতে পারত না। বুদ্ধি জ্ঞান লোভ পেল। আপন ছেলে মেয়ে মাতা পিতাকে কামড় দিতে আরম্ভ করল। এমতাবস্থায় ভাল মানুষেরা ওদের পিটিয়ে বাড়ী থেকে বের করে দিল। ওরা রাস্তায় পথে ঘাটে অনাহারে অযত্নে তিন চার দিন পরে মারা গেল। হযরত ঈসা (আঃ) এর জামানায় অধিক বনি ইসরাইল ইসলামের অন্তভুক্ত হয়েছিল। ইতোপূর্বে এত সংখ্যক ঈমানদার আর কোন সময় দেখা যায় নি। ঈমানদারেরা আল্লাহ তায়ালার রহমত লাভ করে পরম আনন্দে জীবন যাপন করতে সক্ষম হয়। আর বেঈমানেরা বিভিন্ন রকম দুঃখ- কষ্ট ও যন্ত্রণার মধ্যে দিন যাপন করতে বাধ্য হয়।