হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব-পর্ব ১

হযরত মারইয়ামের বয়স যখন চৌদ্দ বছর তখন তিনি ঋতুবর্তী হন। প্রথম ঋতুর পরে তিনি পবিত্র হয়ে গোছল করে যখন হাম্মামখানা থেকে নিজ কক্ষে ফিরছিলেন তখন তাঁর সম্মুখে একজন উজ্জ্বল চেহারার ব্যক্তিকে দেখলেন। হযরত মারইয়াম লোকটিকে দেখে মুখে আবরণ দিয়ে যখন তাঁর পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সে লোকটি বলল, হে মারইয়াম! আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একটা সুখবর নিয়ে এসেছি। 

একথা শুনে মারইয়াম সেখানে দাড়ালেন, তখন লোকটি হযরত মারইয়াম এর মুখে ফুক দিলেন। মারইয়াম তখন অনুভব করলেন তাঁর শরীরের ওজন তখন দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। মারইয়াম লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কে? লোকটি উত্তর দিল আমি আল্লাহর ফেরেস্তা জিব্রাইল। মারইয়াম জিজ্ঞেস করলেন, আপনি আমার জন্য কি সুখবর নিয়ে এসেছেন? জিব্রাইল বললেন, আল্লাহ তায়ালা ব্যতিক্রম পদ্ধতিতে তোমার গর্ভে যুগের নবী হজরত ঈসা (আঃ)- কে প্রেরণ করেছেন। সময় হলে সব কিছু দেখতে পাবে। 

এ কথা বলে জিব্রাইল বিদায় হয়ে যাচ্ছিলেন। তখন মারইয়াম বললেন, আপনি আমাকে কি খবর দিলেন? এটা দ্বারা কি রুপ সম্ভব? আমাকে কোন পুরুষ আজ পর্যন্ত স্পর্শ করে নি বা আমি ভ্রষ্টা নই? হযরত জিব্রাইল বললেন, হে মারইয়াম! এ বিষয় তোমার প্রভু বলেছেন উহা আমার জন্য সহজ এবং আমি উহা মানুষের নিদর্শন ও আমার রহমত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।  আর এ কাজ পূর্বেই ঘটান হয়েছে। হযরত জিব্রাইল (আঃ) এ কথা বলে বিদায় হলেন। হযরত মারইয়াম জিব্রাইল (আঃ) এর কথা শুনে মহা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হলেন। 

তিনি আল্লাহর দরবারে সেজদায় পড়ে বলতে লাগলেন, হে মহান প্রভু! আমার উপর এমন কঠিন পরীক্ষার দায়িত্ব অর্পণ করলে যা লোকসমাজে প্রকাশ হলে আমি সমাজচ্যুত ও নিন্দনীয় মানুষের মধ্যে গন্য হব। তবুও তোমার প্রেরিত দায়ীত্ব পালনে আমি সম্মত আছি। তবে পৃথিবীর আর কোন মানুষকে এ ধরনের কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন কর না। এহেন পরীক্ষার সম্মুখীন হলে অনেকেই ঈমান রাখতে সক্ষম হবে না। হে মহান প্রভু! তুমি দয়ার সাগর, তুমি আমাকে এ পরীক্ষার উত্তীর্ণ হওয়ার তৌফিক দান কর। আমাকে ধৈর্য্যশীলদের অন্তভূর্ক্ত কর। এবং আমার জন্য সকল মুসকিল আছান করে দাও। 

কিছুদিন পরে মারইয়ামের গর্ভ ধারনের খবর বনি ইসরাইল দের মধ্যে প্রকাশ হয়ে পড়ল। তখন একদল লোক এসে হযরত মারইয়াম কে শাসিয়ে বলল, মারইয়াম উচিৎ কথা বল, কে তোমার গর্ভজাত সন্তানের পিতা।  তুমি এক কুমারী কন্যা কোন পুরুষ সঙ্গ ছাড়া তোমার গর্ভ ধারন সম্ভব নয়।  অতএব কে সে পুরুষ তার নাম বল। না তোমার প্রতিকেউ বলৎকার করেছে? তাহলে আমরা তাকে শাস্তি দেব। মারইয়াম তাদের প্রশ্নের জবাবে বললেন, আমি কিছুই জানি না। 

আমি কোন পুরুষের সংস্পর্শে গমন করি নি। তবে একদিন আমাকে আল্লাহ তায়ালার এক ফেরেস্তা আমার মুখে ফুক দিয়ে গর্ভে ধারনের কথা আমাকে জানিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া আমার গর্ভজাত সন্তান নাকি যুগের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলে পরিচিত হবে। একথা তিনি আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। এর অতিরিক্ত আর কোন কথা আমি জানি না। একদল যুবক বনি ইসরাইলের মধ্যে থেকে বলে উঠল। দিবারাত্র মসজিদে এবাদাতের নামে বদ্ধ কক্ষে নাগর নিয়ে অপকর্ম করেছ তা এবার ফাঁস হয়েছে  বলে এখন নানা বাহানার আশ্রয় নিচ্ছ? আসল ঘটনা তোমাকে বলতে হবে।   

হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব-পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।