হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৪
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কোন ফেরেশতা ঐ সীমান্ত অতিক্রম করে উপরে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে না। এমনকি ফেরেশতাকুল সর্দার হযরত জিব্রাইল (আঃ)-এর ভ্রমণ পথও ঐ পর্যন্ত শেষ হয়ে যায়। যখন রাসূলে পাক (সাঃ) ছিদরাতুল মনতাহার নিকট পৌঁছালেন তখন ঐ বৃক্ষটিকে সোনালী বর্ণের অসংখ্য ফেরেশতা পরওয়ানার ন্যায় ঢেকে ফেলল। ঐ সময় বৃক্ষটির যেই দৃশ্য হয়েছিল তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। সেখানেও রাসূল (সাঃ)-এর সামনে দুটি মতান্তরে তিনটি বা চারটি পেয়ালা পেশ করা হল। তিনি দুধের পেয়ালা গ্রহণ করলেন। জিব্রাইল (আঃ) বললেন, আপনি ফিতরাতকে অবলম্বন করেছেন।
হযরত আবু হুমায়রা কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, ছিদরা হতে দুধ, মদ, পানি ও মধু এ চারটি নহর প্রবাহিত হয়েছে। অন্য বর্ণনায় আছে, ছিদরাতুল মনতাহার মূলে ছালছাবিল নামক একটি নদীও প্রবহমান। তা হতে দুটি নহর প্রবাহিত হচ্ছে। একটি নহর কাউছার, অপরটি রহমত। কাউছারের উভয় পার্শ্বে ইয়াকুত, মতী এবং জবরজদের অনেক পেয়ালা এবং স্বর্ণ রৌপ্যের অনেক পাত্র দু’ধারে সজ্জিত ছিল। জিব্রাইল (আঃ) বললেন, এটাই কাউছার, যা আপনাকে আপনার প্রভু দান করেছেন। রাসূল (সাঃ) একটি পাত্র নিয়ে কিছু পানি পান করলেন। দেখলেন তা মধু হতে মিষ্ট, বরফ হতে ঠাণ্ডা এবং দুধ হতে সাদা।
সেখানে একটি মতীর বালাখানায় রাসূল (সাঃ) উপস্থিত হন। ঐ বালাখানায় স্বর্ণের ফরশে সুসজ্জিত এবং নূরে আলোকিত ছিল। সেখানে রাসূল (সাঃ) তিনটি বিশেষ উপাধি দ্বারা ভূষিত করা হল। উপাধিগুলো (১) ছাইয়্যেদুল মুরছালীন (২) ইমামুল মুত্তাকীন ও (৩) কায়েদুল গোররিল মুহাজ্জালীন।
ছিদরাতুল মনতাহার নিকট জিব্রাইল (আঃ) কে রাসূল (সাঃ) তাঁর আসল সুরতে দেখতে পান। যে সুরতের উপর আল্লাহ তা’য়ালা তাঁকে সৃষ্টি করেছেন। রাসূল (সাঃ) দেখলেন, হযরত জিব্রাইল (আঃ)-এর ছয় শত বাজু বা পাখা। একটি পাখাই দিগন্তকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে। হযরত জিব্রাইল (আঃ) যখন পাখাসমূহ হরকত দিয়েছিলেন তখন অজস্র ধারায় ইয়াকুত ও হরিদ্রাবর্ণের মতী ছড়িয়ে পড়ল যার সংখ্যা আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ নির্ণয় করতে পারে না।
হযরত রাসূল (সাঃ) হযরত জিব্রাইল (আঃ) কে তাঁর আসল সুরতে আর একবার জমীনের বুকে হেরা পর্বতের নিকট দেখেছিলেন। অন্য কোন পয়গম্বর হযরত জিব্রাইল (আঃ) কে তাঁর আসল সুরতে দেখেন নি।
তারপর রফরফ এসে উপস্থিত হল। রফরফ সবুজ বর্ণের একটি ফরাশ। তা এত বিরাট যে, সপ্তম আকাশের উপর সমস্ত শূন্যস্থান হতে ভরপুর হয়ে গেল। হযরত জিব্রাইল (আঃ) এখন আমি আপনার নিকট হতে বিদায় নিচ্ছি। এটা আমার শেষ সীমা। এখন শুধু আপনি আর আপনার পরওয়ারদেগার। রাসূল (সাঃ) বললেন, হে জিব্রাইল! আপনি কেন আমাকে ছেড়ে যাচ্ছেন? এ পর্যন্ত আমার নিকট হতে কোন প্রকার দুর্ব্যবহার পেয়েছেন কি? হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, আমি যদি কেশ পরিমাণ উপরে যাই তাহলে আল্লাহর তাজাল্লী আমাকে জ্বালিয়ে ভস্ম কর দিবে। অতঃপর পর্দার আড়াল হয়ে একজন ফেরেশতা আবির্ভূত হলেন। হযরত জিব্রাইল (আঃ) বললেন, আল্লাহর কসম আমি সৃষ্টির পর হতে কখনও এ ফেরেশতাকে দেখেনি।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আকাশে আরোহণ- পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন