ছোট শিশু।ছোট বেলায় মারা গিয়াছে তার বাবা।বড় হয়ে অন্যদের বাবা দেখে তার নিজের বাবার কথা মনে পড়ে যায়।জানত না সে বাবার অবয়ব কেমন ছিল।তাই এক দিন মাকে জিজ্ঞাসা করল,মা!আমার বাবা দেখতে কেমন ছিল।তার মা গঠন আকৃতি বর্ননা করলেন।ছেলে টি আস্তে আস্তে বড় হলেন।একদিন সে আয়না চেহারার সামনে নিলে তার মায়ের বর্ননাকৃত চেহারা আয়নার সামনে ভেসে উঠে।যা মূলত তার চেহারার প্রতিচ্ছবি।কিন্তু আয়নার সম্পর্কে তার ধারণা নেই।নিজের ছবিকে বাবার ছবি মনে করে আত্নহারা এবং আনন্দিত এই ভেবে যে,আমার বাবা এই আয়নার মধ্যে অবস্থান করছে।এই যে আমার বাবাকে দেখা যায়,সে যখন হাসে আয়নাও হাসে।সে কথা বললে,আয়নার ছবিটাও কথা বলে,এতে তার ধারবা আরও মজবুত হয়ে গেল।তার বাবা তার সাথে হাসছে,কথা বলছে।এবার সে আয়না যত্নকরে নিজের কাছে রাখে।কাউকে ধরতে দেয়না।সকালে কাজে যাওয়ার সময়,একবার আয়না দেখে হাসে,কথা বলে।কাজ থেকে ফিরে এসে তাই করে।
বিবি সাহেবা অনেকদিন ধরে স্বামীর এই রহস্যজনক আচারন লক্ষ্য করছে।তার প্রশ্ন স্বামী আয়না দেখে কার সাথে কথা বলে।হাসা হাসি করে চুমু খায়।বুকে চেপে ধরে,মাথায় তুলে কেন?
এবার এই আয়না কাউকে ধরতে দেয় না।সযত্নে তার কাছে রাখে।আমাকে এই আয়নার রহস্য উদঘাটন করতে হবে।এবার সে আয়না টা দেখার জন্য সুযোগ খুঁজতে লাগল।এক দিন স্বামী কাজে বের হল,এই ফাকে সে আয়নাটা হাতে নিলো।অমনি নিজের চেহারা আয়নায় ভেসে উঠল।মজার ব্যাপার স্ত্রী কোন দিন আয়না ব্যাবহার করে নাই এবং আয়নার মধ্যে নিজের চেহারা ভেসে উঠে,এই জ্ঞান টুকু স্ত্রীর মধ্যে নাই।তাই সে আয়নায় ভেসে উঠা নিজের ছবি দেখে অন্য মেয়ে ছবি মনে করে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল,এত দিন পর আসল ঘটনা ধরা খেয়েছে।আমার স্বামী ওই মহিলার সাথে প্রেম করে,আমি যাতে না বুঝতে পারি তাই সে এই আয়নার মধ্যে পুরে রেখেছে।এতদিন পর বুঝলাম আয়নার আসল রহস্য!আমি আর এক মুহুর্তের জন্য এ বাড়িতে থাকব না।এই বলে গাট্টি বুসকা গোছাতে লাগল।
বউমার গাট্টি বুসকা গোছাতে দেখে শাশুড়ি বললো,কি হলো বউমা!তুমি কই যাও?
বউমার উত্তরঃআপনি হলেন সংসারের মুরুব্বী।আপনি আপনার ছেলের সম্পকে কিছু জানেন?কিছুই তো জানি না,বউমা!আপনার ছেলে আরেক টা মেয়ের সাথে প্রেম করে,ধরা খাওয়ার ভয়তে ওই আয়নার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছে।যদি আপনি আর বিচার না করেন আমি এই সংসারে থাকব না।শাশুড়ি বললেন শান্ত হও বউমা,আমি আগে আয়না টা দেখি,তার পর যা হওয়ার হবে।তুমি ছবর কর।এবার শাশুড়ি গেলেন আয়না দেখতে।শাশুড়ি জানে না আয়নার হিকমত।আয়না দেখার সাথে সাথে শাশুরির চেহারা আয়নায় ভেসে উঠল,শাশুড়ি দেখে এক বৃদ্ধ মহিলা দাত নেই চেহারার চামড়া জুবু থুবু হয়ে গেছে।দেখেই শাশুরির মাথা খারাপ।সে ভেংছি দিয়ে বলল,ছিঃছিঃতরে কি এজন্য লেখাপড়া শিখাইলাম?প্রেম করতে যখন মন চাইছে তাহলে একটা জোয়ান মেয়ে দেখে প্রেম করতিস?আমার মতো এমন বুড়ির সাথে কেন প্রেম করে?বাড়ি আসুক মজাটা বুঝাবো।
শেষকথাঃ আয়নার হাকিকত না জানার কারণেই সংসারে এই অশান্তি তৈরি হয়েছে।যার যার মতো করে আয়নায় ব্যাখ্যা দিয়েছে।
ঠিক ইসলামের সঠিক জ্ঞান না থাকায় অনেকে যার যার মতো করে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।