হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর নবুয়াতী পরীক্ষা-পর্ব ১
নবীদের পদমর্যাদা যেমন বড় তেমনি তাদের ছোট খাট ভুলগুলো আল্লাহ তায়ালার নিকট বড় অপরাধ তুল্য। হযরত ছোলায়মান (আঃ) এমনি একটি ছোট ভুলের সম্মুখীন হয়ে বিরাট মাশুল দিয়েছেন। ছাইদুনের শাহজাদিকে তিনি ভুল ক্রমে মুসলমান না করে বিবাহ করেছিলেন। এ কাজটি বোধয় আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন নি। তাই তাকে সম্মুখীন হতে হয়েছে বিরাট পরীক্ষায়।
জীন বাদশার কন্যাকে বিবাহ করার পরে তাকে ইসলাম গ্রহন করার জন্য হযরত ছোলায়মান (আঃ) কয়েক বার বলেছেন। উত্তরে সে বলেছে আমার পিতামাতার শোক পালনের জন্য কমপক্ষে চল্লিশ দিন অপেক্ষা করে আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করব। এ সময় স্বাবাভিক ভাবে শাহাজাদিকে কয়েদখানায় বন্দি করে রাখা উচিৎ ছিল। কিন্তু হযরত ছোলায়মান (আঃ) তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে তাকে নিজের মহলে রাখেন। এটা কি আসক্তির কারণে করেছেন না অন্য কারণে কেউ জানে না। তবে শাহাজাদি এ চল্লিশ দিনের মধ্যে শয়তানের কুপরামর্শ অনুসারে নিজ পিতার একটি মুর্তি তৈরি করে তা প্রতিদিন সকাল ও রাতে পূজা করা আরম্ভ করে। সে খবর হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর অবগত ছিলেন না।
শাহজাদিকে এ অন্যায় কাজের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য যে হযরত ছোলায়মান (আঃ) দায়ী তাতে সন্দেহ নেই। কারণ তিনি একটু কোঠরতা অবলম্বন করলেই শাহাজাদি মুসলমান হতে বাধ্য হত। তখন তাঁর কাজের জন্য আর নবীকে দায়ী করা যেত না। কিন্তু তিনি যথাযথ দায়িত্ব পালনের পরিচয় দিতে না পারায় তাঁর উপর নেমে আসে বালা মুসিবত। কিছুদিনের জন্য তাকে সিংহাসন হারিয়ে বর্ণনাতীত দুঃখ দুর্দশার সম্মুখীন হতে হয়।
ঘটনাটি এভাবে ঘটেছিল হযরত ছোলায়মান (আঃ) তাঁর চিরাচরিত নিয়মানুসারে বাহ্য করতে যাবার প্রাক্কালে তাঁর সেই বেহেস্ত আংটিটা একটি বাঁদির নিকট রেখে যেতেন। একদিন তিনি সে নিয়ম অনুসারে বাঁদির নিকট আংটি রেখে বাহ্য ফিরতে যান। জীন সম্প্রাদায়ের অনেকে শক্তির ভয়ে হযরত ছোলায়মানের বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর তাবেদারকের অন্তভুক্ত হয়েছিল। তাদের মনে প্রানে ভালবাসা বা ভক্তি শ্রদ্ধার কোন বালাই ছিল না। তারা সর্বদা মনে মনে হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর অমঙ্গল কামনা করত। শকরা নামক এ ধরনের এক বিদ্রোহী জীন যাদু বিদ্যায় পারদর্শী ছিল।