রাজবধূ পর্ব ৪৬ (রেহানা পুতুল)

রাজবধূ ৪৫ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

“সবসময় সব বিষয়ে নাক গলানো উচিত না। বই-পুস্তক পড়ে এইটা শিখোনাই?”

কণ্ঠে উষ্মা ঢেলে শিখাকে বলল আদুরী।

এর প্রতুৎত্তরে শিখা যা বলল,তা শুনে আদুরী ও রানী মূর্তির ন্যায় চেয়ে রইলো শিখার মুখপানে।

শিখা বলল,

“বই-পুস্তক পড়ে যা শিখেছি, বুঝেছি, তার পুরোটা যদি কিছু মানুষের উপর প্রয়োগ শুরু করি,তাহলে তারা আর মুখ তুলে কথা বলতে পারবে না আমার সঙ্গে।”

“বাহ! বাহ! বাহ! স্বামীর সঙ্গে দুই রাত শুইয়েই কথাবার্তা এত লাগাম ছাড়া হইলো তোমার? সামনের দিনগুলোতে না জানি তুমি কি করবা। কথায় আছে না,প্রশ্রয় পেলে পিপীলিকাও নিজেকে তেলাপোকা ভাবতে শুরু করে। তোমার অবস্থাও তদরূপ। কিন্তু মনে রেখো, পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে।”

ভ্রু ঝাপটিয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বলল আদুরী।

“সব পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে নয় আপা। বাঁচিবার তরেও। দেখেন, দুজন দুজনের সমস্যা সমাধান করতে পারেন কিনা?”

রহস্যময় হাসি ছড়িয়ে বলল শিখা। এবং সে চলে গেলো ঘরের ভিতর।

আদুরী ও রানী দৃষ্টি বিনিময় করলো আহাম্মকের ন্যায়। নিরক্ষর রানী বলল,

“কি কইল হে বুঝলাম না?”

“তার কথায় মনে হলো সে তোমার ও আমার বিষয়ে কিছু জানে বা জেনে ফেলছে। কিন্তু তোমার হইলো কি ভাবি? বমি করলা কেন?”

আদুরী নিজের দূর্বলতার জন্য চাইলেও রানীর সঙ্গে উচ্চবাচ্য করার সুযোগ পেল না। অপরদিকে রানী যখন বউ হয়ে আসে তালুকদার পরিবারে, তখন আদুরী ছোট ছিলো। সে আদুরীকে ছোটবোনের মতো ভালোবাসতো ও কেয়ার করতো সব বিষয়ে। আদুরী এক ঘটি পানি নিয়ে দিলো রানীকে। রানী কুলি করে নিলো বারকয়েক। তারপর

বিমর্ষ নয়নে পুকুরের পানির দিকে চেয়ে রইলো। মুখে কোন রা নেই।

“কি ব্যাপার ভাবি? কি হইলো? এই অঘটন ক্যামনে ঘটলো?”

রানী বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। দু’কদম এগিয়ে গিয়ে আদুরীর মুখোমুখি দাঁড়ালো। চোখমুখে অসহায়ত্ব ফুটিয়ে তুললো। আদুরীর হাত ধরে টেনে পুকুরপাড়ের নিরালা স্থানে চলে গেলো। সবিস্তারে জানালো কাহিনী। তার দু’চোখে শুরু হলো অশ্রুবর্ষণ। আদুরী বিদুৎ স্পষ্ট’র ন্যায় শক খেলো।

সে বলল,

“ভাবি, আমি এটা আম্মা বা কাউকেই বলতে পারব না। তাদের ম্যানেজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনিতে নিজেই আছি মহা ফ্যাসাদে।”

রানী নিস্তেজ গলায় বলল,

“এই সংসারে আমার অবদান কি কম? যদি একটা সন্তানের মুখ দেখার সৌভাগ্য হইতো আমার,জীবনে আর কোন দুঃখ থাকতো না।”

“ভাবি, জগতে সবার সকল আশা,আকাঙ্খা কি সবসময় পূর্ণ হয়? আমি পাইছি শোয়েবকে? মেজো ভাবি, ভাইয়ার চাহিদা না মেটাইতে পারলেও কিভাবে তার চোখের সামনে তার স্বামী তোমারে বিয়ে করবে? এটা মানার মতো বিষয়? বরং এইটা খুব বিচ্ছিরি বিষয়। তুমি এবরশন করে ফেলো।”

আদুরীর চোখের পলক না পড়তেই রানী দাঁড়ানো থেকে বসে তার দুই পা ধরে ফেলল।

“বইন দয়া কর। এক ঘরে কি দুই বউ নিয়া মানুষ বাস করে না? সুমনার ত সমস্যা। সেইতো চায় তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়া করুক। আমিও চাই তালুকদার বংশের সন্তানের মা হইতে। সারাজীবন এখানে থাকতে।”

রানীর ভারী অশ্রুবর্ষণে আদুরীর মন কিঞ্চিৎ গলে।

“মেজো ভাইয়া কি রাজী হইবো?”

“বইন তুই কইলেই রাজী হইবো। তুই হেগো আদরের একমাত্র ছোট বইন। আমার হইয়া তুই অনুরোধ করলে সে মানা করতে পারবে না। সে রাজী হইলে ত আর আমার বাচ্চা ফালানো লাগব না। আমিতো ম্যালা খুশী আমার পেটে তোর ভাইয়ের বাচ্চা আইছে দেখে। দেরী করন যাইব না, তুই কালই বাজারে গিয়া ফোন কইরা জানা। আমি চিরদিন তোর কাছে কৃতজ্ঞ থাকুম। তোর এত বড় উপকারের কথা আমি মরণেও ভুলুম না।”

“আচ্ছা,বাড়িতে আসো। দেখি মেজো ভাইয়ারে কালকে বা পরশু সময় সুযোগ করে টেলিফোনে জানাই বিষয়টা। ছোট ভাইয়া বাড়িতে এখন। কবে যাবে তার নাই ঠিক। তাই বিষয়টা হ্যান্ডেল করা এখন টাফ। ”

“হাচাই কইছিস। রাজ যে মজার খানা পাইতাছে রোজ রাইতে। মনে হয়না সহজে গ্রাম ছাড়বো।”

অসহিষ্ণু গলায় বলল রানী। চিন্তাগ্রস্ত মুখে দুই ননদ ভাবি বাড়ির অন্দরে প্রবেশ করলো।

রাজ,শিখার বাসরের তৃতীয় রাত। দুজনে পাশাপাশি শুয়ে আছে। শিখা কাত হয়ে আছে বিপরীত পাশে মুখ করে। শিখার পিঠের উপরে ছড়িয়ে থাকা একগুচ্ছ কালোকেশের নিচে রাজ মুখ গুঁজে বলল,

“ব্যথা কিছুটা পশমিত হয়েছে?”

লজ্জায় শিখার প্রাণ যায়। নাকমুখ মরিচ লাল হয়ে গেলো। রাজ শিখাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিলো। শিখা আহ্লাদী হয়ে রাজের হাত খামচে দিলো।

“আহ! লাগছে ত প্রজাপতি। খারাপ কি বললাম?”

“নাহ, খুব নেকের কথা বলেছেন আপনি?”

রাজ রোমাঞ্চিত হাসি হেসে বলল,

“প্রজাপতি, তোমার শরীরের নেশা জাগানিয়া ঘ্রাণ চুম্বকের আকর্ষণ শক্তির মতো আমাকে টানে। দামেস্ক, তুরস্ক, ইরান,ইরাকের দামী পারফিউম ফেল।”

” রোমান্টিক ফড়িংয়ের ঘ্রাণও আমার অদ্ভুত ভালোলাগে।”

বালিশের মাঝে মুখ লুকিয়ে গুনগুন করে বলল শিখা।

“ফড়িং! আমি? ওহ মাই গড! মজার ত নামটা। ফড়িং প্লাস প্রজাপতি। দারুণ কম্বিনেশন। এমন আরো কিছু শুনতে যায় রাজের মন। ”

“আর কিছু জানিনা আমি।”

দুষ্ট হেসে বলল শিখা।

রাজ শিখার কোমরে,ঘাড়ে,পায়ের তালুতে শুড়শুড়ি দিতে দিতে বলল,

“বলো বলছি। নইলে আমার হাতের বেয়াড়াপনা অব্যাহত রবে।”

হাসতে হাসতে শিখার চোখে পানি এসে যায়। সে বিছানায় মোচড়ামুচড়ি করতে করতে বলল,

“ছাড়ুন না। ওহ! ধূর। পেট ব্যথা করছে আমার! বাতি বন্ধ করেন। নইলে ঘুম আসবে না আমার।”

রাজ শিখার কানের লতিতে নিজের উষ্ণ ঠোঁটজোড়াকে ছুঁই ছুঁই করে বলল,

“যখন আমি থাকব না, তখন আর কেউ তোমার ঘুমের ডিস্ট্রাব করবে না। যত ইচ্ছে ঘুমাবে।”

“আপনি থাকবেন না মানে?”

আতংকিত গলায় জিজ্ঞেস করলো শিখা।

“আমি ঢাকায় যখন থাকবো,সেটা মিন করেছি।”

রাত গভীর হয়। গাঁয়ের জোনাক জ্বলা সেই রাতের নিস্তব্ধতাকে সাক্ষী রেখে দুজন নবদম্পত্তির প্রণয়ের সুর মধুর থেকে মধুরতম হয়। মধু পিয়াসী ভ্রমরের ন্যায় প্রেয়সীর আকণ্ঠ সুধা পানে নিমজ্জিত হয় এক প্রেমিক হৃদয়। সুখভোগ শেষে ইতি ঘটে এক উতলা নিশির।

প্রাতঃকালে শিখা উঠে যায় আলস্যতা নিয়েও। গোসল সেরে নামাজ পড়ে নিচতলায় তার রুমে চলে যায়। কারণ পড়া আছে, কাজ আছে, ক্লাস আছে।

নিদিষ্ট সময়ে রাজও উঠে গোসল সেরে নেয়। নাস্তা খেয়ে শিখা ও সুফিয়ার কাছে বলে বের হয়ে যায় হাসপাতালে।

জুবায়েরকে রিলিজ করে আনতে হবে। জুবায়ের ক্রমশ সুস্থতার দিকে এগোচ্ছে। রাজ বোবা হেসে তাকে বলল,

“দিলিতি ভয় পাইয়ে। খুব দুঃখ মনে?”

“হ্যাঁ। মনের দুঃখে বনে এলাম।”

করুণ হেসে বলল জুবায়ের।

“কই বনে এলি? এটা হসপিটাল।”

“ওহ! বনে আসিনি? হাসপাতাল এটা?”

ক্ষীণ হেসে বলল জুবায়ের।

“বাড়িতে আয়। তোর খবর আছে গরম গরম।”

জুবায়ের ম্লান হাসলো। হাসপাতাল হতে জুবায়েরকে নিয়ে রাজ দুপুরে বাড়িতে আসলো। জুবায়েরের সেবাশুশ্রূষা করছে আমেনা,মতির মা, ও বরকত।

শিখা কলেজ থেকে আসার পর বিকেলে জুবায়েরকে দেখতে গেলো। দরজায় পর্দার বাইরে দাঁড়িয়েই সৌহার্দপূর্ণ স্বরে বলল,

“আসতে পারি ভাইয়া?”

শিখার কণ্ঠ শ্রবণেন্দ্রিয় হতেই জুবায়ের ভিতরটা দমকা বাতাসের ন্যায় হুহু করে উঠলো। আন্তরিক গলায় জুবায়ের বলল,

“শিখা ভিতরে আসো।”

শিখা ভিতরে গিয়ে জানতে চাইলো,

“কেমন আছেন? শরীর ভালোর দিকে যাচ্ছে?”

“শারিরীক সুস্থতা অনুভব করতে পারছি। কিন্তু মানসিকভাবে ভালো নেই আমি শিখা। তবুও এই মুহূর্তে ভালোলাগছে। আমিত মনে মনে ভাবছি তোমার কথা। যে সব প্রিয়জনদের মুখ দেখলাম একজন ছাড়া। সে কই? পরে মনে হলো তোমার কথা। তুমি কলেজে আছো।”

“ওহ আচ্ছা। বুঝলাম। ভাল নেই কেন? কি হয়েছে আপনার?যাকে ভালোবাসতেন সে ছল করেছে বুঝি? ”

“সে ছল করেনি। আমার ভাগ্য আমার সঙ্গে উপহাস করেছে। অহেতুক আমার জীবনটাকে তাসের ঘর বানিয়ে দিয়েছে।”

“কি বলে শান্তনা দিবো বুঝতেছি না। আল্লাহ আপনার মনে শান্তির বারতা বইয়ে দিক। এই দোয়া করি ভাইয়া। সত্যিই ভালো মানুষদের দুঃখ বেদনা বেশি।”

জুবায়ের নিষ্পলক চেয়ে রয় শিখার দিকে। টুকটাক আলাপ শেষে শিখা জুবায়েরের রুম হতে প্রস্থান নেয়।

সন্ধ্যার পর রাজ শিখাকে দোতলায় তার রুমে ডাকে। বরকতকে নির্দেশ দেয় তার ও শিখার জন্য কফি ও নাস্তা দিয়ে আসার জন্য। বরকত নাস্তা দিয়ে আসে। ধোঁয়া উঠা কফির কাপে চুমুক দিয়ে রাজ শিখাকে বলে,

“তুমি আমাকে কি কি বলতে চাও? এখন বলবে?”

“আপনিওতো আমাকে কি কি বলতে চান। এখন বলবেন?”

“খুব কথা শিখেছো মনে হয়?”

ঠোঁট ভিড়িয়ে হেসে বলল রাজ।

“আপনিতো তাই চান।”

ভ্রু নাচিয়ে বলল শিখা।

“এই রুম তোমার আমার। তুমি কি সবসময় এই রুমে থাকতে চাও?”

“আপনি না থাকলে নিচে আমার রুমেই থাকবো। এখানে একা থাকতে ভয় করবে।”

“ওকেহ! আমি মাকে বলে দিবো। তুমি চাইলে থ্রিপিস পরতে পারো আমাদের বাড়িতে।”

“আচ্ছা পরবো।”

“তুমি আমার সঙ্গে ঢাকায় বাস করতে চাও?”

“চাই। তবে আমার ইন্টারমিডিয়েটের পর।”

“এর আগে চাইলেও সম্ভব নয় পড়ার জন্য। আমি জাস্ট জেনে রাখলাম।”

“আমার মামু তোমাকে ব্যাড টাচ করতে চেয়েছে। বলনি কেন আমাকে?”

গাম্ভীর্যপূর্ণ স্বরে জিজ্ঞেস করলো রাজ।

অকস্মাৎ শিখার ভিতরটা নড়ে উঠল। তবুও সে দৃঢ় গলায় বলল,

“আমি বারবার চেয়েছি বলতে। কিন্তু আপনি সেই প্লেস দেননি। মনে করে দেখুন, যতবার আমাদের দেখা হয়েছে,সেই সময়গুলো কিভাবে কেটেছে আপনার ইচ্ছায়?”

তখন বরকত ট্রে নিতে আসে। এবং সে একটুক্ষণ কথা বলল রাজের সঙ্গে। তাই রাজ ও শিখার আলাপনের খেই হারিয়ে যায়। শিখাও পড়ার জন্য নিচে চলে আসে।

জুবায়ের মোটামুটি সুস্থ হতে সপ্তাহ লেগে গেলো। সেই ভিতরেই একদিন সকালে শিখা কলেজে যাওয়ার পর রাজ জুবায়েরকে ডেকে নিলো ঘরের বাইরে। নির্জন বাগানের ভিতরে চলে গেলো দুজন। রাজ বলল,

“তোর সঙ্গে আমার কথা আছে।”

“খুব সিক্রেট কথা নাকি? নির্জনতা বেছে নিলি যে?”

“তুই বিয়ে করছিস না কেন?”

ভণিতা না করেই ভারিক্কি মুডে সরাসরি জানতে চাইলো রাজ। জুবায়ের রাজের কথাকে পাত্তা না দিয়ে হোহোহো করে হেসে ফেলল। বলল,

“এটার জন্য এখানে ডেকে আনতে হয়? না আরো কথা আছে তোর?”

“তুই কিছুদিন আগে নিজামের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বললি শিখাকে টাচ করতে চেয়েছে আমার মামু। সেটা তুই কিভাবে জানিস?”

“সিরিয়াস প্রশ্ন এটা। নেক্সট কুয়েশ্চন?”

“তোকে আমি রিকুয়েষ্ট করে বললাম,

আমার আর শিখার কিছু ক্লোজ ছবি তুলে দিবি। তবুও তুই কি এমন জরুরি কাজে বাইরে গেলি? ড্রিংকস করলি কেন? যারজন্য এক্সিডেন্টও করেছিস।”

“সব আনসার সংক্ষেপে বলব না ডিটেইলস বলবো?”

“তুই যেভাবে বললে আমার বুঝতে সুবিধা হবে,সেভাবে বল।”

“যেদিন তোর মামু আসে। সেদিন সে রাতে আমাদের বাড়ি ছিলো। আমিতো আর জানতাম না। সেদিন রাতে আমি বাইরে বাথরুমে গেলাম। বাথরুম থেকে বের হয়ে সিগারেট ধরালাম। সিগারেট শেষ করে পা বাড়াতেই আবছায়া আলোয় চোখে পড়লো দুজন মানুষের ধস্তাধস্তি। নিঃশব্দ পায়ে এগোতে থাকি পিছন হতে। কাছে যেতে দেখি শিখা। তোর মামু শিখাকে প্রায় অর্ধনগ্ন করে ফেলেছে রেপ করার জন্য। শিখা তাকে আঘাত করে ঘরের দিকে দৌড়ে পালায় নিজের সম্ভ্রম রক্ষা করার জন্য। তখন তুই থাকলে যা করতি আমি ঠিক তাই করেছি। তোর মামু ছিলো নেশাগ্রস্ত। আমি তাকে বাগানের ভিতরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাই। গলা টিপে মেরে ফেলি। যেটা শিখা এবং কেউই জানে না আজ পর্যন্ত।”

শুনে রাজ ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ে। জুবায়ের বাকি জিজ্ঞাসার উত্তর দেয়।

“আমি বিয়ে করছি না,কারণ আমি একজন মেয়েকে ভালোবাসি। তো তোদের ছবিগুলো তুলতে গেলে তার কথা মনে পড়বে। যন্ত্রণা হবে। এমন বাসর ত আমিও চেয়েছিলাম কারো সঙ্গে। তাই বিক্ষিপ্ত মেজাজ নিয়ে চলে গিয়েছি। তাকে ভোলার জন্য সারারাত ক্লাবে মদ গিলেছি। ভোরে বাড়ি ফেরার সময় ঘটনা ঘটে।”

রাজ জুবায়েরের বুক চাপড়ে বলে,

“আবেগের বেগ সুনামির আকার থেকে ঝড়ের আকারে নিয়ে আয়। না হলে মরবি শালা। এবার তোর প্রেমের সবিস্তার কাহিনী শুনতে চাই।”

“আজ আর নয়। ভালো লাগছে না। সেই ইতিহাস অন্যদিন বলল। সারাংশ ত বলেই দিয়েছি।”

“আচ্ছা মাথায় রাখলাম। তবে বলতেই হবে তোকে। ”

আদুরী কোন সুযোগই পাচ্ছে না জুবায়ের ও রাজের জন্য বাইরে যেতে। অসুস্থতার জন্য জুবায়ের বাড়িতে। বাসর উপলক্ষে রাজ বাড়িতে। তবুও আদুরী একদিন সকালে সুযোগ করে বের হওয়ার জন্য ঘরের পিছনের দরজায় পা রাখে। তখন রাজ বাড়ির বাইরে ছিলো। জুবায়ের ঘুমে ছিলো।সেদিন শিখা কলেজে যায়নি কারণবশত।

“আদুরী আপা বাইরে গিয়ে কোন লাভ হবে না। শিখার চোখের সামনে তালুকদার পরিবারে কারো অসৎ উদ্দেশ্য সফল হবে না।”

অগ্নিঝরা কণ্ঠে বলল শিখা।

আদুরী ভড়কানো ও বিতৃষ্ণার চাহনি নিক্ষেপ করলো শিখার মুখপানে।

রাজবধূ ৪৭ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!