হযরত যায়িদ (রাঃ) -১৮পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন
প্রথমত, এই ধারণার পশ্চাতে কোনো সনদ নেই।
দ্বিতীয়ত, হযরত আব্বাসের (রাঃ) ফারায়েজ শাস্ত্রে তেমন কোনো বুৎপত্তি ছিল না।
এ কারণে এই ধরনের উদ্ভাবন তাঁর প্রতি আরোপ করা যুক্তির পরিপন্থী।
হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর ফারায়েজ শাস্ত্রে যতোটুকু খিদমাত রয়েছে, তা উপরোক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হয়েছে।
হযরত রাসূলে করীম (সাঃ)-এর বানী এসেছে: “আমর উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফারায়েজ বিশেষজ্ঞ হচ্ছেন জায়িদ”, যা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
হযরত জায়িদের (রাঃ) অসাধারণ বুদ্ধি, তীক্ষ্ণ মেধা ও অভিনব চিন্তাশক্তি দেখে সেই যুগের উলামা ও মাশায়েখ বিস্মিত হয়েছেন।
উলুমে শারা’য়িয়া ছাড়াও পার্থিব জ্ঞান ও বিজ্ঞানে তিনি যে কতখানি পারদর্শী ছিলেন, তা সম্পর্কেও কিছু আলোকপাত করা প্রয়োজন।
এখানে তার কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো।
যায়িদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহর (সাঃ) নির্দেশে মুতাবিক হিব্রু ও সিরীয়ানী ভাষা শিখেছিলেন। তাঁর মেধা এত তীক্ষ্ণ ছিল যে মাত্র পনেরো দিনের চেষ্টায় এই দু’টি ভাষায় এত দক্ষতা অর্জন করেছিলেন যে তিনি আনাসদের কাছে চিঠি লিখতে সক্ষম হন। পরে আরও চর্চার ফলে তাঁর দক্ষতা এত উন্নত হয়েছিল যে তিনি তাওরাত ও ইনজীলের ভাষা সমূহেও একজন বিশিষ্ট আলেমে পরিণত হন।
মাসউদী লিখেছেন, তিনি ফার্সী, রোমান এবং হাবশী ভাষাও জানতেন। এগুলি তিনি শিখেছিলেন মদীনায় যারা এই ভাষাগুলি জানতেন তাদের নিকট থেকে।
তৎকালীন আরবে হিসাব বা অংক শাস্ত্র তেমন প্রচলিত ছিল না। এ কারণে ইসলামের প্রথম পর্বে খারাজের হিসাবপত্র বা অন্যান্য গণনা রোমান ও ইরানীদের মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। আরববাসী হাজারের ওপর গণনা করতে জানতেন না এবং হাজারেরও ওপর সংখ্যার জন্য আরবীতে কোনো শব্দও ছিল না।
কিন্তু জায়িদ (রাঃ)-এর অংকে এতখানি পারদর্শিতা ছিল যে তিনি ফারায়েজ শাস্ত্রের অতি জটিল ও সূক্ষ্ম মাসায়ালা সমাধান করতেন এবং অংক ব্যবহার করে অর্থবন্টনও করতে পারতেন।
হিজরী ৮ম সনে হুনাইন যুদ্ধ হয়। এতে প্রায় বারো হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে। তাঁর আদমশুমারী এবং প্রদত্ত হিসাব অনুযায়ী রাসূলুল্লাহর (সাঃ)-এর মালে গনীমত বণ্টন সম্পন্ন হয়। প্রথমে তিনি মানুষের সংখ্যা নির্ণয় করতেন, তারপর মাল বণ্টন করতেন। একইভাবে ইয়ারমুকের যুদ্ধেও মালে গনীমত মদীনায় আসলে যায়িদই (রাঃ) তা বণ্টন করেন।
ইসলাম-পূর্ব আরবে লেখার প্রচলন তেমন ছিল না। সুপ্রাচীন কালের বর্ণনা সমূহ তারা স্মৃতিতে বংশপরম্পরায় ধরে রাখতো। জায়িদ (রাঃ) লিখতে জানতেন এবং তার সমকালে তিনি একজন বিখ্যাত লেখক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন ফরমান, চুক্তিপত্র, চিঠিপত্র লেখা ছাড়াও সুন্দর অঙ্কনও জানতেন।
খলীফা উমারের (রাঃ) সময়ে আরবে একটি ভয়ানক দুর্ভিক্ষ (আম্মুর রামাদাহ) দেখা দেয়। এই দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার জন্য তিনি মিসরের গভর্নর আমর ইবনুল আসকে (রাঃ) খাদ্যশস্য পাঠাতে বলেন। আমর ইবনুল আস (রাঃ) বিশটি জাহাজ ভর্তি করে খাদ্যশস্য রাজধানী মাদীনায় পাঠান। উমার (রাঃ) অত্যন্ত বিচলিতভাবে জাহাজের আগমন প্রত্যাশা করতেন।
হযরত যায়িদ (রাঃ) -২০পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
 
					