হযরত যায়িদ (রাঃ) -১৩পর্ব

হযরত যায়িদ (রাঃ) -১২পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আবদুর রহমান আসসুলামী একবার খলীফা উসমানকে কুরআন পাঠ করে শুনাতে চাইলে তিনি বললেন—

“তাহলে তো তুমি আমাকে মানুষের কাজ থেকে বিরত রাখবে। বরং তুমি যায়িদ ইবন সাবিতের কাছে যাও। এ কাজের জন্য তাঁর হাতে যথেষ্ট সময় আছে। তাঁকে শুনাও, তাঁর ও আমার পাঠ একই। দুজনের পাঠে কোন ভিন্নতা নেই।”

হযরত যায়িদের কিরাআতের সিলসিলা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সেহেতু তিনি কুরাইশদের মতো পাঠ করতেন; এ কারণে মানুষের ঝোঁক ছিল তাঁর দিকে। হযরত উবাই ইবন কা’বের জীবদ্দশায় যদিও তিনি এক্ষেত্রে সকলের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারেননি, তবে তাঁর মৃত্যুর পর গোটা মুসলিম বিশ্বের একক কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হন। বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম মদীনায় তাঁর নিকট ছুটে আসতো।

গযরদ যায়িদ (রাঃ) কুরআন মাজীদের যে কিরাআত বা পাঠ প্রতিষ্ঠা করেন, তা আজও বেঁচে আছে। ইবন আব্বাস, আবু আবদুর রহমান আসসুলামী, আবুল আলিয়া রাইয়্যাহী, আবু জাফর প্রমুখ ছিলেন কিরাআত শাস্ত্রে তাঁর ছাত্র।

পবিত্র কুরআনের পরেই মহানবীর স্থান। তিনি অন্যদের মতো বেশি হাদীস বর্ণনা করতেন না। তবে তাঁর বৈশিষ্ট্য ছিল যে, তিনি দিরায়াত বা যুক্তিকে কাজে লাগাতেন।

হযরত রাফে ইবন খাদীজা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন—

“রাসূল (সা) ভূমি ইজারা দিতে নিষেধ করেছিলেন। এ কথা যায়িদের (রাঃ)-এর কানে গেলে তিনি বললেন: ‘আল্লাহ রাফেকে ক্ষমা করুন! তাঁর এত বেশি হাদীস বর্ণনার রহস্য আমরা জানি। আসল ঘটনা হলো, দুই ব্যক্তি ঝগড়া করছিল। রাসূল (সা) তা দেখে বলেন, এই যে যদি অবস্থা হয় তাহলে ইজারার ভিত্তিতে ভূমি চাষ করা উচিত নয়।’”

রাফে শুধু শেষের অংশটুকু শুনেছেন।

হযরত আয়িশা (রাঃ) যুবইরের (রাঃ) সন্তানের নিকট বর্ণনা করেন, যে রাসূল (সা) আসরের পরে তাঁর ঘরে দু রাকাত নামাজ আদায় করেছিলেন। তাঁরা এ দু রাকাতকে সুন্নাত মনে করে আদায় করা শুরু করেন।

এ কথা যায়িদ (রাঃ) জানতে পেরে বললেন—

“আল্লাহ আয়িশাকে ক্ষমা করুন! হাদীসের জ্ঞান তাঁর চেয়ে আমাদের বেশি আছে। আসরের পরে নামাজ আদায়ের কারণ হলো, দুপুরে কয়েকজন বেদুইন রাসূলুল্লাহর (সা)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। তারা প্রশ্ন করছিল এবং রাসূল (সা) উত্তর দিচ্ছিলেন। এভাবে জুহরের নামাজের সময় হলে তা আদায় করেন। ঘরে ফেরার পর স্মরণ হয় যে, জুহরের ফরজের পরের দু রাকাত সুন্নাত আদায় করেননি। তখন সেখানেই সেই দু রাকাত নামাজ আদায় করেন।”

যায়িদ (রাঃ) বলেন—

“আল্লাহ আয়িশাকে ক্ষমা করুন। আমাদের বেশি জানা আছে যে, রাসূল (সা) আসরের পরে নামাজ পড়তে নিষেধ করেননি।”

হযরত যায়িদ (রাঃ) -১৪পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!