হযরত যায়িদ (রাঃ) -১০পর্ব

হযরত যায়িদ (রাঃ) -৯পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন

হযরত আবু আইউব (রাঃ) ছিলেন বিশাল মর্যাদার অধিকারী একজন আনসারী সাহাবী। তাঁর সামনে হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর চুপ করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় ছিল না।

তাহজীবুল কামাল গ্রন্থে হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর একাধিক স্ত্রী ও ঊনত্রিশজন ছেলে-মেয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে প্রখ্যাত শহীদ সাহাবী হযরত সা’দ ইবন রাবী’ আল-আনাসারীর কন্যা একজন ছিলেন।

হযরত সা’দ ইবন রাবী’ (রাঃ) উহুদে শহাদাত বরণ করেন। তিনি দুই কন্যা ও স্ত্রী রেখে যান। স্ত্রী তখন গর্ভবতী ছিলেন। গর্ভের এই সন্তানই পরবর্তীকালে উম্মু সা’দ বা উম্মুল আলা, যিনি সুন্দর নাম জামীলা পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনিই হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর সম্মানিত স্ত্রী হন।

সা’দ (রাঃ) যখন মারা যান, তখন মীরাসের আয়াত নাযিল হয়নি। এ কারণে, জাহিলী প্রথা অনুযায়ী সা’দের ভাই গোটা মীরাস আত্মসাৎ করতে চাইছিল। তখনই রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট মীরাসের আয়াত নাযিল হয়। তিনি সা’দের (রাঃ) ভাইকে ডেকে নির্দেশ দেন—

দুই কন্যাকে ২/৩ অংশ দেওয়া হবে এবং স্ত্রীকে ১/২ অংশ দেওয়া হবে, বাকী অংশ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো।

তবে তখনও গর্ভের সন্তানের জন্য মীরাস দেওয়ার বিধান চালু হয়নি। পরবর্তীকালে খলীফা উমার (রাঃ) গর্ভের সন্তানদের মীরাস প্রদানের বিধান চালু করলে হযরত যায়িদ (রাঃ) তাঁর স্ত্রীকে বললেন—

“তুমি চাইলে তোমার পিতার মীরাসের ব্যাপারে তোমার বোনদের সঙ্গে আলোচনা করতে পার।”

উম্মু সা’দ বললেন—

“না, আমি আমার বোনদের কাছে কিছুই চাইবো না।”

হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর সন্তানদের মধ্যে খারিজ ছিলেন সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। তিনি বিখ্যাত সাতজন ফক্বীরের একজন এবং উম্মু সা’দের গর্ভজাত সন্তান। তাঁর দ্বিতীয় সন্তান এবং একজন পৌত্রও নিজেদের যুগের বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা হাদীস শাস্ত্রের ইমাম হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।

হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাসের সংখ্যাও ছিল অনেক। তাদের মধ্যে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ছিলেন সাবিত ইবন উবাইদ এবং ওহাইব।

হযরত যায়িদ (রাঃ)-এর মৃত্যু সন সম্পর্কে প্রচুর মতভেদ আছে। ওয়াকিদীর মতে, হিজরী ৪৫ সনে তিনি মারা যান। আলী আল-মদীনীর মতে হিজরী ৫১ সন, আহমাদ ইবন হাম্বল ও আবু হাফ্স আল-ফাল্লাসের মতে হিজরী ৫১ সন, এবং আল-হায়সাম ইবন আদী ও আইয়াহইয়া ইবন মুঈনের মতে হিজরী ৫৫ সনে তিনি ইন্তিকাল করেন।

ইবন হাজার (রহ) বলেন, অধিকাংশের মতে হিজরী ৪৫ সনে তিনি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪/৫৫ বছর। মারওয়ান ইবন হাকাম তখন মদীনার আমীর। তাঁর সঙ্গে যায়িদ (রাঃ)-এর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। তিনিই জানাযার নামাজ পড়ান।

হযরত যায়িদ (রাঃ) -১১পর্ব -পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!