হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর বিবাহ-৬ষ্ঠ পর্ব
হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর বিবাহ-৫ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তখন রাণী বিলকিস বললেন, তিনি আমার চেয়ে অনেক বড় সম্রাট এবং অনেক বড় শক্তিশালী তাঁর সাথে যুদ্ধ করে দেশ বিধ্বস্ত করায় কোন লাভ নেই। তবে শাহান শাহের শুধু ধমকের সম্মুখে মুসলমান হওয়া সম্ভব নয়। তাঁর কিছু নবুয়াতীর মো’জেযা দেখা আমাদের কাম্য। সে হিসাবে তাঁর মো’জেযা দর্শনের উদ্দেশ্য আমি দ্বিতীয় বার কিছু পরীক্ষা মূলোক বিষয় নিয়ে তাঁর নিকট কাছেদ প্রেরণ করতে চাই। রানীর উক্তি শুনে পরিষদ বর্গ একমত হল।
তখন রাণী কিছু সংখ্যক দাসদাসীকে একই পশাক পরিয়ে সাজালেন, ছিদ্র বিহীন কয়েক টুকরা ইয়াকুত পাথর কৌটায় ভোরে দিলেন। কিছু সংখ্যক তেজী ও অলস ঘোড়া প্রেরণ করলেন। সব শেষে একটি খালি বোতল দিয়ে দিলেন। কাছেদকে বলে দিলেন প্রথমে শাহান শাহকে তোমরা দাস-দাসিকে পৃথক করে দিতে বলবে। পরে লোহা বা কোন যন্ত্র দ্বারা ছিদ্র না করে অন্য উপায়ে ইয়াকুত পাথর ছিদ্র করে গেথে দিতে বলবে।
তৃতীয়ত তেজী ও অলস ঘোড়া গুলোকে পৃথক করে দিতে বলবে। চতুর্থ বোতলটিতে এমন ভাবে পানি ভোরে দিতে বলবে যা আকাশ অথবা মাটির পানি যেন না হয়, কাছেদেরা রাণীর নির্দেশ মোতাবেক এ সপ্ত খণ্ড জিনিস নিয়ে শাহান শাহের দরবারে উপস্থিত হল এবং শাহান শাহের সম্মুখে রাণীর বক্তব্য পেশ করল। হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর প্রথমে একই পোশাক পরিহিত দাস দাসীদেরকে হাত ধুতে আদশ দিলেন। তখন পুরুষগণ শুধু আঙ্গুল ধৌত করল এবং মহিলারা হাতের কব্জি পর্যন্ত ধৌত করল। শাহান শাহ তখন বলে দিলেন এরা পুরুষ এরা মহিলা। দ্বিতীয়ত ইয়াকুত পাথর মাঠিতে রেখে পাথর ছিদ্রকারি এক প্রকার কীটকে উহা ছিদ্র করার আদেশ দিলেন। তৃতীয়ত ঘোড়াগুলোর সম্মুখে ছোলা বুট ও ঘাস হাজির করতে বললেন, দেখা গেল অলস ঘোড়া গুলো তাড়াহুড়া করে ছোলা বুট খেতে আরম্ভ করল এবং তেজী ঘোড়া গুলো একটু অপেক্ষা করে ঘাস খেতে আরম্ভ করল।
তখন তিনি অলস ও তেজী ঘোড়ার পার্থক্য দেখিয়ে দেন। অতপর তিনি ঘোড়ার পৃষ্ঠে ছওয়ারী উঠিয়ে দৌড়াতে আদেশ দেন। দীর্ঘ সময় দৌড়ানোর পরে ঘোড়াগুলো ফিরে আসে তখন তাদের শরীর থেকে টপটপ করে ঘাম পড়ছিল। শাহান শাহ সে ঘামগুলোকে বোতল ভর্তি করে কাছেদকে নিতে বললেন। কাছেদরা শাহেন শাহার কাজ দেখে অবাক হল এবং তারা দ্রুত রাণির দরবারে গিয়ে সবিস্তার বর্ণনা দিল। তখন রাণী বিলকিস বললেন, আমি যাব শাহান শাহের দরবারে। তাঁর নিকট আত্নসমর্পণ করব।