মক্কা এবং তায়েফে চরম সংকট-শেষ পর্ব
মক্কা এবং তায়েফে চরম সংকট-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জঘন্যতম অপরাধী ও ঘোর দুশমন হতে প্রতিশোধ ও ঘোর দুশমন হতে প্রতিশোধ লওয়াব এবং তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করার মহান সুযোগ তিনি লাভ করলেন। কিন্তু অমানুষিক অত্যাচার, নির্মম ব্যবহার কঠোর নির্যাতন ও অবিশ্রান্ত প্রস্তরাঘাতের পরও রহমাতুল্লিল আলামীন যেই উত্তর দিয়েছিলেন তাতে ফেরেশতাকুল সরদার হযরত জিব্রাইল (আঃ) অতিশয় বিস্মিত হয়ে যান। উম্মতের দরদী নবী উত্তর করলেন, হে জিব্রাইল! আমাকে আল্লাহ পাক রহমত করে প্রেরণ করেছেন। আমার কওম আমাকে চিনতে পারে নি বলে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে আমি তাদের ধ্বংস কামনা করতে পারি না। তারা ধ্বংস হয়ে গেলে আমি কার নিকট আল্লাহর দ্বীন প্রচার করব? আমি তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও তাদের হেদায়াত প্রার্থনা করি।
তারা যদিও আমাকে চিনতে পারে নি হয়ত তাদের সন্তানের মধ্যে এমন লোক পয়দা হবে আল্লাহর বন্দেগী করবে।
হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) একদিন রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল! ওহুদের দিবস হতে অধিক মুসীবতের দিবস আপনার জীবনে এসেছে কি? তিনি উত্তর করলেন, আমার জীবনের সর্বাপেক্ষা কঠিন দুর্যোগের দিবস ছিল তায়েফের দিবস।
তায়েফ হতে মক্কায় প্রত্যাবর্তনের পথে রাসূল (সাঃ) বাতনে নাখরা নামক স্থানে অবস্থান করেন। তিনি সেখানে ফজরের নামাজ পড়ার সময় সিরিয়া এলাকায় নসীবীন নামক স্থানে হতে সাত জন জ্বীন এসে তাঁর কুরআন পাঠ শুনল। তিনি বাতনে নাখলায় দশ দিন অবস্থান করেছিলেন।
বাতনে নাখলায় দশ দিন অবস্থান করার পর মক্কার দিকে রওয়ানা দিলেন। হেরা শুহায় যেয়ে পুনরায় অবস্থান করেন এবং ভাবতে লাগলেন মক্কায় আমাদের কোন আশ্রয়স্থল নেই আমরা কার নিকট যাবো? কাফেরগণ আমাদেরকে আশ্রয় না দিলে আমরা কি করে সেখানে উঠব। তাই তিনি একজন লোক পাঠিয়ে মক্কাবাসীকে বললেন, যদি আমাকে তোমরা নিরাপত্তা প্রদান কর তাহলে মক্কায় আসব নচেৎ চলে যাব। এ প্রস্তাবে মক্কার কেউ সাড়া দিল না। শুধুমাত্র মুতয়েম রাসূল (সাঃ)-এর করুন অবস্থার প্রতি লক্ষ্য করে সন্তুষ্ট চিত্তে তাঁকে নিজ আশ্রয়ে হেরা শুহা হতে নিয়ে আসলেন এবং হেরেম শরীফে গিয়ে ঘোষণা দিলেন, আমি মুহাম্মাদকে নিজ আশ্রয় এনেছি। আমি মুহাম্মদের দ্বীন গ্রহণ করে নি। কিন্তু আমি তার সাহায্যকারী থাকব। যদি তেজ থাকে কোন প্রকার কষ্ট দেয়ার ইচ্ছা করে সে যেন আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত থাকে। মুতয়েমের এ ঘোষণায় কাফেরগণ নিস্তব্ধ হয়ে গেল কেউ আর প্রকাশ্যে রাসূল (সাঃ) কে কষ্ট দেয়ার সাহস করল না। তাই তিনি বিদেশী আগুন্তক লোকদের নিকট দ্বীন প্রচার করতে থাকেন। বিশেষ করে হজ্জের মৌসুমে।