হযরত আদম(আঃ) এর পার্থিব জীবন-১ম পর্ব

হযরত আদম (আঃ)- আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ক্ষমা লাভের পর কিছুটা নিশ্চিন্ত হলেন বটে কিন্তু জীবনযাপনের ক্ষেত্রে জটিলটার মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করতে লাগলেন। তিনি ও বিবি হাওয়া এ দীর্ঘদিন গাছের ফলমূল ও পানি পান করে জীবন ধারণ করলেন। যা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর ও পীড়াদায়ক। এ অবস্থায় হযরত জিব্রাইল (আঃ) বেহেস্ত থেকে এক জোড়া বলদ এক জোড়া গাভী এনে দিলেন। তার সাথে কিছু গমের বীজ ও নিয়ে আসলেন। অতঃপর বলদ দ্বারা চাষাবাদ করে ফসল উৎপাদন করার পদ্ধতি তিনি শিখিয়ে দিলেন। গম মাটিতে ফেলার সাথে সাথে হযরত আদম (আঃ) সাত ঘন্টার মধ্যে পাকা গম লাভ করতে সক্ষম হলেন।

এর খোসা ছাড়ানো ও গুড়া করে রুটি তৈরির পদ্ধতি বিবি হাওয়াকে শিখিয়ে দেয়া হল। কিন্তু রুটি ভাজার জন্য আগুনের অভাব দেখা দিল। তখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) আল্লাহ তায়ালার আদেশক্রমে দোজখ থেকে সামান্য ধোয়া নিয়ে আসলেন। যখন ঐ ধোয়া মাটির উপর রাখা হল তখন মাটি নিমিষের মধ্যে জ্বলে এক গর্তের সৃষ্টির হল। উক্ত গর্ত দ্বারা দোযখের ধুয়া দোযখে গিয়ে পতিত হল। এভাবে কয়েক বার চেষ্টা করে দোযখের ধুয়া পৃথিবীতে রাখা সম্ভব হল না। তখন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশক্রমে উক্ত ধুয়া রহমতি দরিয়ায় সাতবার ধুয়ে পৃথিবীতে আনা হল। তখন উহা স্বাভাবিক আগুন হিসেবে প্রয়োজনীয় জ্বালানী কার্জ সমাধা করে।

জনৈক মুফাসসের লিখেছেন দোযখের ধুয়া দোযখে চলে জাবার পরে আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (আঃ)-কে চকমকি পাথর ঘসে আগুন জ্বালানোর নির্দেশ দেন। সেভাবে হযরত আদম (আঃ) আগুনের সন্ধান লাভ করেন। আগুনের ব্যবস্থা হবার পরে রুটি তৈরি, মাংস পাক করা ও অন্যান্য জরুরী প্রয়োজন সমাধা করা আদম ও বিবি হাওয়ার পক্ষে সহজ হয়। এরপর জিব্রাইল (আঃ) লোহার ব্যবহার, স্বর্ণের ব্যবহার, শিক্ষাদীক্ষার পদ্ধতি, ঘর তৈরির জ্ঞান ইত্যাদি এক এক করে হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়াকে শিখিয়ে দেন। যাতে করে শেষ জীবনে হযরত আদম (আঃ) বিনা পরিশ্রমে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনেক কঠিন ও দুরুহ কাজ সহজে সমাধান করতে সক্ষম হন।

সরল মতি হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া বেহেস্তে থাকাকালীন সময় যতটা সহজ সরল ছিলেন, পৃথিবীতে আগমনের পরে তাঁর চেয়ে বহুগুণ সতর্ক ও সাবধান হন। শয়তানের পক্ষে পৃথিবীতে এসে হযরত আদম (আঃ)-কে দ্বিতীয়বার আর কোন বিপদে ফেলা সম্ভব হয় নি। বরং হযরত আদম (আঃ)-কে ধোকা দিতে গিয়ে শয়তানকে অনেক ক্ষেত্রে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে শয়তান হযরত আদম (আঃ)-এর সন্তানদের মধ্যে নিজ প্রভাব ও প্রসারতা বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

হযরত আদম(আঃ) এর পার্থিব জীবন-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।