হযরত দাউদ আঃ এর মো’জেযা-১ম পর্ব
হযরত দাউদ (আঃ) হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর পুত্র ইয়াহুদের বংশধর। তিনি রাজ্য লাভের চল্লিশ বছর পরে নবুয়াতী লাভ করেন। তিনি প্রথম জীবনে ছিলেন একজন দরিদ্র মেষ পালক। পরবর্তী সময়ে আল্লাহ তায়ালা তাকে অসিম যোগ্যতা দান করে যার মাধ্যমে তিনি নিজ প্রতিভা বিকাশে সুযোগ লাভ করেন। তাঁর যোগ্যতার অংশ বর্ণনা পুথি-পুস্তকে লিখিত রয়েছে। তাই এক কথায় তাকে বলতে হয় তিনি ছিলেন পরাক্রমশালী বাদশা ও শ্রেষ্ঠ নবীদের একজন। তিনি ছিলেন যুগের শ্রেষ্ঠ বিদ্যান। মুদ্ধিমান বিচক্ষন। রাজ্য শাসনের ক্ষেত্রে ছিলেন অতুলনীয়। বিচারের ক্ষেত্রে ছিলেন কঠোর ইনসাফগার। তাঁর রাজ্য ছিল বিশাল। পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ ছিল তাঁর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালা হযরত দাউদ (আঃ) কে নিজ খলিফা বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
হযরত দাউদ (আঃ) কে আল্লাহ তায়ালা এমন মধুর কষ্ঠ দান করেছিলেন, যা তুলনা বিহীন। তিনি যখন তাঁর প্রতি জাবুর কিতাব তেলাওয়াত করেন, নদীর প্রবাহিত পানি থেকে যায়। বনের পশু পক্ষী তাঁর পাশে জমায়েত হয়ে তেলাওয়াত শুনত। গাছপালা ও পাহাড় পর্বত তাঁর সুরের সাথে দুলত। মনে হত যেন তাঁর সাথে শ্বর মিলিয়ে তেলাওয়াত করছে। হযরত দাউদ (আঃ) এর তেলাওয়াতের আওয়াজ চল্লিশ মাইল পর্যন্ত পৌঁছাত। এ চল্লিশ মাইলের সকল প্রানী তাঁর তেলায়াতের সময় মনমুগ্ধের ন্যায় দুলত এবং মুখ মিলিয়ে তেলাওয়াতে অংশগ্রহন করত। ধর্মদ্রোহীরা এ তেলাওয়াত শুনলে বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে যেত।
হযরত দাউদ (আঃ) কে আল্লাহ তায়ালা আর এক বিরাট ক্ষমতার অধিকারি করেছিলেন। সেটা হল তিনি লোহা হাতে নিলে নরম মোমের মত হয়ে যেত। তিনি সে লোহা দিয়ে ইচ্ছেমত অস্ত্র ও লৌহবর্ম তৈরি করে নিতেন। পৃথিবীতে তিনি সর্বপ্রথম লৌহবর্ম তৈরি করেন। যা আর কার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই তিনি লৌহবর্ম ও অন্যান্য লৌহজাত আসবাবাদী তৈরি করে বিক্রয় করতেন। উক্ত আসবাব বিক্রয়ের টাকা গরিবদের মধ্যে বিতরণ করতেন। আত্নীয় স্বজনকে দিতেন এবং বিক্রয় করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি রাজকোষ থেকে কোন অর্থ গ্রহন করতেন না। হযরত দাউদ (আঃ) এর ন্যায় আর একজন আর্দশ রাষ্ট্রপ্রধান পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করছেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সকল নবী রাসূলগণকে আল্লাহ তায়ালা কঠর পরীক্ষার সম্মুখীন করে থাকেন। এটাই বিচারিত নিয়ম। যার উপর যত বড় কঠিন পরিক্ষা আসে, তাকে সে পরিমাণ উচ্চমর্যাদার অধিকারি করে দেওয়া হয়। এ পরীক্ষার নাম এবতেলায়ে আম্বিয়া। হযরত দাউদ (আঃ) কেও সে নিয়মের আওতায় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে।