হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবিসিনিয়ায় হিজরত
নবুয়তের পঞ্চম বর্ষের ঘটনা। কাফেরগণের অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যায়। সাহাবাগণের উপর নির্মম ও নিষ্ঠুর অত্যাচারে মহানবী (সাঃ)-এর প্রাণ কেঁদে উঠল। তাঁর মনোবেদনার অন্ত রইল না। তাই তিনি সাহাবাগণকে বললেন, আবিসিনিয়া রাজ্যের বাদশাহ নাজ্জাশী একজন ন্যায় বিচারক হৃদয়বান বাদশাহ। তিনি কারও প্রতি উৎপীড়ন করেন না। তোমরা কাফেরদের উৎপীড়ন হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইচ্ছা করলে সেখানে চলে যেতে পার। এ আদেশ পেয়ে সাহাবাদের এক জামাত আবিসিনিয়ায় হিজরত করার প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। হযরত আবু বকরও যেতে ইচ্ছা করলেন। কিন্তু রাসূল (সাঃ) তাঁকে যেতে নিষেধ করেন।
মুসলমানের এ দলটি যখন বন্দরে উপস্থিত হলেন পেলেন, একটি বাণিজ্য জাহাজ আবিসিনিয়ার অভিমুখী যাত্রা করতেছে। জাহাজের পরিচালক বা নাবিকের সাথে আলাপ আলোচনা করে অতি সামান্য ভাড়ায় তাঁরা জাহাজে আরোহণ করলেন। মাথা পিছু মাত্র পাঁচ দেরহাম। কোরাইশগণ সংবাদ পেয়ে বন্দরে ছুটে যায়। কিন্তু তখন জাহাজ বন্দর ত্যাগ করে চলে গিয়েছে। এ ঘটনা নবুয়তের পঞ্চম বর্ষে রজব মাসে হয়েছিল। তাই ছিল মুসলমানের প্রথম হিজরত এবং এটা অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে হয়েছিল। যারা এ দলে আবিসিনিয়ার দিকে হিজরত করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- হযরত ওসমান, হযরত যোবাইর, হযরত মুসআব, হযরত আব্দুর রহমান প্রমুখ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)। আরও ছিলেন হযরত আবু হোজায়ফা, হযরত আবু ছালমা, হযরত ওসমান বিন মাজউন, আমের বিন রাবেয়া, আবু ছাবরা, হাতেব, আবদুল্লাহ বিন মাসউদ ও হযরত হোছাইন (রাঃ)। মোট বারজন পুরুষ এবং তাঁদের সঙ্গে ছিলেন চারজন মহিলা। তাঁরা হচ্ছেন হযরত ওসমানের স্ত্রী বিনতে রাসূল (সাঃ) হযরত রোকেয়া, আবু হোজায়ফার স্ত্রী ছাহলা, আবু ছালমার স্ত্রী উম্মে ছালমা ও আমেরে স্ত্রী লায়লা।
তাঁদের পর হযরত জাফর ও অন্যান্য আরও কয়েকজন হিজরত করেন। সর্বমোট তিরাশি জন বয়স্ক পুরুষ হিজরত করেন।