হযরত আলী (রাঃ) এর জন্ম, বংশ ও শৈশবকাল – পর্ব ১

৬০০ ঈসায়ী সনে বিখ্যাত কুরাইশ বংশেই হযরত আলী (রাঃ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ৩০ বছরের ছোট ছিলেন। হযরত ফাতেমা বিনতে আসাদ কা’বা ঘর তাওয়াফ করা অবস্থায় তাঁর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন তাঁর মাতা ফাতেমা সাথে সাথে কা’বা ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়লেন। সে কা’বা ঘরের ভিতরেই হযরত আলী (রাঃ)-এর জন্ম হয়েছিল।

তাঁর মাতা তাঁর নাম রাখেন হায়দার আর তাঁর পিতা নাম রাখেন আলী। তখন আরবে কারও এ নাম ছিল না বা রাখা হয়নি। এ কারণে আবূ তালিব তাকে ইলহামী নাম বলে উল্লেখ করলেন। তাঁর উপনাম ছিল আবুল হাসান। এজজন জ্ঞান আরোহণ করার জন্য হযরত আলী (রাঃ) শৈশবকাল হতে বিদ্যা পিপাসু ছিলেন।

কিন্তু তার পিতা আবু তালিব তেমন স্বচ্ছল ছিলেন না। এ সামান্য ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাঁর সাংসারিক জীবিকা অর্জন করতেন। আবদুল মুতালিবের মৃত্যুর পর শিশু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লালান পালনের ভারও তাঁর উপর ছিল। শিশুকাল হতেই হযরত আলী (রাঃ) ক্রীড়া কৌতুক এবং নানারূপ শক্তির প্রতিযোগিতার প্রতি বেশি আসক্ত ছিলেন বলে জানা যায়।

বাল্যকালে সঙ্গি সাথীদের সাথে তলোয়ার, ধনুক ইত্যাদি নিয়ে খেলা করাই ছিল তার নেশা। তাছাড়া তিনি যুদ্ধবিদ্যার কলাকৌশলও পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন। বিক্রম ও সাহসিকতার বীজ তাঁর অন্তরে বাল্যকালেই অঙ্কুরিত হয়েছিল পরবর্তী জীবনে তিনি সাহসী বীরপুরুষ শক্তিমান ও শক্তিশালীরুপে পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ লাভ করেছিলেন। শৈশবকাল হতেই তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল খুবই বেশি। একবার যা তিনি শুনতেন তা তিনি ঐ সময়েই বলে দিতে পারতেন। তা তিনি এমন স্মরণ রাখতে পারতেন।

তখনকার দিনে আরবে ছিল কবিতা আর ছন্দের দেশ। ছেলে বুড়া সবাই নানারূপ কবিতা আবৃতি করে খুব আনন্দ উপভোগ করতে ভালবাসতেন। হযরত আলী (রাঃ)ও ছোটবেলা হতে কবিতার দিকে বিশেষভাবে আসক্ত ছিলেন। পরিণত বয়সে তিনি বহু জ্ঞান গর্ব কবিতা রচনা করেছিলেন। বিবি খাদিজাকে বিয়ে করার পর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যখন নিজে উপার্জনক্ষম হলেন তখন চাচার দারিদ্রতা লক্ষ্য করে তিনি হযরত আলী (রাঃ)-কে নিজের সংসারে নিয়ে আসলেন।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী (রাঃ)কে অধিক ভালোবাসতেন বলে জীবনের বেশির ভাগ সময় তার সঙ্গীরুপে ছিলেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নবুয়্যত প্রাপ্ত হন তখন হযরত আলীর (রাঃ)-এর বয়স ছিল মাত্র দশ বছর।

হযরত আলী (রাঃ) এর জন্ম, বংশ ও শৈশবকাল – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন প্রাচ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, লেখক, গবেষক ও সমাজ সংস্কারক।…

অপু ও ফলচুরি রহস্য

মহানগরের কোলাহলের মাঝে, ব্যস্ত জনপথের কিছুটা দূরে একফালি সবুজ ল্যান্ডস্কেপ । সদ্য গড়ে ওঠা আবাসন…

ভালুক ও কাঠবিড়ালী

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘খুকি ও কাঠবিড়ালী’ কবিতাটি কম-বেশি সবাই পড়েছে। এ কবিতাটির কারণেই ছোট্ট…

হযরত আলী (রাঃ) এর জন্ম, বংশ ও শৈশবকাল – পর্ব ১

৬০০ ঈসায়ী সনে বিখ্যাত কুরাইশ বংশেই হযরত আলী (রাঃ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর ৩০ বছরের ছোট ছিলেন। হযরত ফাতেমা বিনতে আসাদ কা’বা ঘর তাওয়াফ করা অবস্থায় তাঁর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন তাঁর মাতা ফাতেমা সাথে সাথে কা’বা ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়লেন। সে কা’বা ঘরের ভিতরেই হযরত আলী (রাঃ)-এর জন্ম হয়েছিল।

তাঁর মাতা তাঁর নাম রাখেন হায়দার আর তাঁর পিতা নাম রাখেন আলী। তখন আরবে কারও এ নাম ছিল না বা রাখা হয়নি। এ কারণে আবূ তালিব তাকে ইলহামী নাম বলে উল্লেখ করলেন। তাঁর উপনাম ছিল আবুল হাসান। এজজন জ্ঞান আরোহণ করার জন্য হযরত আলী (রাঃ) শৈশবকাল হতে বিদ্যা পিপাসু ছিলেন।

কিন্তু তার পিতা আবু তালিব তেমন স্বচ্ছল ছিলেন না। এ সামান্য ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাঁর সাংসারিক জীবিকা অর্জন করতেন। আবদুল মুতালিবের মৃত্যুর পর শিশু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লালান পালনের ভারও তাঁর উপর ছিল। শিশুকাল হতেই হযরত আলী (রাঃ) ক্রীড়া কৌতুক এবং নানারূপ শক্তির প্রতিযোগিতার প্রতি বেশি আসক্ত ছিলেন বলে জানা যায়।

বাল্যকালে সঙ্গি সাথীদের সাথে তলোয়ার, ধনুক ইত্যাদি নিয়ে খেলা করাই ছিল তার নেশা। তাছাড়া তিনি যুদ্ধবিদ্যার কলাকৌশলও পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন। বিক্রম ও সাহসিকতার বীজ তাঁর অন্তরে বাল্যকালেই অঙ্কুরিত হয়েছিল পরবর্তী জীবনে তিনি সাহসী বীরপুরুষ শক্তিমান ও শক্তিশালীরুপে পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ লাভ করেছিলেন। শৈশবকাল হতেই তাঁর স্মৃতিশক্তি ছিল খুবই বেশি। একবার যা তিনি শুনতেন তা তিনি ঐ সময়েই বলে দিতে পারতেন। তা তিনি এমন স্মরণ রাখতে পারতেন।

তখনকার দিনে আরবে ছিল কবিতা আর ছন্দের দেশ। ছেলে বুড়া সবাই নানারূপ কবিতা আবৃতি করে খুব আনন্দ উপভোগ করতে ভালবাসতেন। হযরত আলী (রাঃ)ও ছোটবেলা হতে কবিতার দিকে বিশেষভাবে আসক্ত ছিলেন। পরিণত বয়সে তিনি বহু জ্ঞান গর্ব কবিতা রচনা করেছিলেন। বিবি খাদিজাকে বিয়ে করার পর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যখন নিজে উপার্জনক্ষম হলেন তখন চাচার দারিদ্রতা লক্ষ্য করে তিনি হযরত আলী (রাঃ)-কে নিজের সংসারে নিয়ে আসলেন।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী (রাঃ)কে অধিক ভালোবাসতেন বলে জীবনের বেশির ভাগ সময় তার সঙ্গীরুপে ছিলেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন নবুয়্যত প্রাপ্ত হন তখন হযরত আলীর (রাঃ)-এর বয়স ছিল মাত্র দশ বছর।

হযরত আলী (রাঃ) এর জন্ম, বংশ ও শৈশবকাল – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

খৃষ্টান মহিলার প্রেমে পাগল হওয়ার ঘটনা

বুজুর্গ ব্যক্তি বললেন, একদা আমি হযরত হাসান বসরী (রহঃ) এর দরবারে বসেছিলাম। এমন সময় আমাদের…

এক বুজুর্গের কসমের উছিলায়

হযরত আবূ আব্দুল্লাহ কাররাশী (রাঃ) বলেন, একবার মুশরিক সৈন্যরা স্পেন শহরে প্রবেশ করে বিনা যুদ্ধে…

স্বপ্ন যোগে রাসূলের দিদার।

ইমাম কাফেলায় হাবীবের ঈমানী চেতনার প্রকাশ্য শক্তি যেন কয়েকগুণ বাড়াল। ইমাম হোসাইন (রাঃ) গভীর রাতে…