ওহুদের দিন নবী কারীম (সাঃ )-এর কষ্ট সহ্য করা – পর্ব ১

হজরত আনাস (রাঃ) ওহুদের যুদ্ধের দিন রাসূল (সাঃ)-এর সামনের নিচের দাঁত মুবারক শহীদ হইয়াছিল। তিনি আপন চেহারা মুবারক হইতে রক্ত মুছিতেছিলেন এবং বলিতেছিলেন, সেই জাতি কিভাবে কল্যাণ লাভ করিবে যাহারা তাহাদের নবীর মাথা যখম দিয়াছে এবং তাঁহার দাঁত ভাঙ্গিয়া দিয়াছে, অথচ তিনি তাহাদিগকে আল্লাহর প্রতি আহবান জানাইতেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে কোরআনের এই আয়াত নাযিল হইল – ليس لك من الأمر شيء

অর্থঃ এই ব্যাপারে আপনার কোন এখতিয়ার নাই, হয় আল্লাহ তায়ালা তাহাদিগকে তওবা (করিবার তৌফিক প্রদান করিয়া ক্ষমা করিয়া) দিবেন অথবা তাহাদিগকে শাস্তি প্রদান করিবেন, কারণ তাহারা অন্যায়ের উপর রহিয়াছে।

হজরত আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, ওহুদের যুদ্ধের দিন রাসূল (সাঃ )-এর চেহারা মুবারক আহত হইলে হজরত মালিক ইবনে সিনান (রাঃ) সামনের দিক হইতে আসিয়া যখমের স্থান হইতে রক্ত চুষিয়া লইলেন এবং তাহা গিলিয়া ফেলিলেন। রাসূল (সাঃ) বলিলেন, যে ব্যক্তি এমন লোককে দেখিতে ইচ্ছা করে যাহার রক্তের সহিত আমার রক্ত মিশিয়া গিয়াছে সে যেন মালিক ইবনে সিনানকে দেখিয়া লয়। (জামউল ফাওয়ায়েদ)

হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হজরত আবু বকর (রাঃ) যখনই ওহুদের দিনের কথা আলোচনা করিতেন বলিতেন, ওহুদের দিন তো সম্পুর্ণই তালহার অংশে। তারপর বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করিতেন এবং বলিতেন, যুদ্ধক্ষেত্র হইতে ফিরিয়া যাওয়ার উপক্রমকারীদের মধ্যে যাহারা পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে ফিরিয়া আসিয়াছিল তন্মধ্যে আমিই প্রথম ছিলাম।

আমি ফিরিয়া দেখিলাম, এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ)-এর হেফাজতের জন্য আল্লাহর রাহে প্রাণপণ লড়াই করিতেছে। মনে মনে বলিলাম, এই ব্যক্তি যেন তালহা হন। কেননা আমি যে সওয়াব হইতে বঞ্চিত হইয়াছি তাহা যেন আমার গোত্রের কেহ লাভ করেন, ইহাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

ওহুদের দিন নবী কারীম (সাঃ )-এর কষ্ট সহ্য করা – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

অপু ও ফলচুরি রহস্য

মহানগরের কোলাহলের মাঝে, ব্যস্ত জনপথের কিছুটা দূরে একফালি সবুজ ল্যান্ডস্কেপ । সদ্য গড়ে ওঠা আবাসন…

ভালুক ও কাঠবিড়ালী

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘খুকি ও কাঠবিড়ালী’ কবিতাটি কম-বেশি সবাই পড়েছে। এ কবিতাটির কারণেই ছোট্ট…

গাজা দিবস

শিশু-কিশোর বন্ধুরা, কেমন আছো তোমরা? আশা করি যে যেখানে আছো ভাল ও সুস্থ আছো। তোমরা…

ওহুদের দিন নবী কারীম (সাঃ )-এর কষ্ট সহ্য করা – পর্ব ১

হজরত আনাস (রাঃ) ওহুদের যুদ্ধের দিন রাসূল (সাঃ)-এর সামনের নিচের দাঁত মুবারক শহীদ হইয়াছিল। তিনি আপন চেহারা মুবারক হইতে রক্ত মুছিতেছিলেন এবং বলিতেছিলেন, সেই জাতি কিভাবে কল্যাণ লাভ করিবে যাহারা তাহাদের নবীর মাথা যখম দিয়াছে এবং তাঁহার দাঁত ভাঙ্গিয়া দিয়াছে, অথচ তিনি তাহাদিগকে আল্লাহর প্রতি আহবান জানাইতেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে কোরআনের এই আয়াত নাযিল হইল – ليس لك من الأمر شيء

অর্থঃ এই ব্যাপারে আপনার কোন এখতিয়ার নাই, হয় আল্লাহ তায়ালা তাহাদিগকে তওবা (করিবার তৌফিক প্রদান করিয়া ক্ষমা করিয়া) দিবেন অথবা তাহাদিগকে শাস্তি প্রদান করিবেন, কারণ তাহারা অন্যায়ের উপর রহিয়াছে।

হজরত আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, ওহুদের যুদ্ধের দিন রাসূল (সাঃ )-এর চেহারা মুবারক আহত হইলে হজরত মালিক ইবনে সিনান (রাঃ) সামনের দিক হইতে আসিয়া যখমের স্থান হইতে রক্ত চুষিয়া লইলেন এবং তাহা গিলিয়া ফেলিলেন। রাসূল (সাঃ) বলিলেন, যে ব্যক্তি এমন লোককে দেখিতে ইচ্ছা করে যাহার রক্তের সহিত আমার রক্ত মিশিয়া গিয়াছে সে যেন মালিক ইবনে সিনানকে দেখিয়া লয়। (জামউল ফাওয়ায়েদ)

হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হজরত আবু বকর (রাঃ) যখনই ওহুদের দিনের কথা আলোচনা করিতেন বলিতেন, ওহুদের দিন তো সম্পুর্ণই তালহার অংশে। তারপর বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করিতেন এবং বলিতেন, যুদ্ধক্ষেত্র হইতে ফিরিয়া যাওয়ার উপক্রমকারীদের মধ্যে যাহারা পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে ফিরিয়া আসিয়াছিল তন্মধ্যে আমিই প্রথম ছিলাম।

আমি ফিরিয়া দেখিলাম, এক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ)-এর হেফাজতের জন্য আল্লাহর রাহে প্রাণপণ লড়াই করিতেছে। মনে মনে বলিলাম, এই ব্যক্তি যেন তালহা হন। কেননা আমি যে সওয়াব হইতে বঞ্চিত হইয়াছি তাহা যেন আমার গোত্রের কেহ লাভ করেন, ইহাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

ওহুদের দিন নবী কারীম (সাঃ )-এর কষ্ট সহ্য করা – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author